একই শরীরে দুই গ্রুপের রক্ত!

Slider নারী ও শিশু

blood-group

রক্ত স্বল্পতায় ভোগা রোগীর শরীরে রক্ত দিতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের! রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে কখনও আসছে এবি পজিটিভ, কখনও এবি নেগেটিভ।

পর পর তিন দিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অবশেষে ফ্যাক্টর খুঁজে পেলেন ভারতের জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

হাসপাতাল সুপার গয়ারাম নস্কর জানান, ১০ লাখের মধ্যে একজনের শরীরে এই ধরনের লক্ষণ মেলে। তাদের রক্তে লোহিতকণিকার মধ্যে এই ধরনের অ্যান্টিজেন রেসেস ফ্যাক্টর বা আরএইচ ফ্যাক্টর হয়ে কাজ করে। সেটাই হয়েছে জলপাইগুড়ির সদর ব্লকের বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাম্পি রায়ের (২১) শরীরে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার রক্ত স্বল্পতার সমস্যা নিয়ে স্ত্রীকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান স্বামী শম্ভু রায়। তিনি পেশায় দিনমজুর। রক্ত দেওয়ার আগে রুটিনমতো গ্রুপ জানতে চাইলে তিনি জানান, এবি পজিটিভ। কিন্তু তারপরও রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা হয়। তাতে ধরা পড়ে এবি নেগেটিভ। স্বামীর কথা এবং টেস্টের রেজাল্ট না মেলায় সন্দেহ হতেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রক্ত পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেখান থেকে রিপোর্ট আসে এবি পজিটিভ। বেসরকারি দুটি প্যাথলজিতে রক্ত পরীক্ষার জন্য পাঠালে এক জায়গার রিপোর্টে পজিটিভ আর এক জায়গা থেকে নেগেটিভ রিপোর্ট জমা পড়ে।

আর এই ঘটনার পরই তোলপাড় পড়ে যায় হাসপাতালের চিকিৎসক মহলে। বুধবার বিভাগের বিশিষ্ট চিকিৎসক এবং প্যাথলজিস্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সিদ্ধান্তে পৌঁছান, আরএইচ ফ্যাক্টর কাজ করছে মাম্পির শরীরে। এই ধরনের ফ্যাক্টর যাদের শরীরে কাজ করছে তারা সংশ্লিষ্ট গ্রুপের নেগেটিভ রক্ত শরীরে নিতে পারবেন। আর দিতে পারেন একই গ্রুপের পজিটিভ রোগীকে।

টানা তিন দিন পর সিদ্ধান্তে পৌঁছে এদিন দুপুরেই মাম্পি রায়ের শরীরে রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় হাসপাতালে।

হাসপাতাল সুপার গয়ারাম নস্কর জানান, বিশেষ পর্যবেক্ষণের মধ্যে রেখে দেওয়া হয় এবি নেগেটিভ রক্ত। যা পেয়ে খানিকটা সুস্থ বোধ করেন মাম্পি। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর স্ত্রীকে খানিকটা চনমনে দেখে স্বস্তিতে স্বামী শম্ভু রায়। স্ত্রীর শরীরে বিরল এই ফ্যাক্টরের খবরে খানিকটা অবাকও তিনি। বলেন, ‘ভালোভাবে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরবো সেই অপেক্ষায় রয়েছি। ‘

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *