ডাম্বুলায় ইতিহাস বদলের হাতছানি

Slider খেলা সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

58661_s1

 

 

 

 

 

 

সিরিজের প্রথম ওয়ানডে খেলতে বাংলাদেশ দল গতকাল পৌঁছেছে ডাম্বুলাতে। শ্রীলঙ্কার অন্যতম বৃহৎ এ শহরটি কলম্বো থেকে ১৪৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বদিকে অবস্থিত। দলের তরুণ সদস্য মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন  সৈকতদের কাছে রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামটি একেবারেই নতুন। কিন্তু দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসানরা সেখানে পা রেখে হয়তো ফিরে গেছেন সেই দুঃস্বপ্নের ২০১০ সালে। সেবার সাকিবের নেতৃত্বে এশিয়া কাপে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের কাছে দল হেরেছিল বেশ বাজেভাবে। তবে ৭ বছর আগের সেই বাংলাদেশ এখন বদলে গেছে আমূল। তার প্রমাণতো প্রথমবার টেস্টে হারের স্বাদ নিয়ে বুঝতে পেরেছে লঙ্কানরা। এবার অবশ্য মাশরাফির দায়িত্ব তার ডেপুটিকে অতীতের সেই হারের বাজে স্মৃতি ভুলিয়ে দেয়ার। কলম্বোতে প্রস্তুতি ম্যাচে হারলেও ব্যাটে সেই বার্তা দিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক। প্রস্তুতি ম্যাচে তার তাণ্ডবে লুকানো আছে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস। শনিবার এই মাঠেই লঙ্কায় ওয়ানডে ইতিহাস বদলের লড়াই শুরু করবে টাইগাররা।
২০১০ সালের এশিয়া কাপের দলে শুধু মাশরাফি আর সাকিবই নন, ছিলেন বর্তমান দলে থাকা ওপেনার তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও। এর মধ্যে ব্যাট হাতে তামিম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫১ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেন। এর আগে ভারতের বিপক্ষে ২২ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে পরের ম্যাচে করেছিলেন ৩৫ রান। এবার দেশ সেরা এই ওপেনারের কাছে আশার মাত্রাটা অনেক বেশি। টেস্টে জয়ে ম্যাচ সেরা হয়ে তার দায়িত্বটা অনেক বাড়তি থাকবে। সেবার ইমরুল কায়েস ৬৬ রানের একটি ইনিংসও খেলেছিলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে। কিন্তু বাকি দু’টি ম্যাচে ছিলেন ব্যর্থ। এবারও লঙ্কাতে এসে টেস্ট ও প্রস্তুতি ম্যাচে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রাখতে পারেননি। তাই প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে তার পরিবর্তে দলে দেখা যাবে সৌম্য সরকারকে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এরপর সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেনরা সামলাবেন ব্যাটিংয়ের বড় দায়িত্ব। ডাম্বুলার উইকেটে ব্যাটসম্যানরাই বেশি সহযোগিতা পেয়ে থাকে। এর আগে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩শ’র বেশি রান করে। যদিও এ মাঠে এই দুটিই ৩শ’ ছাড়ানো স্কোর। আর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ২৪৬/৫ রান। পাকিস্তানের ৩৮৫/৭ এর জবাবে সাত বছরে উইকেটে বড় ধরনের কোন পরিবর্তন না হয়ে থাকলে এখানে দলের জয়-পরাজয়ে ব্যাটসম্যানদেরই বড় ভূমিকা রাখতে হবে।
অন্যদিকে ডাম্বুলার উইকেটে সফল স্পিনাররাই। যে কারণে দলের স্পিন শক্তি বাড়াতে হঠাৎ করেই অফ স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজকে দলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। কারণ বল হাতে এই মাঠে  সেরা আরেক অফস্পিন জাদুকর মুত্তিয়া মুরলিধরণ। মাত্র ২১ ম্যাচে ৪২ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। সাকিব আল হাসান আছেন দলের স্পিনের বড় ভরসা হয়ে। সঙ্গে মাহমুদুল্লাহ, মোসাদ্দেক ও সাব্বির রহমানও স্পিনে দক্ষ। পেসাররাও খুব খারাপ করেনি এই স্টেডিয়ামে। লঙ্কার সাবেক পেসার পারভেজ মাহরুফ ২৩ ও মালিঙ্গা নিয়েছেন ২১টি উইকেট। ২০১০ সালে তিন ম্যাচে মাশরাফি বিন মুতর্জা বল হাতে মাত্র ২টি উইকেট পেয়েছিলেন এখানে। এখন তিনি অনেক পরিণত। তার সঙ্গে আছেন তরুণ পেস সেনসেশন মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ। সব মিলিয়ে টিম বাংলাদেশ এখানে তাদের সেরা পারফরম্যান্সটা দিতে পারলে লঙ্কানদের হারানো খুব একটা কঠিন হবে না।
ডাম্বুলাতে এই ম্যাঠে ৩৮ ম্যাচের ২৫টিতেই জিতেছে লঙ্কানরা। তবে বর্তমান অধিনায়ক উপল থারাঙ্গা ছাড়া দলের আর কারও উল্লেখ করার মত পারফরম্যান্স নেই এখানে। তাই তরুণ শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের অভিজ্ঞতা তরুণদের নিয়ে সিরিজ জয়ের স্বপ্নই দেখছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *