নারায়ণগঞ্জ আদালত এলাকা থম থমে

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

f889b8389286b7578c4d3164a920277c-02

 নারায়ণগঞ্জ; আলোচিত সাত খুন মামলায় রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত এলাকায় কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার এই মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ের অপেক্ষায় সারা দেশের মানুষ।রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সে জন্য নারায়ণগঞ্জ আদালতসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জলকামান, পুলিশভ্যান ও প্রিজনভ্যান।

আদালতে প্রবেশের দুটি ফটকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আদালতে প্রবেশের ক্ষেত্রে তল্লাশির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আদালতের বাইরেও সতর্ক রয়েছে পুলিশ।

সাত খুন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা আসামিদের সকাল নয়টা নাগাদ আদালতে আনা হয়নি। তবে বিচারক ইতিমধ্যে আদালতে এসেছেন।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ, পরদিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত বাকিরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।

ঘটনার এক দিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় ১১ মে ফতুল্লা থানায় আরেকটি মামলা হয়। এই মামলার বাদী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। পরে দুটি মামলা একসঙ্গে তদন্ত করে পুলিশ।


১১ মাস তদন্তের পর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল র‍্যাব-১১-এর সাবেক ২৫ জন কর্মকর্তা-সদস্যসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। পরের বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি মামলার অভিযোগ গঠিত হয়। এরপর প্রায় সাত মাসে ৩৮ কর্মদিবস মামলার বিচারকাজ চলে। গত ৩০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ঘোষণা করেন।

অভিযুক্ত ৩৫ আসামির মধ্যে ২৩ জন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁদের মধ্যে ১৭ জন র‍্যাবের সদস্য। তাঁরা হলেন চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানা, হাবিলদার এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দ বালা, করপোরাল রুহুল আমিন, এএসআই বজলুর রহমান, হাবিলদার নাসির উদ্দিন, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, সৈনিক নুরুজ্জামান, কনস্টেবল বাবুল হাসান ও সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর। কারাবন্দী বাকি আসামিরা হলেন সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, তাঁর সহযোগী আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী, আবুল বাশার ও মোর্তুজা জামান (চার্চিল)।

র‍্যাব-১১-এর সাবেক ৮ সদস্যসহ ১২ আসামি এখনো পলাতক। তাঁরা হলেন করপোরাল মোখলেছুর রহমান, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবীর, এএসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল হাবিবুর রহমান এবং নূর হোসেনের সহযোগী সেলিম, সানাউল্লাহ ছানা, ম্যানেজার শাহজাহান ও ম্যানেজার জামাল উদ্দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *