হলি আর্টিজান অন্য ঠিকানায় চলছে

Slider সারাদেশ

 712c459dbfa4714c1ccf3260166da9d4-SLM_3437

ঢাকা; সেই সবুজ লন নেই। নেই টেবিল দিয়ে সাজানো বড় হলঘর। পুরোনো ঠিকানা ছেড়ে গুলশানের এক শপিং মলে ছোট পরিসরে এক মাস আগে চালু হয়েছে হলি আর্টিজান বেকারি। প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা বলছেন, ভালোই চলছে তাঁদের বেকারি।
গত বছরের ১ জুলাই রাতে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় জিম্মি করে ১৭ জন বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে জঙ্গিরা। জিম্মিদের উদ্ধার করতে গিয়ে অভিযানে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। পরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে পাঁচ হামলাকারী জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হন। হামলার পর প্রায় সাড়ে চার মাস আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকে হলি আর্টিজান প্রাঙ্গণ। গত নভেম্বরে রেস্তোরাঁটি মালিকপক্ষকে বুঝিয়ে দেয় পুলিশ।
তখন এর মালিকদের একজন সাদাত মেহেদী বলেন, বেকারি আর আগের জায়গায় থাকছে না। এখানে আবাসিক ভবন তৈরি হবে। এ বছরের ১০ জানুয়ারি নতুন ঠিকানা ১৫৩/এ গুলশান নর্থ অ্যাভিনিউতে হলি আর্টিজান বেকারি আবার চালু হয়। র্যাংগস আর্কেডের দোতলায়, সুপারশপ গরমেট বাজারের একটি অংশে বেকারির কার্যক্রম চলছে।
সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে সুপারশপটির দরজা পেরোলে ডান দিকের কোনায় ছোট পরিসরের হলি আর্টিজান বেকারি। গতকাল বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায়, কাউন্টারের ওপর নানা আকারের রুটি সাজানো। কাচের আড়ালে রাখা আছে কেক-পেস্ট্রি-টার্ট। কাউন্টারের সামনে ক্রেতাদের জটলা। হালকা সবুজ রঙের নিচু পার্টিশান দিয়ে মূল দোকান থেকে একটা অংশ আলাদা করা হয়েছে। সেখানে আটটা ছোট গোল টেবিল পাতা।
শপ ইনচার্জ শাহরিয়ার আহমেদ বললেন, ‘বেকারি বন্ধ থাকার সময় ক্রেতারা উৎসাহ দিতেন, যেন ছোট করে হলেও আমরা শুরু করি। বেকারি চালু হওয়ার দিন পুরোনো অনেকে শুধু শুভেচ্ছা জানাতে, দেখা করতে এসেছিলেন।’ তিনি বলেন, ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে ভালোই চলছে।
নতুন দোকানেও নিরাপত্তার বাড়তি ব্যবস্থা চেখে পড়ে। গেটের বাইরে রয়েছে সশস্ত্র পাহারা। ভবনের প্রবেশমুখেও পুলিশ সদস্যদের বসে থাকতে দেখা যায়।
বেকারিতে এখন প্রায় ২০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে। শাহরিয়ারের কাছ থেকে জানা গেল, আগের ঠিকানায় লন আর ভবনের দুই তলা মিলে প্রায় ৭০ জন অতিথি বসার ব্যবস্থা ছিল। সেই তুলনায় নতুন দোকানের আয়তন মাত্র ৫০০ বর্গফুট।
জানুয়ারি থেকে হলি আর্টিজানে শুধু বেকারি অংশ চালু হয়েছে। জুস, স্যান্ডউইচ, ইয়োগার্ট, জিলেত্তো, কফি, কেক—এসব হালকা খাবার পাওয়া যাচ্ছে। দামও আগের তুলনায় কম। তবে সকাল, দুপুর, রাতের খাবারের বিভাগ ‘ও কিচেন’ এখনো বন্ধ আছে। বেকারির বিক্রেতারা বললেন, সব খাবারই সন্ধ্যার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। বেশির ভাগ ক্রেতাই খাবার বাসায় নিয়ে যান।
বেকারিতে রুটি কিনতে এসেছিলেন কানাডার নাগরিক আনিটা জর্জ। হলি আর্টিজানের একজন নিয়মিত গ্রাহক ছিলেন তিনি। বললেন, ‘এটা খুবই ভালো যে এরা নতুনভাবে শুরু করতে পেরেছে।’
১ জুলাই হামলার রাতে শাহরিয়ার রেস্তোরাঁয় ছিলেন। সেই স্মৃতি এখনো তাঁকে তাড়া করে। বললেন, ‘জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ওইটা ভুলতে পারব না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *