বৃহস্পতিবার, মে ০২, ২০২৪

বড়বাজারে বড় আগুন, জ্বলন্ত বাড়ি ঘিরে আতঙ্ক

Slider সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সারাবিশ্ব

image

 

 

 

 

 

সোমবার রাতে বড়বাজারে ঘিঞ্জি গলির একটি বাড়িতে আগুন লাগে। বাড়ির ছাদে আটকে পড়েন বাড়ির কিছু বাসিন্দা। আগুন লাগার প্রায় দু’ঘণ্টা পরে আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধার করা গিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। দমকলের ২৫টি ইঞ্জিন গিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে গিয়েছে। গভীর রাতের খবর, আগুন তখনও জ্বলছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত দমকলকর্মীদের মতে, প্রচণ্ড ধোঁয়া ও আগুনের তাপের জন্য আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধার করতেও অনেক দেরি হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে বড়বাজার থানা এলাকার ৩ আমড়াতলা লেনে। জায়গাটি বাগড়ি মার্কেটের খুব কাছে। ঘিঞ্জি ওই এলাকার বাড়িতে আগুন লাগার ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আশপাশের বাড়ি থেকেও লোকজন সরতে শুরু করে দেন। দমকলে খবর দেওয়ার পরে, স্থানীয় বাসিন্দারা  নিজেরাই আগুন নেভানোর কাজে লেগে পড়েন। কিন্তু, পুলিশ জানিয়েছে, বহু পুরনো তিনতলা ওই বাড়ির একতলা ও দোতলায় প্লাস্টিক ও জরির ছোট ছোট গুদাম থাকায় সেই আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে তা স্থানীয় মানুষদের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা
সম্ভব হয়নি।

ওই বাড়িটিরই তিনতলায় ৪-৫টি পরিবারের বাস। আগুন লাগার পরে ওই বাসিন্দাদের অনেকেই নীচে নেমে আসেন। তবে, অনেকেই ছাদে উঠে যান। সেখানে মহিলা ও শিশুও ছিল। দমকলের কর্মীরা জানিয়েছেন, এই বাড়ির মূল সিঁড়িটি কাঠের তৈরি। আগুনে সেই সিঁড়িটির আংশিক পুড়ে যায়। ফলে, ছাদে আটকে পড়া বাসিন্দারা সেই সিঁড়ি ব্যবহার করে নীচে নেমে আসতে পারেননি। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও দমকলকর্মীরা পাশের বাড়ি থেকে মই নিয়ে তার সাহায্যে পিছন দিক দিয়ে আটকে পড়া বাসিন্দাদের নামিয়ে আনেন। আবার আগুন দেখে কেউ কেউ আগেই নেমে এসেছিল। অনেকে পাশের বাড়ির কার্নিশে লাফ দিয়েও নেমে পড়েন।

গলিটি ছোট এবং ঘিঞ্জি হওয়ায় দমকলের ইঞ্জিন নিয়ে ওই গলিতে ঢোকা যায়নি। দূর থেকে লম্বা পাইপ দিয়ে জল ছেটানোর কাজ করতে হয়েছে। বহুতলের উপরের দিকে আটকে পড়া কাউকে উদ্ধারের জন্য দমকলের কাছে অত্যাধুনিক ল্যাডার রয়েছে। কিন্তু, এই গলিতে সেই ল্যাডার লাগানো গাড়ি ঢুকতে পারবে না বলে তাকেও ব্যবহার করা যায়নি। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, দমকলের যথেষ্ট পরিমাণ জল ছিল না। ফলে আগুন নিভতে দেরি হয়েছে। মল্লিকঘাট থেকে জল নিয়ে এসে আগুন নেভানো হয়।

ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে মহম্মদ আলম জানান, ওই বাড়ির একতলায় তাঁর একটি প্লাস্টিকের গুদাম ঘর রয়েছে। এ দিন রাত পৌনে ন’টা নাগাদ তিনি গুদামেই ছিলেন। আচমকাই ঘরের বাইরে থেকে বিকট একটা শব্দ পান। আলমের কথায়, ‘‘ঘরের বাইরে বেরিয়ে দেখি আগুন। আমি চিৎকার করে ছুটে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি।’’ কোথা থেকে প্রথম আগুন লাগল, কী করে আগুন লাগল সে বিষয়ে আলম যেমন অন্ধকারে, তেমনই অন্ধকারে দমকল কর্মীরাও। মহম্মদ আফরোজ নামে ওই বাড়ির এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আগুন লাগার সময় আমি ও আমার পরিবারের সবাই বাড়িতে ছিলাম। টের পেয়েই আমি কিছু জামাকাপড় নিয়ে স্ত্রী-সন্তানের হাত ধরে বেরিয়ে আসি। পরে খবর পেলাম, বাড়িতে সবই পুড়ে গিয়েছে।

দমকলকর্মীরাদের অভিযোগ, বাড়িটিতে কাঠের সিঁড়ি থাকায়  ও প্রচুর দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় দ্রুত একতলা থেকে দোতলা এবং পরে তিনতলায় আগুন ছড়িয়ে যায়।  গভীর রাত পর্যন্ত তিনতলায় আগুন জ্বলছে। পুলিশ ও দমকলকর্মীদের দাবি, আগুনে হতাহতের খবর নেই। এই আগুনের খবর পেয়ে দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে যান। আগুন নেভানোর কাজ তদারকি করতে গিয়ে এক সময়ে তিনি নিজেও বিপদের মধ্যে পড়েছিলেন। অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *