ব্রহ্মপুত্রের বুকে ধান চাষ

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি

51534_t3

কুড়িগ্রাম; একসময়ের খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র নদ এখন নাব্যতা হারিয়ে মরা খালে খালে পরিণত হয়েছে। এখন শুষ্ক মৌসুম নদের বুকে জেগে উঠছে চরের পর চর। সেখানে চলছে স্থানীয় কৃষকদের ইরি-বোরো ধান চাষের প্রতিযোগিতা। নদের বুকে জেগে ওঠা চরে হালচাষ ছাড়াই কৃষকরা বোরো ধান, বাদাম, পিয়াজ, মিষ্টি আলুসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি রোপণ করছেন। সেখানে অতিরিক্ত পলি জমে থাকার কারণে সেচ ও সার ছাড়াই অধিক ফসল উৎপাদিত হচ্ছে। নদীর বিভিন্ন স্থানে স্থানে পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগেও ব্রহ্মপুত্র নদ ছিল প্রমত্তা ও খরস্রোতা। বর্তমানে উপজেলার থানাহাট, রমনা, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে প্রবহমান ব্রহ্মপুত্র নদটি নাব্য হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন রুটে বন্ধ হয়ে গেছে ট্রলার ও নৌকা চলাচল। অধিকাংশ লোকজনই পায়ে হেঁটে মাইলের পর মাইল পাড়ি দিচ্ছে। রাজারভিটা, ব্যাংকমারারচর, পুটিমারী, ফেচকারচরসহ বিভিন্ন স্থানের লোকজন ইতিমধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদে ইরি-বোরো চাষের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। নদে চর জেগে উঠায় বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় কয়েকশ’ পরিবারের মাছধরা ও নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথ। বিশাল নদটিতে চর জেগে পরিণত হয়ে ছোট্ট ছোট্ট নদী ও খালে। কৃষক আ. রহিমসহ অনেকে বলেন বর্ষা মৌসুমে চারদিকে পানি আর পানি থাকে এখন চর জেগে ওঠা নদের বুকে বোরো আবাদ করছি। গ্রীষ্ম শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে জেগে উঠেছে চর। কৃষক মোসলেম উদ্দিন জানান, চরাঞ্চলের মানুষকে বাঁচাতে হলে আগে ব্রহ্মপুত্রকে বাঁচাতে হবে। স্কুলশিক্ষক আশিক ইকবাল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নদীর উপরও পড়ছে। তাই গ্রীষ্ম মৌসুমে শুকিয়ে যাচ্ছে আর বর্ষা মৌসুমে বন্যা ও নদী ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. খালেদুর রহমান বলেন, এই সময় নদীতে পানি না থাকার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে পলি পড়ায় তা কাজে লাগিয়ে কৃষকরা বোরো চাষ করে লাভবান হচ্ছে। তিনি আরো জানান, চলতি মৌসুমে নদীর বুকজুড়ে ৬০৮ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *