শিল্পী আব্দুল জব্বার আর নেই

Slider ফুলজান বিবির বাংলা সারাদেশ
 fd8a391bd50069f5213588bbd3ac0bf1-59a636523f352

 

 

ঢাকা: ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘ওরে নীল দরিয়া’সহ অনেক বিখ্যাত গানের শিল্পী আবদুল জব্বার আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আজ বুধবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম সেলিম তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁর কোনো কিডনিই কাজ করছিল না। কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। পরিবার সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করায় শিল্পীর অবস্থার অবনতি হয়। এ পরিস্থিতিতে আমরা বোর্ড গঠন করে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নিই। অবশেষে আজ চির বিদায় নিলেন।’

আব্দুল জব্বার ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সাল থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে তাঁর গান গাওয়া শুরু। তিনি ১৯৬২ সালে প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভির নিয়মিত গায়ক হিসেবে পরিচিতি পান। ১৯৬৪ সালে জহির রায়হান পরিচালিত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র সংগমের গানে কণ্ঠ দেন।

১৯৬৮ সালে এতটুকু আশা ছবিতে সত্য সাহার সুরে তাঁর গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৬৮ সালে পীচ ঢালা পথ ছবিতে রবীন ঘোষের সুরে ‘পীচ ঢালা এই পথটারে ভালবেসেছি’ এবং ঢেউয়ের পর ঢেউ ছবিতে রাজা হোসেন খানের সুরে ‘সুচরিতা যেওনাকো আর কিছুক্ষণ থাকো’ গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৭৮ সালে সারেং বৌ চলচ্চিত্রে আলম খানের সুরে ‘ও..রে নীল দরিয়া’ গানটি দর্শকপ্রিয়তা পায়।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা জোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সালাম সালাম হাজার সালাম ও জয় বাংলা বাংলার জয়সহ অসংখ্য গানে কণ্ঠ দেন। তাঁর গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন।

এ ছাড়া যুদ্ধের সময় তিনি প্রখ্যাত ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন। তৎকালীন সময়ে কলকাতাতে অবস্থিত বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ঘুরে প্রেরণা জোগাতে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গণসংগীত পরিবেশন করেছেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে সেসময় বিভিন্ন সময় গণসংগীত গেয়ে প্রাপ্ত ১২ লাখ রুপি দান করেছিলেন।

সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৮০ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *