মাদকমুক্ত সমাজই হোক তারুন্যের অঙ্গীকার

Slider খুলনা লাইফস্টাইল সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সারাদেশ

images

 

 

 

 

 

 

 

এম আরমান খান জয় : বর্তমান বিশ্বে সমগ্র মানব জাতীর জীবন ও সভ্যতার জন্য অত্যন্ত বড় হুমকি হলো ড্রাগ বা মাদকাসক্ত। মাদকাসক্ত একটি অভ্যাসগত রোগ এবং তা ধিরে ধিরে মানুষকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। ড্রাগের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিঃশেষ হয়ে যায়। ক্রমশ ভোতা হয়ে পড়ে মননশক্তি। ক্ষিধে পায় না,ঘুম হয় না,হাসি কান্নার বোধ থাকে না,ওজন কমে যায় এবং অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ড্রাগ পৃথিবী বিধ্বংসী নিরাময়ের অযোগ্য জীবন হননকারী এইডস রোগ উৎপত্তির অন্যমত প্রধান কারণ। সুন্দর পৃথিবী গড়ার কারিগর,সম্ভবনাময় যুব সম্প্রদায়কে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করছে এ ড্রাগ। দুনিয়া কাপাঁনো শতাব্দীর ভয়াবহ আতংক ড্রাগের আগ্রাসন কিছুকাল আগেও ছিল উন্নত বিশ্বের মাথা ব্যথার কারণ। কিন্তু মাত্র কয়েক দশকের ব্যবধানে এ রোগটি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। ড্রাগের কারণে আজ বুকফাটা কান্নায় পৃথিবীর আকাশ বাতাস ভারি হয়ে যায়,আর্ত হাহাকারে রাতের অন্ধকার আরো নিঃসঙ্গ ও বেদনার্থ হয়ে ওঠে,পরিবার গুলোতে আজ অকালে শোকের ছায়া,শ্মশানের হাহাকার। কি সেই ভয়াবহ নেশা যা মায়ের বুক থেকে সন্তানকে ছিনিয়ে নেয় চিরতরে। সন্তানের হাতে খুন হচ্ছে নেশার টাকা যোগাতে ব্যর্থ পিতা। মাদকাসক্ত সন্তানের অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে ভাড়া করা খুনী দিয়ে নিজ সন্তানকে খুন করাচ্ছে ¯েœহময়ী মা। আজ অধিকাংশ পরিবারেই এক ভয়ংকর আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা আজ এমনই এক নিষ্টুর সময়ের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছি। শিকার হয়েছি এক গভীর ষড়যন্ত্রের। সা¤্রাজ্যবাদী দেশ গুলো মুসলিম বিশ্বকে শেষ করে দেয়ার জন্য, মুসলিম বিশ্বের ইসলামী বিপ্লবের অগ্রনায়ক যুব সমাজকে অর্থবহ বানানোর জন্য পরিকল্পিত ভাবে মুসলিম বিশ্বে ড্রাগের বন্যা বয়ে দিচ্ছে। তাইতো বিশ্বে ড্রাগ এখন যুদ্ধের রুপ নিয়েছে। যুদ্ধ পৃথিবীকে করেছে ধ্বংসস্তুপে। জীবানু যুদ্ধ, রাসায়নিক যুদ্দের পর এবার ড্রাগ বা নেশার যুদ্ধ। এই নেশাযুদ্ধের কবলে পড়েছে লক্ষ লক্ষ তরুণ। মৃতকল্প করে চলেছে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে। অসার করে দিচ্ছে আমাদের পরিকল্পনা। যুব সমাজই দেশ ও পৃথিবীর প্রাণ। কিন্তু তারা নেশার ঘোরে ঢলে পড়ছে মৃত্যুর কোলে। আামাদের ভারত নির্ভর চলচ্চিত্র জগৎও নেশা বা মাদকাসক্ত বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। তাই বিশ্বের সাথে পাল্লা দিয়ে ড্রাগ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের শহরে,নগরে,গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। মাদক দ্রব্যের ব্যবসা বড়ই লাভের ব্যবসা। তাইতো এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাজনৈতিক দলসমূহের পৃষ্টপোষকতায় অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা, ধ্বংস করছে যুব সমাজকে। সস্প্রতি ইয়াবা নামক যৌন উত্তেজক এক মরন নেশা অভিজাত ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। নিষিদ্ধ করে অভিযান চালিয়েও দমানো যাচ্ছে না। কারণ রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতা। থাইল্যান্ডের মতো দেশে ইয়াবা আগ্রাসনকে দমন করার জন্য ৩০০০ ব্যবসায়ীকে ক্রসফায়ার দিতে বাধ্য হয়েছিল তৎকালিন সরকার। বর্তমানে ইয়াবাসহ সকল প্রকার মাদক দ্রব্যের নিরাপদ ট্রানজিট হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে বাংলাদেশ। যা রীতি মত আঁতকে উঠার মতো। ভাবিয়ে তুলেছে দেশের অভিভাবক সহ সচেতন জনসাধারণকে। বাংলাদেশে বর্তমানে ৭৫ লক্ষ মাদকাসক্ত লোক বসবাস করে। ধূমপান ও ইয়াবা সেবীসহ এ সংখ্যা আরো কয়েকগুন হতে পারে। এক রির্পোটে জানা যায়, মিয়ানমার সীমান্তে দুই শতাধিক প্রভাবশালী ইয়াবা ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছে। যে সরকার ক্ষমতায় থাকুন না কেন তাদের রয়েছে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। অন্য এক রির্পোটে জানা যায়, টেকনাফে চিহিৃত ২০ টি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ৩ শতাধিক সদস্য দেশের সর্বত্র পৌঁছে দিচ্ছে ইয়াবা। তালিকাভূক্ত ৯৭ জন গদফাদার নিয়ন্ত্রন করছে এই সিন্টিকেট। তারাই সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে অথবা ম্যানেজ করে নিয়ে আসছে ইয়াবার চালান। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, শুধু ঢাকা মহানগরীতে প্রতিদিন ইয়াবার চাহিদা রয়েছে ১৪ লাখ। চট্টগ্রামে মহানগরীতে এর চাহিদা ৮ লাখ আর কক্সবাজারে ৪ লাখ। উঠতি টিএনএজ ছেলে মেয়েরা এখন ইয়াবা আগ্রাসনের শিকার। শুধুমাত্র কক্সবাজারে ইয়াবা ব্যবসা করে ১ শতের অধিক যুবক কোটিপতিতে পরিনত হয়েছে। এরাই দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির মূল অন্তরায়। তাই এখনই রুখতে হবে ভয়ংকর এ মাদককে তা না হলে আগামীর প্রজন্মকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না। তাই মাদক মুক্ত সমাজ হোক তারুন্যের অঙ্গীকার।
বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য ও মাদকাসক্তের পরিসংখ্যান ঃ-
দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় প্রকাশিত এক রির্পোটে ডিএনসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, দেশে বর্তমানে প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক সহ অর্ধশতাধিক মাদকদ্রব্য বৈধ অবৈধ উপায়ে উৎপাদন,আমদানি,বিপনন ও ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের দেশে সাধারণত আফিম, গাাঁজা, ভাং, চরস, মরফিন, হেরোইন, কোকেন, চোলাই, দেশী মদ ও ফরেন লিকার মাদকদ্রব্য হিসাবে সুপরিচিত। এছাড়াও রয়েছে কোডিন সমৃদ্ধ ফেন্সিডিল, থিবাইন, নোজকা পাইন, নারকোটিন, প্যাপাভারিন, এলএসডি, বারবি, চরেটস, অ্যামফিটামিন, সেথামফিটামিন ইত্যাদী কিছুই সময়ের ব্যবধানে মাদকদ্রব্য হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে । নিয়মিত অভ্যন্তদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে, ব্রান্ডি, হুইস্কি, ভদকা, রাম, জিন, রেকটিফাইড, স্পিরিট, মেসকালিন, পেয়োটি ক্যাসটাস ইত্যাদী। অপ্রচলিত-ডলাটাইল ইন হ্যালেন্ট জাতীয় মাদকের মধ্যে রয়েছে ডান্ডি খ্যাত ডেন্ত্রাইড সলিউশনস, টলুইন, গ্লু পেট্রোল, অ্যারোসল, টিকটিকির পোড়া লেজ, জ্যামবাক মলম, ঘমাক্ত মোঝা ধোয়া পানি, ঘুমের ট্যাবলেট মিশ্রিত কোমল পানীয় , পিরিটন ও ফেনারগ্যান কফ সিরাপ ইত্যাদী। সম্প্রতি ইয়াবা নামক এক প্রকার যৌন উত্তেজক সিনথেটিক ট্যাবলেট বাংলাদেশে মাদক হিসাবে ব্যাপকহারে ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া মাদক জাতীয় হালকা উত্তেজক হচ্ছে বিড়ি, সিগারেট, চুরুট, হুক্কা, জর্দা, খৈনী, সাতা পাতা, দাঁতের গুল ইত্যাদী। এসব মাদক দ্রব্যেগুলো শ্রেণীভেদে স্নায়ু উত্তেজক ক্ষতিভ্রম সৃষ্টিকারী, স্নায়ুতে প্রশান্তিদায়ক, মায়াবিভ্রম উৎপাদনকারী ইত্যাদী। এক রির্পোটে জানা যায়, বছরে ৪০ হাজার মেট্টিকটন তামাক উৎপাদিত হয়। আর ৬ হাজার ৭শ ১২ মেট্টিকটন তামাক পাতা আমদানি এবং ৪ হাজার ৫শ ৫৪ মেট্টিকটন তামাক পাতা রফতানি করা হয়। বছরে ২০ হাজার ৩শ মিলিয়ন সিগারেট এবং আনুমানিক ১লাখ ৮ হাজার মিলিয়ন বিডি উৎপাদিত হয়। দেশে ১৫ বছরের বেশি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৩৬.৮% কোন না কোন ভাবে তামাক ব্যবহার করছেন। দৈনিক প্রথম আলোর এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশে বর্তমানে ৫০ লক্ষ লোক মাদকাসক্ত। কারো কারো মতে এ সংখ্যা ৭৫ লক্ষ। এদের মধ্যে ৭০ ভাগ হেরোইন বা এডিন সুগারে আসক্ত। আর ৩০ ভাগ ফেন্সিডিলে আসক্ত। আর বর্তমানে বহুল প্রচারিত যৌন উত্তেজক মাদক ইয়াবা আসক্তের সঠিখ কোন পরিসংখ্যান পাওয়া না গেলে। দিন দিন এর চাগিদা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। শুধু ঢাকাতেই এর ৗদনিক চাহিদা ১৪ লাখ। চট্টগ্রামে ১০ লাখের মতো আর কক্সবাজারে এর সংখ্যা ৫ লাখের মতো বলে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়। বর্তমান কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যায়ে মাদকাসক্তি ব্যাপাকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই ছাত্রীরাও। শুধু মাত্র ঢাকা শহরের প্রথম শ্রেণীর কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ হাজারের অধিক ছাত্রী মারাত্মক পর্যায়ে মাদকাসক্তিতে পড়েছে। এক গবেষনায় দেখা যায়,ঢাকা শহরে বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের যাদের বয়স ১৫-৩০ বছরের মাঝে সেসব যুবকদের ৭০% এবং যুবতীদের ৫০% নেশাগ্রস্ত। এছাড়া ফিরোজ (১৯৮৮) সালে পর্যবেক্ষন করে দেখেছেন যে,মাদকাসক্তদের ৮৯% ৩০ বছরের নীচে। অতি সস্প্রতি দেশের শীর্ষ স্থানীয় কয়েকটি দৈনিকের জরিপ রির্পোটে দেখা যায়,নেশাগ্রস্ত ও নেশার চোরাচালান ও এই ব্যবসার সাথে জড়িত ৯০% ই হচ্ছে যুবক যুবতী,বস্তিবাসী ও কর্মসংস্থানহীন লোক।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়-দেশে পথ শিশু রয়েছে ১২ লাখ। যাদের অধিকাংশই এখন মাদকের নীল ছোবলের শিকার।
এক গোয়েন্দা রির্পোটে জানা যায়, যৌন উত্তেজক নীল মাদক ইয়াবা চলচ্চিত্র ও শোবিজ জগতে ভয়ংকর ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু মাত্র চলচ্চিত্র পাড়া ও রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য সরবরাহ করার জন্য ১ হাজার সুন্দরীকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ১০ লাখ লোক এ ব্যবসার সাথে যুক্ত যার অধিকাংশই তরুন ও শিক্ষার্থী। দেশের ৭৫ লাখ মাদকাসক্তের দৈনিক খরচ ৭৫ কোটি টাকা। এর ৩০ ভাগ ই নারী ও শিশু। এ মাদক সেবীরা প্রতিদিন গড়ে ১০০ টাকা করে ব্যয় করে। শুধু মাত্র ফেন্সিডিলে বাবত বছরে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ভারতে পাচার হয়। কিভাবে বুঝবেন আপনার সন্তান মাদকাসক্ত?
মাদকাসক্তি নির্মূলের আগে জানতে হবে, মাদকাসক্তির লক্ষণ গুলি কি কি? কেউ মাদক গ্রহন করলে তার লক্ষণ কিভাবে অনুধাবন করা যায়, তা জানা একান্ত দরকার।
আচরনগত পরিবর্তন ঃ ১.হঠাৎ করেই স্বাভাবিক আচরণে পরিবর্তন আসতে পারে। অন্যমনস্ক থাকা, একা থাকতে পছন্দ করা।
২. অস্থিরতা প্রকাশ, চিৎকার, বেঁচামেচি করা।
৩. অসময়ে ঘুমানো, ঝিমানো কিংবা হঠাৎ চুপ হয়ে যাওয়া।
৪. কারণে-অকারণে খারাপ ব্যবহার করা। অসংলগ্ন ও অস্পষ্ট কথাবার্তা বলা।
৫. কোথায় যায়, কার সঙ্গে থাকে,এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিরক্ত হওয়া, গোপন করা কিংবা মিথ্যা বলা।
৬. ঘর অন্ধকার করে জোরে মিউজিক শোনা।
নির্জন স্থানে, বিশেষত বাথরুমে বা টয়লেটে আগের চেয়ে বেশি সময় কাটানো।
৭. রাত করে বাড়ি ফেরা, রাত জাগা, দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা।
৮. হঠাৎ নতুন অপরিচিত বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে বেশি মেলামেশা করা।
৯. বিভিন্ন অজুহাতে ঘন ঘন টাকা পয়সা চাওয়া।
১০. স্বাভাবিক খাওয়া দাওয়া কমিয়ে দেওয়া।
১১. অভিভাবক এবং পরিচিত জনদের এড়িয়ে চলা।
১২. স্বাভাবিক বিনোদন মাধ্যমে ক্রমশ আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।
১৩. বাড়ির বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রমাগত টাকা পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে যাওয়া।
১৪. ঋন করার প্রবনতা বেড়ে যাওয়া।
এ সমস্ত লক্ষণ প্রকাশ পেলে বুঝবেন আপনার সন্তানকে ভয়ংকর ব্যাধি মাদকাসক্তিতে আক্রান্ত করেছে। নিরাময়ের জন্য জরুরী ব্যবস্থা নিতে হবে। তাই অভিভাবক বা পিতা মাতার উচিত সন্তানদের প্রতি নিবিড় পর্যবেক্ষন বজায় রাখা। ¯েœহের পরশ দিয়ে তাদের আগঁলে রাখতে হবে। তা না হলে তারা জীবন যুদ্ধের নষ্ট কীটে পরিণত হবে।
ড্রাগের অপকারিতা ঃ- ড্রাগ হচ্ছে সমাজবিধ্বংসী, জীবনাশক ভয়ংকর এক নেশা। এর কোন উপকার নেই, অপকার ছাড়া। ড্রাগের অপকারিতা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না।
১. অকাল মৃত্যু ঃ- ড্রাগের প্রধান অপকারিতা হল অকাল মৃত্যু। ড্রাগ যুব সমাজের জীবনী শক্তিকে নিঃশেষ করে দেয়। এজন্য ড্রাগকে মৃত্যুর খালাত ভাই বলে অভিহিত করা হয়। মাদক দ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা “মানস” এর এক পরিসংখ্যানে বলা হয়,দেশে প্রতি সাড়ে ৬ সেকেন্ডে একজন করে ঘন্টায় ৪৫০জন মাদকাসক্ত বা ধুমপায়ীর মৃত্যু হয়। গবেষনা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সমন্বয় ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) এর এক গবেষনা রির্পোটে বলা- তামাক ব্যবহারের প্রত্যক্ষ ফল হিসাবে প্রতি বছর ৫৭ হাজার লোক মারা যায় এবং ৩ লাখ ৮২ হাজার লোক পঙ্গুত্ববরণ করে।
২. এইডস আক্রান্ত ঃ- মাদকাসক্তরাই এইডস আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এক জরিপে বলা হয়,মাদকাসক্ত নারী পুরুষরাই এইচ আইভি এইডসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত মহিলাদের সাথে সম্পর্ক করার তুলনায় ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক গ্রহনে এইচ আইভি এইডস সংক্রমন বেশি হচ্ছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। জরিপে দেখা গেছে,এইচ আইভি এইডস ও মাদকের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে,এইডসের মতো ঘাতক ভাইরাস মানবদেহে তাৎক্ষণিক কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। যার করণে এই ভাইরাস বহনকারী সহজে এইডসের উপস্থিতি বুঝতে পারে না। মাদকের সাথে জড়িত থাকতে থাকতে কখন একজন ব্যক্তিকে ওই ঘাতক ব্যাধিতে পেয়ে বসে; তা প্রথমে বোঝার উপায় থাকে না। এডিএম এর তথ্য অনুযায়ী,ঢাকার কিছু কিছু এলাকায় একটি সুচ বা সিরিঞ্জ দিয়ে ২৭ জন মাদকাসক্ত মাদক গ্রহন করেছে। এছাড়া জরিপে কয়েকজন মহিলা মাদকসেবীদের পাওয়া গেছে,যাদের মধ্যে ১ হাজারের ও বেশি ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক গ্রহন করে থাকে। এই মাদকাসক্তরা অন্ধকার জগতে পতিতা হিসাবে বেশি পরিচিত। এদের মধ্যে একজন যদি এইচ আইভি এইডস ভাইরাসে আক্রান্ত থাকে তবে অনেকের মধ্যেই এই ভাইরাস দ্রুত বিস্তার লাভ করবে। এইডস বিস্তারের প্রধান কারণ গুলোর মধ্যে এটাই অন্যতম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পঞ্চম জাতীয় এইচ আইভি এবং আচরণগত জরিপে দেখা গেছে,দেশের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক গ্রহনকারীদের মধ্যে এইচ আইভির হার খুব দ্রুত বাড়ছে।কেন্দ্রীয় মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র এক জরিপে জানায়,মাদক গ্রহণের ফলে বর্তমানে এইডসে আক্রান্তের হার ভয়াবহ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশা গ্রহনকারীদের মধ্যে জরিপে শতকরা ৪ জন এইচ আইভিতে আক্রান্ত। সেখানে হেপাটাইটিস সি এর হার ৫৯.২%। সর্বোপরি মোট ১৬১৯ জন আইডিইউর মধ্যে হেপাটাইটিস সি এর হার ৫৪.২%। ঢাকার একটি ছোট্র এলাকায় শুধুমাত্র ইনজেকশনের মাদকসেবন কারীদের উপর বিগত তিনটি জরিপের প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায় এই বৃদ্ধির হার যথাক্রমে ৪%থেকে ৮.৯% এবং সর্বশেষ ১০.৫%। এইচ আইভি সংক্রমনের হার ১০% এর ওপরে চলে গেলে সেটাকে নিয়ন্ত্রন করা খুবই কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের এইচ আইভি এইডস রোগ প্রতিরোধ প্রকল্প এইচ আইভি এবং এইডস টার্গেটেড র্ইটারভেশন (এইচএটিআই) এর মাধ্যমে এইচ আইভি এইডসের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ৪০ হাজার ৫০০ জন মাদকসেবী (সুই দ্বারা নেশা ও হেরোইন সেবীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
৩. অর্থনৈতিক ক্ষতি ঃ মাদক দ্রব্য গুলো দেশের অর্থনীতিতে বিরাট আঘাত হানছে। মাদক দ্রব্য জনিত কারণে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। এছাড়া মাদকাসক্তি জনিত রোগে হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে। দৈনিক মাদকাসক্তের পেছনে গড়ে ৭৫ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। আমাদের মতো গারীব দেশের জন্য যা খুবই দুঃজনক সংবাদ। যেখানে দু’মুটো ভাতের ব্যবস্থা করতে লক্ষ লক্ষ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে সেখানে মাদকাসক্তের পেছনে এত টাকা ব্যয় আমাদের দেশেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। গবেষনা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সমন্বয় ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) এর এক গবেষনা রির্পোটে বলা হয়,তামাক ব্যবাহারের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বছরে নীট ক্ষতি হচ্ছে দুই হাজার ছয়শ কোটি টাকা। এছাড়া ১২ লাখ লোক তামাক ব্যবহার জনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের মাত্র ২৫% হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ধরে নিয়ে দেখা যায়, এর ফলে বছরে দেশের অর্থনীতিতে ৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। অন্যদিকে তামাক খাতে বছরে দুই হাজার চারশ কোটি টাকা আয় হয়। এতে আরো বলা হয়,দেশে প্রতি বছর ৩৩ হাজার হেক্টর জমি তামাক চাষে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বছরে মাদকের পেছনে খরচ পড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়াও মাদকাসক্তি নির্মূলের জন্য, তাদের পূর্ণবাসন কার্যক্রমের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। অথচ এটাকা গুলো উন্নয়ন খাতে, দারিদ্র বিমোচনে লাগালে দেশের আর্থসামাজিক অনেক উন্নয়ন হতো।
৪. যুব সমাজ ধ্বংসের কারণ ঃ মাদক হচ্ছে এমন এক সর্বনাশা নেশা, যা যুব সমাজকে ধ্বংস করেই ছাড়ে। যুব সমাজরাই হচ্ছে দেশের মেরুদন্ড। কিন্তু ড্রাগ নামক এ ভয়ংকর নেশা দেশের এ মেরুদন্ডকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমাদের দেশকে পরিণত করছে মেরুদন্ডহীন, দুর্বল, অথর্ব। প্রতি বছর মাদকাসক্তের কারণে ৫৭ হাজার মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে যার অধিক্ংাশই তরুন ও যুব সমাজ। আর দেশে মোট মাদকাসক্তের ৭০ ভাগই যুব সমাজ। এতেই লক্ষণীয় কোথায় যাচ্ছে আমাদের যুব সমাজ?
৫. অপরাধ তৎপরতা বৃদ্ধি ঃ মাদকাসক্তরা পৃথিবীতে এমন কোন অপরাধ নেই, যা তারা করে না। দেশের অধিকাংশ খুন, ধর্ষন, চুরি, ছিনতাই সহ সকল ধরণের অপরাধ তৎপরতার পেছনে মাদকাসক্তরাই দায়ী। মানসের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে-মাদকাসক্তদের মধ্যে গড় পরতা হারে শতকরা ৪২ জন কোন না কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য তারা যে কোন নির্মম অপরাধের সাথেও জড়িত হয়ে পড়ে। আর নারীরা টাকা জোগাড় করতে বেশ্যাবৃত্তিতে নামতেও দ্বিধাবোধ করে না।
৬. উন্নয়ন কর্মকান্ড বাধাগ্রস্তঃ দেশের যুব সমাজের একটা বড় অংশ মাদকের কবলে আটকা পড়েছে। তারা দেশের কোন উন্নয়ন কর্মকান্ড তো দুরের কথা, বরং উন্নয়নকে বাধা গ্রস্ত করে এমন কাজেই তারা জড়িত। একটি পরিবারে একজন মাদকাসক্ত থাকলে সেই পরিবারটি ধ্বংস হওয়ার জন্য, নিঃস্ব হওয়ার জন্যই যথেষ্ট। দেশের ৭৫ লাখ মাদকাসক্ত ব্যক্তি দেশের উন্নয়নের ¯্রােতকে বাধাগ্রস্ত করতে ব্যস্ত। কারণ দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে পেছনে মাসকাসক্তরাই একমাত্র বাধা। তাই মাদকাসক্তি নির্মূল করতে না পারলে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই দেশের স্বার্থে মাদকাসক্তি নির্মূল জরুরী।
৭. প্রধান সামাজিক সমস্যা ঃ মাদকাসক্তি আমাদের দেশের প্রধান সামাজিক সমস্যা। এ একটি সামাজিক সমস্যার কারণে আরো হাজারো সমস্যা জন্ম নিচ্ছে সমাজে। যা সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। এর মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের স্রোতও গতি হারিয়ে ফেলছে।
৮. সন্ত্রাস ও মাদক ঃ সন্ত্রাস ও মাদক একে অপরের পরিপূরক। মাদক ছাড়া সন্ত্রাস চলে না। কারণ সন্ত্রাসের প্রধান শক্তিই হচ্ছে মাদক। আর সন্ত্রাসীদের প্রধান ব্যবসায় হলো মাদক। সন্ত্রাসীদের আর্থিক জোগান সব মাদক থেকেই আসে। তাই মাদক নির্মূল করতে চাইলে আগে সন্ত্রাস নির্মূল করতে হবে।
৯. সা¯্রাজ্যবাদীদের প্রধান হাতিয়ার ঃ মাদক হচ্ছে সা¤্রাজ্যবাদীদের প্রধান হাতিয়ার। আজকের আমেরিকা পৃথিবীর পরাশক্তি হওয়ার পেছনে এ মাদক ব্যবসায় আসল। পরাশক্তি হওয়ার আগে এক সময় এ আমেরিকা সারা পৃথিবীতে মাদকের পাচারের ব্যবসা করতো। এর থেকেই ধিরে ধিরে আর্থিক সক্ষমতা অর্জন করে আজকের বিশ্বের পরাশক্তিতে পরিনত হয়েছে। ২০০ বছর ব্যাপী ক্রুসেড যুদ্ধের সময় ইউরোপীয় দেশ গুলো মুসলিম বিশ্বকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য মুসলিম বিশ্বব্যাপী নারী ও মাদকের বিস্তার ঘটিয়েছিল। যা অনেক ক্ষেত্রে সফলও হয়। যখন কোন দেশকে সা¤্রাজ্যবাদীরা টার্গেট করে তখন আগে সেই দেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য মাদক ও বেশ্যার ব্যাপক প্রচলন ঘটায়। যখন মাদক ও বেশ্যার মাধ্যমে যুব সমাজকে কাবু করা সম্ভব হয় তখন সেখানে অভিযান চালিয়ে দখল করে নেয়।
১০. মুসলিম বিশ্বের পতনের মূল ঃ মাদক হচ্ছে মুসলিম বিশ্বের পতনের মূল। এক সময় সারা পৃথিবী এ মুসলমানরাই শাসন করেছিল। মুসলিম বিশ্বের পতন তরান্বিত করার জন্য এখানে মাদকের জোয়ার বয়ে দেয়া হয়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের প্রতিক যুব সমাজরা ঈমান আকিদা হারিয়ে ফেলে। আর এরই ফলশ্রুতিতে ধিরে ধিরে মুসলমানদের হাত থেকে রাষ্ট্র ক্ষমতা চলে যায়। আজোও মুসলিম বিশ্বকে ধ্বংস করে দেয়ার নারী ও মাদকের ব্যাপক ব্যবহার করছে সা¤্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো। আজকের ইরাক ও আফগানিস্তান এর প্রকৃষ্ট উদাহারণ। সম্প্রতি দেশে তরুন সমাজকে মাদক মুক্ত করার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাদকমুক্ত কনসার্ট করা হচ্ছে। এ কনসার্ট করেই কি দেশকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। না মাদকমুক্ত হওয়ার জন্য তরুন সমাজকে সিন্ধান্ত নিতে হবে। দেশ জাতি ও মুসলিম বিশ্বকে রক্ষার জন্য, নিজেদের অস্তিত্বকে রক্ষার জন্য মাদককে না বলুন। প্রতিরোধ করুন মাদককে। মাদকমুক্ত দেশ গড়ার জন্য আসুন মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে মাদককে নির্মূল করি।
মাদক নির্মূলে করনীয় ঃ অভিভাবকদের করনীয় ঃ
শিশু বয়সে সন্তানের কোমল মনে যাতে কোনো অস্থিরতা না জন্মায়। সে ব্যাপারে সচেতন থাকা জরুরী। সব বয়সের সন্তানের প্রতি অভিভাবকদের সুদৃষ্টি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু উঠতি বয়সীদের প্রতি সর্তক দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ অসৎ বন্ধুর সঙ্গ দোষে অনেক ভালো ছেলে মেয়ে নতুন অভিজ্ঞতা, তাদের ভাষায় ‘ফিলিংস’ নেওয়ার জন্য এ বয়সে মাদক নিয়ে থাকে। মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে প্রথমবার মাদক নিয়েছিল এমন অনেকেই দ্বিতীবার মাদক নিতে চায়নি। কিন্তু বন্ধুদের সামনে ছোট হওয়ার ভয়ে কিংবা বন্ধুদের চাপে মাদকদ্রব্য নিতে বাধ্য হয়েছে। পরে অভ্যস্ত হয়ে মাদক নির্ভর হয়ে পড়েছে। অনেকেই দু’একবার মজা করতে গিয়ে জড়িয়ে পড়েছে। তাই অভিভাবকদের প্রতি একান্ত অনুরোধ আপনার ¯েœহের সন্তানের প্রতি সর্তক দৃষ্টি রাখুন। মাদকের ভয়ংকর ছোবল থেকে তাদেরকে বাঁচান। আপনার সন্তানেরা কোন ধরণের ছেলে মেয়দের সাথে মেলামেশা করে তা নজর রাখুন। তাদেরকে সব সময় সৎ সঙ্গ নিতে উৎসাহিত করুন। অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করতে উদ্বুদ্ধ করুন।
শিক্ষকদের কর্তব্য ঃ মাদক দ্রব্য সম্পর্কে স্কুল কলেজের শিক্ষকেরা ছাত্র-ছাত্রীদের পরিস্কার ধারণা দিয়ে সর্তক করতে পারেন। কারণ এ বয়সে অনেকেই মাদকের কুফল সম্পর্কে ধারণা থাকে না। এছাড়া মাদক নিমূলে প্রতিটি স্কুল কলেজে মাদক নিমূল কমিটি গঠন করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ঃ যদি আপনার সন্তান অতিমাত্রায় মাদক নির্ভর হয়ে পড়ে, এবং পারিবারিকভাবে তাকে কোনমতেই নিয়ন্ত্রন করা না যায়। তাহলে চিকিৎসার জন্য বিশেষ চিকিৎসা কেন্দ্রের শরনাপন্ন হোন। চিকিৎসকের পরামর্শ মত সন্তানকে সুস্থ করে তুলুন। চিকিৎসার পরে যাতে আর মাদক নিতে না পারে সেজন্য পারিবারিক ভাবে তাকে খুব কাছাকাছি পর্যবেক্ষনের মধ্যে রাখতে হবে।
ধর্মীয় বিধি বিধান পালনে উদ্বুদ্ধকরণ ঃ ছোট বেলা থেকেই ছেলে মেয়েদের ধর্মীয় বিধি বিধান পালনে উদ্বুদ্ধ করুন। ভালো মানুষের সঙ্গে থাকার ব্যবস্থা করুন। তাদের সুখ দুঃখের অংশীদার হোন। তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরন করুন। তাদের চাওয়া পাওয়াকে মূল্যায়র করুন।
পথ শিশুদের প্রতি যতœশীল হোন ঃ পথ শিশুদের আমরা সাধারণ কোন মূল্যায়নই করি না। তাদের সব সময় আমরা সহযোগিতা, সহমর্মিতার বদলে তাদের প্রতি নিন্দা ও ধিক্কার ও ছুড়ে দিই। তাদের নানা ধরণের অত্যাচার নির্যাতন করি। কিন্তু তারাও আমাদের মতো মানুষ । তারাও আপনাদের সন্তানের মতোই একজন সন্তান। কিন্তু ভাগ্য দোষে তারা আজ পথকেই খুঁজে নিয়েছে। মানুষের অত্যাচার নির্যাতন সইতে সইতে তারা নিজের জীবনের প্রতি মায়া হারিয়ে ফেলে এবং প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে মাদকের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। তাই আসুন তাদের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিই। তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে দেশের সম্পদ হতে সহযোগিতা করি।
মাদকাসিক্ত হচ্ছে একটি অভ্যাসগত রোগ। এটি নির্মূলের জন্য যুব সমাজের একটি সিন্ধান্তই যথেষ্ট। যুব সমাজের একটি দৃপ্ত শপথই পারে তাদেরকে মাদকের অন্ধকার থেকে ফেরাতে। মাদকাসক্ত হয়ে পৃথিবীতে কেউ কিছুই করতে পারেনি,নিজের ধ্বংস ছাড়া। তাই এসো মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সামাজিক আন্দোলন শুরু করি। আমাদের শ্লোগান হোক
মাদক গ্রহন করব না
মাদক মোরা নেব না
মাদকমুক্ত সমাজই হোক তারুন্যের অঙ্গীকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *