মিললো আরেক লাশ হাতিয়ায় রক্তাক্ত লড়াই

Slider গ্রাম বাংলা

 

61777_hatiya
ঢাকা;  রক্তাক্ত লড়াই চলছে নোয়াখালীর হাতিয়ায়। চলছে সংঘাত। সর্বশেষ উদ্ধার করা হয়েছে আরেকটি লাশ। গতকাল সকালে তমরুদ্দিন ঘাটের পাশে নদীর তীর থেকে বাহার উদ্দিন সর্দারের (৪২) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশটি ছিল গলাকাটা এবং নাড়িভুঁড়ি বের করা। গত কয়েকদিনের টানা সংঘাতের ঘটনায় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত বাহার উদ্দিন সর্দার চরকিং ইউনিয়নের দক্ষিণ শুলকিয়া গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে। এর আগে নিহত হন দুইজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তমরুদ্দিন ঘাটের পশ্চিম পাশে মেঘনা নদীর মোহনার বোয়াখালি সূর্যমুখী খালের পাড়ে আটকে থাকা অবস্থায় বাহার উদ্দিন সর্দারের লাশ দেখতে পায় স্থানীয় জেলেরা। পরে তারা হাতিয়া থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ রোববার সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। স্থানীয়রা আরো জানান, গত বৃহস্পতিবার চরকিং ইউনিয়নের শুল্লুকিয়া গ্রামে কয়েকটি বসতঘরে লুটপাট ও অগ্ন্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় সন্ত্রাসীরা। এসময় সন্ত্রাসীরা সাবেক এমপি আলহাজ মোহাম্মদ আলী সমর্থিত আওয়ামী লীগ কর্মী বাহার উদ্দিন সর্দারের হাত-পা ভেঙে গলা কেটে নদীতে ফেলে দেয়।
এদিকে, নিহত বাহার উদ্দিন সর্দার চরকিং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা বলে দাবি করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী। তিনি জানান, আওয়ামী লীগ নেতা বাহার আমার সমর্থক হওয়ায় তাকে হাত-পা ভেঙে গলা কেটে নদীতে ফেলে দেয় মহিউদ্দিন আহম্মেদের পালিত সন্ত্রাসীরা। অপরদিকে, হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহম্মেদ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, নিহত বাহার উদ্দিন সর্দার কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। যার ফলে তার মৃত্যুর সঙ্গে আমাদের আওয়ামী লীগের কোনো লোক জড়িত নয়। হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ জানান, সকালে স্থানীয় লোকজন মেঘনা নদীর মোহনায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেয়। পরে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। হতভাগ্য আওয়ামী লীগ নেতা বাহার সর্দারের ভাই মো. সেলিম জানান, লাশ দাফনের পর খুনিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ৩০শে মার্চ। হাতিয়ার আফাজিয়া বাজারে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালের জন্য স্থানীয়রা ডিলার আবুল কালামের গুদাম ঘেরাও করে। এ ঘটনার জেরে গোলাগুলিতে আহত হন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আশরাফ উদ্দিন। হাতিয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ মৃত্যুর জেরে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে সংঘাত। হামলা চালানো হয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য মনির উদ্দিনের বাড়িতে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান নুরুল আলম (৩০)। নুরুল আলম চরকিং ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নূর হোসেনের ছেলে। তিনি যুবলীগের কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। পুলিশ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সহিংসতায় জড়িতদের ধরতে হাতিয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযানে এ পর্যন্ত ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *