হাওরে ক্ষতির শিকার সাড়ে ৮ লাখ পরিবার

Slider জাতীয় বাংলার মুখোমুখি

63427_lead

 

ঢাকা; হাওরাঞ্চলে অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট লাখ ৫০ হাজার ৮৮টি পরিবার। ছয় জেলায় দুই লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত  হয়েছে। হাওর পরিস্থিতি নিয়ে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির গতকালের বৈঠকে ক্ষয়ক্ষতির হালনাগাদ এ তথ্য তুলে ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য সচিব এবং মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম  সচিব মোহাম্মদ মহসীন হালনাগাদ তথ্য সাংবাদিকদের সামনেও তুলে ধরেন। পাহাড়ি ঢল ও আকস্মিক বন্যায় দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার লাখ লাখ কৃষক এরই মধ্যে সব হারিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে গেছেন। কৃষক প্রথমে তার জমির ফসল হারান। পরে মারা যায় মাছ। কিছু গবাদি পশুও মারা গেছে। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের দুই হাজার ৮৬০টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ১৫ হাজার ৩৪৫টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছয় জেলায় মোট ২১৩ দশমিক ৯৫ টন মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে; সুনামগঞ্জে তিন হাজার ৯০২টি হাঁস ও চারটি মহিষ মারা গেছে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্যে বলা হয়েছে- সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ?ও মৌলভীবাজার জেলার হাওর এলাকা বন্যাকবলিত হওয়ায় উক্ত জেলাসমূহের ৬২টি উপজেলার ৫১৮টি ইউনিয়নের ৮,৫০,০৮৮টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ও অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় ২,১৯,৮৪০ হেক্টর জমির বোরো ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও ১৮,২০৫টি ঘর-বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক ৫৮৭টি কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তার জন্য ২৮শে এপ্রিল পর্যন্ত ৩,৯২৪ টন জিআর চাল, নগদ ২ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ভিজিএফ হিসেবে জুলাই/১৭ পর্যন্ত ৩ লাখ ৩০ হাজার পরিবারের মধ্যে বিতরণের জন্য ৩২ হাজার ৩৪০ টন চাল এবং নগদ ৪৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচির আওতায় ৯১ হাজার ৪৪৭ জন সুবিধাভোগীর জন্য ৮২ কোটি ৭ লাখ ৬৮৯ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এ পর্যন্ত উপরোল্লিখিত কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বমোট ২৭১ কোটি ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৩৪৯ টাকার ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৬টি জেলায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব/ যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাকে সরজমিনে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম, তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্যাদি আদান প্রদানের জন্য অত্র মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে দুটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে যা ২৪ ঘণ্টা খোলা আছে। এখানে ৬ জন উপসচিব পর্যায়ক্রমে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ত্রাণ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়েছে। এ মন্ত্রণালয়, অধীনস্থ সংস্থাসমূহ এবং হাওর অঞ্চলের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীর সকল প্রকার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *