মাটিতেই পা মাশরাফির নয়া কৌশল শ্রীলঙ্কার

Slider খেলা সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

59162_s1

 

 

 

 

 

সিরিজ জয় নাকি সমতা! দুই দেশের ক্রিকেট ভক্তদের এ ভাবনাতেই চলছে দিন। সমর্থকদের দ্বিধা ঘুচাতে আজ বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায় সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। এর আগে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হার ঠেকাতে ডাম্বুলায় নতুন রণকৌশল আঁটছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশও প্রস্তুত সেই কৌশলের বিপরীতে নিজেদের সেরাটা দিয়ে লঙ্কার মাটিতে প্রথম সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে। তবে স্বপ্ন থাকলেও বেশ সতর্ক টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। একচুল ভুল হলেই স্বপ্নের রং ফিকে হয়ে যেতে পারে সেটা তার খুব ভালোভাবেই জানা। শুধু তা-ই নয়, যারা এখনই শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বপ্নে বিভোর তাদের ওপর বিরক্তও অধিনায়ক। মাশরাফি বলেন, ‘সিরিজ জিতলে আমাদের জন্য ভালো ইম্প্যাক্ট হবে। এর আগেই আমি ৩-০ ব্যবধানে জয়ের কথায় যেতে চাই না। একটা ম্যাচ জিতি আর খুব তাড়াতাড়ি শুনে ফেলি ৩-০, ৩-০। এটা খেলোয়াড়দের জন্য একটা বাড়তি চাপ। আমার মতে, এখান থেকে বাইরে থাকাই ভালো।’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৯ ম্যাচে মাত্র ৫টি জয়। আর এখানে তো এর আগে ৪ সিরিজের ৩টিতেই টাইগাররা হোয়াইট ওয়াশ হয়েছে। সেই হিসাবে অধিনায়ক ৯০ রানের দাপুটে জয়ের পরও পা রেখেছেন  মাটিতে।
সিরিজের শুরু থেকে অধিনায়ক মাশরাফি বলছিলেন প্রতিটি ম্যাচই হবে তাদের জন্য নতুন একটি দিনে নতুন একটি লড়াই। তাই আগের ভালো লড়াই থেকে আত্মবিশ্বাস এলেও তা যেন চাপ না হয় দলের কারও জন্য। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩২৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে টাইগাররা। এর ফলে পুরো সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখেন মোস্তাফিজুর রহমান, মাশরাফি, তাসকিন, সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজরা। শেষ পর্যন্ত নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা এক জয়। এর আগে শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথম ওয়ানডে জয়টি ছিল বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে। এবার জয় এলো কোনো কিছুর আশীর্বাদ ছাড়াই, একেবারে মাঠের লড়াইয়ে।
আজ দ্বিতীয় ম্যাচেও একেবারেই নতুনভাবে শুরু করতে চাইছেন অধিনায়ক মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলা সবচেয়ে সুবিধাজনক। প্রথম ম্যাচ জিতেছি, এখন দ্বিতীয় ম্যাচে মনোযোগ  দেয়া উচিত। সবসময় কথা হয়, ৩-০ বা ৫-০। অন্য দলও তো খেলতে আসে। তারা তাদের সেরা চেষ্টাও তো করবে।’ শ্রীলঙ্কাকে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হারাতে পারলে আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে ছয় নম্বরে উঠে যাবে বাংলাদেশ- এই হিসাবও মাথায় রাখতে ম্যাচের আগে নারাজ অধিনায়ক। কারণ, শত হোক লঙ্কার মাটিতে আত্মবিশ্বাসটা হতে পারে হারের কারণ।
ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের উইকেটে বরাবরই ব্যাটসম্যানদের রাজত্ব। এ বিষয় জানা বাংলাদেশ অধিনায়কেরও। প্রথম ম্যাচে ৩শ’ ছাড়ানো ইনিংস খেলতে না পারলে জয় যে এত সহজ হতো না তাও তিনি মানেন। কারণ, তামিম ইকবাল সেঞ্চুরি না করলে আর তার সঙ্গে সাব্বির রহমান ও সাকিব আল হাসান ব্যাটে ঝড় না তুললে এই রান সম্ভব হতো না বলেই মনে করেন মাশরাফি। তাই এ ম্যাচেও ব্যাটসম্যানদের  আরো একবার  লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন অধিনায়ক। বলেন, ‘গত ম্যাচে বড় সংগ্রহ হওয়ার কারণ একটাই। তামিম ৫০-৬০ রান করে আউট হয়নি। যদি ও (তামিম) ৫০-৬০ রানে আউট হতো, তাহলে নিশ্চিতভাবে রান ২৭০-২৮০ হতো। আমাদের ব্যাটসম্যানদের ৫০-৬০ রান অনেক আছে। আমরা চাই ওরা এ জায়গাটায় উন্নতি করুক। কোনো ব্যাটসম্যান যদি তাদের পঞ্চাশ রানকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারে তাহলেই ভালো করা সম্ভব। আগের ম্যাচে তামিম সেঞ্চুরি করলেও সাব্বির মিস করে ফেলেছে। আমরা এ জায়গায় উন্নতি করতে চাই। এটা নিয়মিত করতে পারলে ম্যাচ জেতা সহজ হয়ে যাবে।’
এই ম্যাচে শ্রীলঙ্কার তাদের রণকৌশল বাদলাচ্ছে। ডাম্বুলার উইকেটে রাখা হচ্ছে সবুজ ঘাস। এতে লঙ্কান দলেও আসছে পরিবর্তন। জানা গেছে, বাড়ানো হচ্ছে পেসার। কারণটা মাশরাফির সঙ্গে মোস্তাফিজ ও তাসকিনদের সফলতা। প্রথম খেলায় লঙ্কান বোলারদের মধ্যে তিনটি উইকেট পেয়েছে দুই পেসার লাকমল ও লাহিরু কুমারা। তাই এ ম্যাচে পেস শক্তিতে টাইগার ব্যাটসম্যানদের  ঠেকানোর পরিকল্পনা নিয়েছে লঙ্কানরা। তবে এতে প্রস্তুত আছে বাংলাদেশও। প্রয়োজনে প্রথম ম্যাচে জয়ী টিম কম্বিনেশন ভেঙে ফেলতেও রাজি আছেন অধিনায়ক মাশরাফি। উইকেটে বুঝে আজ টাইগারদের একাদশেও পরিবর্তন আসতে পারে। হয়তো আরো একজন পেসার নিয়ে খেলতে পারে দল।  উইকেট নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘উইকেট কেমন আচরণ করবে বলা খুব কঠিন। আগের উইকেট থেকে মাঝখানে একটু ঘাস বেশি মনে হয়েছে। এটা বোলারদের কতটুকু সাহায্য করবে সেটা বলা কঠিন। এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, ওরা দুজন নতুন পেসার নিয়েছে। এক্ষেত্রে উইকেটে ঘাস থাকতেই পারে।’ বাংলাদেশের কৌশল নিয়ে অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা একাদশ ঠিক করিনি। আগামীকাল (আজ) উইকেট দেখে আমাদের একাদশ ঠিক করবো। আমরা শেষ দুই বছরে জয়ী দলের সমন্বয় নিয়ে কখনো ভাবিনি। আমরা ২০১৫ সালে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও এমন করেছি। কারণ, আমরা সবসময় ভেঙে ভেঙে খেলেছি। কালকের উইকেট হয়তো এক নাও হতে পারে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *