গোপালগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে বিচারিক কার্যক্রম

Slider ঢাকা

Photo-1

 

 

 

 

 

এম.আরমন খান জয়, গোপালগঞ্জ : জমে থাকা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিসহ বিচার প্রত্যাশীদের বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা ফিরে আনতে এবং কোন ধরনের হয়রানি ছাড়াই দ্রুততার সাথে বিচারিক কার্যক্রমের নিষ্পত্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধান বিচারপতির নির্দেশনানুযায়ী দেশের ৬৪ জেলায় অত্যাধুনিক ডিজিটাল চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় জেলা সদরে গত ২৭ নভেম্বর, ২০১২ইং তারিখে ৮ তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের ভিত্তি প্রস্থর উদ্বোধন করেন সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ্যাডঃ মোঃ কামরুল ইসলাম। ২২ কোটি ৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণধীন ভবনটি গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিছনে বিস্তৃত সুবিশাল জায়গা জুড়ে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ সানফ্লাওয়ার এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেও নির্দিষ্ট সময় শেষে একাধিকবার সময় বর্ধিত করেও ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর না হওয়ায় গোপালগঞ্জে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক ও আদালতে জেলার দূর-দুরান্ত উপজেলা হতে আগত বিচার প্রত্যাশীদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। এদিকে যথাসময়ে নির্মাণাধীন ভবন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে হস্তান্তর না হওয়ায় প্রধান বিচারপতি মহোদয় কর্তৃক ভবন উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতার সময় ও একের পর এক পিছিয়েছে বলে জানা গেছে।এ বিষয়ে আমাদের প্রতিবেদক গোপালগঞ্জ জেলা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মতিয়ার রহমানের সাথে আলাপ হলে তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময়ে নতুন আদালত ভবন স্থানান্তরের অভাবে পুরাতন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ আদালত ভবনেই তাদের দৈনন্দিন বিচারিক কার্যক্রম বাধ্য হয়ে পরিচালনা করতে হচ্ছে। যেহেতু ভবনটি অনেক পুরাতন তথা সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ এজলাস, বিশ্রামাগার ও ওয়াশরুমের স্বল্পতায় বিচারক ও বিচার প্রত্যাশীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা হতে সকাল থেকে পুরাতন আদালত ভবনের বারান্দায় শত-শত বিচার প্রত্যাশীদেরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ধীরে ধীরে এর পরিমাণ বাড়তে থাকে, একসময় তিল পরিমাণ জায়গাও অবশিষ্ট থাকে না। তাছাড়া বিচার প্রত্যাশীদের জন্য বিশ্রামাগার ও ওয়াশরুমের সুব্যবস্থা না থাকায় পাশের ভবনে যেতে হয়। এজলাস স্বল্পতার কারণে বিচারক ও বিচারপ্রত্যাশীদেরকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। অগণিত লোক সমাগমের ভীড়ে দাঁড়িয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলেও জানা যায়।
তাছাড়া বিচারকদের জন্য ঐ পুরাতন ভবনে পর্যাপ্ত ওয়াশরুম না থাকায় বাধ্য হয়ে সিনিয়র বিচারকদের ওয়াশরুম ব্যবহার করছেন জুনিয়ররা। সর্বশেষে তিনি উল্লেখিত ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত সকল মহলকে আন্তরিক হয়ে দ্রুত ভবন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করতে অনুরোধ জানান।
গোপালগঞ্জ জেলার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জোয়ার্দার তাবেদুন নবী আমাদের প্রতিবেদককে বলেন, দেশের যাবতীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নে গণপূর্ত বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। তাছাড়া গোপালগঞ্জে নির্মাণাধীন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ভবনের ঠিকাদার মেসবাহ হোসেন বুরুজ-এর হঠাৎ মৃত্যুতে চলমান কাজের গতি কমে গিয়ে যে ক্ষতি হয়েছিল তিনি তার নেতৃত্বে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কামরুল হাসানের তদারকির মাধ্যমে দ্রুতগতিতে উক্ত ভবন নির্মাণের কাজ চলমান রেখেছেন। ইনশাল্লাহ সার্বিক পরিস্থিতি অনুকুলে থাকলে চলতি বছরের শেষের দিকে পরিপূর্ণ অত্যাধুনিক ভবনটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সানফ্লাওয়ার এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজিং পার্টনার মোঃ আলমগীর হোসেন ও মঈন উদ্দিন শেখের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা উভয়ই বলেন ভাই, প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হঠাৎ মৃত্যুবরণ করায় কাজের গতি কমে যায়। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার পর আমরা ১ বছর ৩ মাসে উল্লেখযোগ্যভাবে নির্মাণ কাজে এগিয়েছি। ইনশাল্লাহ অধিক শ্রমিক নিয়োগ করে দ্রুত বাকি কাজ সম্পন্ন করে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের পূর্বেই গণপূর্ত বিভাগকে ভবন বুঝিয়ে দিতে পারবো বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি। গোপালগঞ্জ জেলায় কর্মরত বিচারকগণ ও আদালতে বিচার প্রত্যাশী জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘবে নতুন ভবন নির্মাণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কতটা আন্তরিক দেখার অপেক্ষায় জেলাবাসী।

মন্তব্য:
গোপালগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল আদালতে এজলাস, বিশ্রামাগার ও ওয়াশরুমের স্বল্পতায় বিচারক ও বিচার প্রত্যাশীদের চরম ভোগান্তিÑচীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট

সার্বিক বিষয় অনুকুলে থাকলে ইনশাল্লাহ চলতি বছরের শেষে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট নতুন ভবন হস্তান্তরের আশাবাদ ব্যক্তÑগোপালগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী

ইনশাল্লাহ অধিক শ্রমিক নিয়োগে দ্রুত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে চলতি বছরের ডিসেম্বরের পূর্বেই গণপূর্তের নিকট ভবন হস্তান্তর হবেÑঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান

এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ
মোবাইল : ০১৯৫২-৫১৮০৮২
তারিখ : ১২.০৭.২০১৭

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *