অধীর আগ্রহে অপেক্ষার প্রহর গুনছিল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত শাহপরীর দ্বীপের হাজারো মানুষ। মন্ত্রীকে সাদরে অভ্যর্থনা জানাতে খালের ও প্রান্তে জমায়েতও হয়েছিল সবাই।
সাধারণ মানুষের সাথে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিল। সবার আশা ছিল মন্ত্রী এলে তাদের বিধ্বস্ত ঘরবাড়ির দৃশ্য দেখবেন তিনি, হয়তো ত্রাণ কিংবা সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও পাওয়া যাবে। আর কিছু না পাওয়া যাক, অন্তত দ্বীপের বাসিন্দাদের কষ্ট অনুভব করতে পারবেন তিনি। কিন্তু নিমিষেই সবার আশায় গুড়ে বালি।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া গতকাল রবিবার বিকালে টেকনাফের মোরা’র আঘাতে লণ্ডভণ্ড জনপদ শাহপরীর দ্বীপ পরিদর্শনে যাবার নির্ধারিত সূচি ছিল। আগের দিন শনিবার রাত থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন। গতকাল রবিবার বিকাল ২টা থেকে মন্ত্রীকে বরণ করতে হাজারো মানুষ শাহপরীর দ্বীপ উত্তর পাড়া খালের কিনারে অপেক্ষা করছিল। ওদিকে হারিয়াখালী ঘাটে মন্ত্রীকে বহনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছিল স্পিডবোটও। ঠিক সময়ে বিকাল আড়াইটায় মন্ত্রী সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালী নামক নৌঘাটে পৌঁছেছিলেন। শাহপরীর দ্বীপের উদ্দেশে স্পিডবোটের উঠতে কাছাকাছি গিয়েও হঠাৎ মত পাল্টান মন্ত্রী। তিনি আর শাহপরীর দ্বীপের উদ্দেশে স্পিডবোটে না উঠে উল্টো পথে টেকনাফের দিকে রওনা দেন। এ সময় মন্ত্রীর পাশে ছিলেন স্থানীয় সাংসদ আব্দুর রহমান বদি।
মন্ত্রী আসছেন না- এমন খবরে ও প্রান্তে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরত্বে মন্ত্রীর জন্য অপেক্ষায় থাকা হাজারো জনতা ভীষণভাবে মর্মাহত হন। এ সময় অনেককে বলতে শুনা যায়, হয়তো কোনো অদৃশ্যর ইশারায় মন্ত্রী আর দ্বীপে আসেননি। দুই দিন আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী শাহপরীর দ্বীপ এসে এলাকার মানুষের ভোগান্তির চিত্র দেখে স্থানীয় সাংসদের ওপর ক্ষেপেছিলেন এমন সংবাদ গুরুত্বের সাথে প্রচারও হয়েছিল জাতীয় ও স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায়। তাই হয়তো স্থানীয় সাংসদ আর কোনো মন্ত্রীকে জনদুর্ভোগের এ জনপদে এনে ‘নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারতে চাইবেন না’ এমন মন্তব্য সাধারণ জনতার।
শাহপরীর দ্বীপের সাধারণ মানুষের মতে, এমপি বদি আন্তরিকভাবে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া অবশ্যই শাহপরীর দ্বীপ আসতেন। তিনি চাননি তাই মন্ত্রী আসেননি এমন মন্তব্য করছেন দ্বীপবাসী।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে শাহপরীর দ্বীপের মানুষের মুখে মুখে এমন কথা রটে আসছিল যে, এমপি বদি শাহপরীর দ্বীপের উন্নয়ন চান না। তা না হলে বেড়িবাঁধ ভাঙনের প্রায় সাড়ে ৫ বছরে বাঁধ নির্মাণে তার কোনো তৎপরতায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারেনি দ্বীপবাসী। বেড়িবাঁধের কারণে দ্বীপের মানুষের যে কষ্ট তা শুধু এমপি বদির কারণে বলে মন্তব্য এলাকাবাসীর।
এ ব্যাপারে শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা ও জেলার সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রদানকারী প্রবাসী মোহাম্মদ ইসমাইল তার ফেসবুক স্টেটাসে লিখেছেন, ‘এমপি চায় না শাহপরীর দ্বীপ বেড়িবাঁধ হোক, চাইছিল শাহপরীর দ্বীপ ধ্বংস হয়ে যাক। ‘