হাই প্রবলেমে হাইওয়ে পুলিশ

Slider সিলেট

IMG_20170121_124158

সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেটে তিন শ’ কিলোমিটারের বেশি পথ। সে পথে দুর্ঘটনা আছে, বিপদ আছে। মাত্র দুটি থানা আর তিনটি পুলিশ ফাঁড়ি দিয়ে সে পথ সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে সিলেটের হাইওয়ে পুলিশ।

লোকবল সংকট, পরিবহন সংকট, অফিস সংকটে কেবলই ধুঁকছে কার্যক্রম। কোথাও ওয়্যারলেস নেই, কোথাও আবার কাজ চালাতে হচ্ছে পরিত্যক্ত ভবনে। কোনো দুর্ঘটনা বা অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ পৌঁছতে পৌঁছতে অনেক ‘দেরি’ হয়ে যায়।

সিলেটে হাইওয়ে পুলিশের থানা রয়েছে দুটি। জাতীয় মহাসড়ক ২ (এন-২)-এর অন্তর্ভুক্ত শায়েস্তাগঞ্জ ও শেরপুরে এ থানা দুটির অবস্থান। এর বাইরে সিলেটের সীমান্তবর্তী তামাবিলে, হবিগঞ্জের সাতগাঁওয়ে আর সুনামগঞ্জের জয়কলসে তিনটি ফাঁড়ি রয়েছে।

হবিগঞ্জের মাধবপুর ব্রিজ থেকে নবীগঞ্জ থানাধীন বড়চর পর্যন্ত এন-২ এর অন্তর্ভুক্ত ৫৭ কিলোমিটার ও বাহুবলের মীরপুর থেকে মৌলভী বাজারের শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার পথ রয়েছে শায়েস্তাগঞ্জ থানার আওতায়।

১শ’ কিলোমিটারের বেশি এ পথকে নির্বিঘ্ন রাখতে এ থানার সম্পদের মধ্যে রয়েছে একটি গাড়ি আর ৩টি ওয়্যারলেস। এক ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে এ থানা সামলাচ্ছে ২ জন এসআই, ১ জন করে সার্জেন্ট, এএসআই, এটিএসআই, নায়েক। কনস্টেবল আছেন ২১ জন আর রয়েছেন ২ জন চালক।

শায়েস্তাগঞ্জের ওসি সৈয়দ জাকির হোসেন বললেন সিলেট হাইওয়ে পুলিশের আওতাধীন পথের এক তৃতীয়াংশই তাকে সামলাতে হচ্ছে। জনবল সংকটসহ নানা সমস্যার কারণে এত বিশাল এলাকা সামলাতে তাদের বেগ পোহাতে হয়।

নবীগঞ্জ থানাধীন বড়চর থেকে ওসমানীনগরের তাজপুর ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত শেরপুর হাইওয়ে থানা। এর বাইরে মৌলভীবাজারের কামালপুর পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কে আরো ১০ কিলোমিটার পথ রয়েছে এ থানার আওতাধীন। মোটমাট ৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়ার জন্য এ থানায় রয়েছে একটিমাত্র গাড়ি। একজন ইন্সপেক্টরের অধীনে এ থানায় ১ জন এসআই, ২ জন করে সার্জেন্ট ও এএসআই, ১ জন এটিএসআই, ২২ জন কনস্টেবল ও ২ জন চালক রয়েছেন।

তাদের সবাইকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করতেও ভোগান্তি পোহাতে হয়। কারণ এ থানার কারো জন্যই কোনো ওয়্যারলেস বরাদ্দ নেই। শেরপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই সেকান্দার হোসেন বললেন, নিজেদের সাধ্যমতো তারা হাইওয়েতে দায়িত্ব পালন করছেন। আর এভাবে দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

সিলেটের ওসমানীনগরের তাজপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে নাজিরবাজার পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার আর মাঝে কিছু পথ ছেড়ে সিলেটের জৈন্তাগেট থেকে জাফলং মামার দোকান পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার পথ দেখভালের দায়িত্বে তামাবিল ফাঁড়ি। তামাবিল ১টি পিকআপ সম্বল করে এক এসআইয়ের নেতৃত্বে পুরো পথ তদারকি করছেন এএসআই ৩ জন, ১ জন করে এটিএসআই ও নায়েক আর আছেন ১৬ জন কনস্টেবল।

তামাবিল ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মাসুক মিয়া জানান সীমিত লোকবল আর পরিবহন নিয়ে মহাসড়ক তদারকির ক্ষেত্রে হিমশিমই খেতে হচ্ছে তাদের।

মৌলভীবাজার পৌরসভা থেকে হবিগঞ্জের বাহুবলের মীরপুর তিতারকোণা পয়েন্ট পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার পথ সামলানোর দায়িত্বে সাতগাঁও ফাঁড়ি। একটি গাড়ি সম্বল করে এক এসআইয়ের নেতৃত্বে ১ জন করে সার্জেন্ট, এএসআই, এটিএসআই, নায়েক, ১৪ জন কনস্টেবল ও ২ জন চালক এ পথ চষে বেড়ান।

ফাঁড়ি ইনচার্জ রুহুল আমীন জানান একটি ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবন থেকে কাজ চালাতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। এর উপর জনবল ও পরিবহন সংকট তো আছেই।

সিলেটের বিশ্বনাথের লামাকাজি থেকে সুনামগঞ্জের হাছনরাজা গেট পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক দেখভালের দায়িত্বে জয়কলস পুলিশ ফাঁড়ি। এখানেও একটি গাড়ি সম্বল করে এক এসআইয়ের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধ শত কিলোমিটার পথ তদারকি করতে ১ জন করে সার্জেন্ট, এএসআই, এটিএসআই ও নায়েক রয়েছেন। এ ফাঁড়িতে কনস্টেবল রয়েছেন ১৬ জন আর চালক আছেন ১ জন।

ফাঁড়ি ইনচার্জ নান্নু মিয়া বলেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজেদের সবটুকু দিয়ে সেবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *