ব্রেক্সিট বিল পাস: তেরেসা মে’র সামনে সব পথ এখন উন্মুক্ত

Slider সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সারাবিশ্ব

57404_theresa-may

 

 

 

 

 

বহুল আলোচিত ও প্রতীক্ষিত ব্রেক্সিট বিল পাস করেছে বৃটিশ পার্লামেন্ট। এর ফলে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত লিসবন চুক্তির অনুচ্ছেদ ৫০ সক্রিয় করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র সামনে সব পথ উন্মুক্ত হয়ে গেল। তিনি এ অনুচ্ছেদ সক্রিয় করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনকে বের করে আনার উদ্যোগ নিতে পারেন এখন যেকোনো সময়। গতকাল বৃটিশ পার্লামেন্টের নি¤œ কক্ষ হাউজ অব কমন্সে এ সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপন করা হয়। ওই বিলে উচ্চ কক্ষ হাউজ অব লর্ডসের দুটি সংশোধনী প্রত্যাখ্যান করে হাউজ অব কমন্স। বৃটেনে বসবাসরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করা সংক্রান্ত সংশোধনী বাতিল হয়ে যায় ৩৩৫-২৮৭ ভোটে। অন্যদিকে ব্রেক্সিট নিয়ে পার্লামেন্টে অর্থপূর্ণ ভোটের সংশোধনী প্রত্যাখ্যাত হয় ৩৩১-২৮৬ ভোটে। হাউজ অব কমন্সে বিলটি অনুমোদিত হওয়ার পর তা পাঠানো হয় উচ্চ কক্ষ হাউজ অব লর্ডসে। সেখানেও বিলটি পাস হয়। বিলটি কোনো সংশোধনী ছাড়াই ২৭৪-১১৮ ভোটে পাস করে হাউজ অব লর্ডস।  এরপর তা পাঠিয়ে দেয়ার কথা রয়েল এসেন্ট বা রাজপরিবারের অনুমোদনের জন্য রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি আজ মঙ্গলবার এতে স্বাক্ষর করবেন। তিনি এতে স্বাক্ষর করলেই এ বিলটি আইনে পরিণত হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি ও স্কাই নিউজ। এতে বলা হয়, ইইউ-এর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের থাকা না থাকা নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে ব্রেক্সিট বিলটি পাস করেছে বৃটেনের সংসদ। সংসদের উচ্চ কক্ষ, হাউস অব লর্ডস, আর্টিকেল-৫০ সংসদে পাস করার পর ইইউ ছাড়তে যুক্তরাজ্যের এখন আর কোনো বাধা রইলো না। যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ইইউ নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করবার বিষয়টি নিয়ে সরকারের উপরে কিছুটা চাপ রয়েছে। যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩০ বছর ধরে বাস করছেন ফরাসী নাগরিক এন-লর ডন্সকি। যুক্তরাজ্যে ইইউ-এর যে প্রায় ৩০ লাখ নাগরিক বসবাস করছেন তাদের সংগঠন ‘দি থ্রি মিলিয়ন’-এর সহকারি চেয়ারপার্সন-ও তিনি। এই বিল পাস হওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। এন-লর ডন্সকি বলছেন, ভোটের কথা শুনে আমার মন বিষাদে ছেয়ে গেছে। এর অর্থ হলো, আমরা যারা এখন যুক্তরাজ্যে বাস করছি, রাজনৈতিক আলোচনার টেবিলে দর কষাকষির জন্য তাদেরকেই আসলে ব্যবহার করা হবে এবং এই ক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের আর কিছুই বলারও থাকবে না।
তবে, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ইইউ নাগরিক যারা যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন তাদের অধিকার নিশ্চিত করার ব্যাপারে সরকার আন্তরিক। ওদিকে স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জেন এক ঘোষণা দিয়েছেন- স্কটিশদের স্বাধীনতার লক্ষ্যে দেশটিতে নতুন করে আরেকটি গণভোটের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাইবেন তিনি। বৃটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেবার প্রেক্ষিতে এই গণভোট প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি। কারণ স্কটল্যান্ডের বহু মানুষ ইইউ-তে থেকে যাওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছিল। স্টার্জেন বলেছেন- স্কটিশরা যদি সত্যিই এমনটি চায় তাহলে যুক্তরাজ্য থেকে বের হওয়ার লক্ষ্যে ২০১৯ সালের আগেই এই গণভোট হতে হবে। অন্যদিকে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে বলেছেন- স্বাধীনতার জন্য স্কটল্যান্ডে আবারো গণভোট হলে বিভেদ সৃষ্টি হবে এবং অনিশ্চিত পরিস্থিতি তৈরিরও আশঙ্কা আছে। উল্লেখ্য, ব্রেক্সিট বিষয়ক বিল পার্লামেন্টে পাস হওয়ার পর তাত্ত্বিকভাবে অনুচ্ছেদ ৫০ এখন যেকোনো সময় সক্রিয় করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। কেউ কেউ বলছেন, তিনি আজ মঙ্গলবারই এ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন। আবার ডাউনিং স্ট্রিটের সূত্রগুলো বলছেন, এ সপ্তাহে নয়। প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রে কিছুটা কালক্ষেপণ করতে পারেন। তিনি এ মাসের শেষ নাগাদ অপেক্ষা করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *