নগর ভবন ঘেরাওয়ের হুমকি হুকারদের,

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

49294_b1

 

ঢাকা;  রাজধানীর গুলিস্তান ও মতিঝিল এলাকার আশেপাশের সড়ক ও ফুটপাথ অবৈধ দখলমুক্ত করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় সিটি করপোরেশনের যানবাহন ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ হকাররা। সিটি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সিটি করপোরেশনের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এই অভিযান শুরু হয়। তারা বায়তুল মোকাররম, দৈনিক বাংলা মোড়, মতিঝিল, দিলকুশা ও পল্টন এলাকায় অভিযান চালান। মতিঝিল থেকে ফুটপাথের দোকান উচ্ছেদ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে পল্টনের দিকে যায়। বেলা ২টার দিকে পল্টন মোড় এলাকায় হকাররা সিটি করপোরেশনের যানবাহন লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ে। এতে সিটি করপোরেশনের দুটি গাড়ির কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে কেউ আহত হননি। পুলিশ কাউকে আটকও করেনি। অভিযান শেষ করে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা ওই এলাকা থেকে চলে যান। উচ্ছেদ অভিযানের সময় পল্টনে আজাদ প্রোডাক্টসের গলিতে ফুটপাথের দোকানও ভেঙে দেয়া হয়। এ সময় ফুটপাথের ওপর দোকানে রাখা ফলমূল নষ্ট হয়। ওই ফুটপাথের ব্যবসায়ী মুসলিম অভিযোগ করেন, দিনের বেলায় তার দোকান খোলা ছিল না। তারপরও তা ভেঙে দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ী সাহেব আলী বলেন, আমাগোরে বলছিল সন্ধ্যার পর দোকান খুলতে। আমরা তো মেয়রের কথা অমান্য করি নাই। তাইলে আমাগো দোকান ভাঙলো ক্যান?” গত ৮ই জানুয়ারি নগর ভবনে এক বৈঠক শেষে মেয়র সাঈদ খোকন ঘোষণা দেন, রোববার থেকে কোনো কর্মদিবসে গুলিস্তান ও আশেপাশের এলাকায় দিনের বেলায় ফুটপাথে হকার বসতে দেয়া হবে না। হকাররা দোকান নিয়ে বসতে পারবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পরে। তবে ছুটির দিনে এ নিয়ম প্রযোজ?্য হবে না। অভিযান শুরুর আগে সকালে গুলিস্তান এলাকার ফুটপাথের দোকান বন্ধ থাকলেও বায়তুল মোকাররম ও জিপিওর সামনের সড়কে ফুটপাথের  দোকান খোলা দেখা যায়। নিষেধাজ্ঞার পরও কেন দোকান খোলা জানতে চাইলে মিজান নামের এক দোকানি বলেন, ‘আমরা তিনবেলা খাইতে বসছি। এখন আমাগোরে যদি বলে একবেলা খাইতে, তাহলে ক্যামনে হবে? সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা চলে গেলে সেখানে বিক্ষোভ শুরু করেন হকাররা। বাংলাদেশ জাতীয় হকার্স ইউনিয়নের নেতারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশও করেন। পুনর্বাসন না করে হকার উচ্ছেদের প্রতিবাদে আজ সোমবার নগর ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন তারা।

ওদিকে উচ্ছেদ অভিযান শেষে বিকালে নগর ভবনে সংবাদ সম্মেলনে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, জনদুর্ভোগ লাঘব করতে এ এলাকায় দিনের বেলায় কাউকে বসতে দেয়া হবে না। রাস্তা ও ফুটপাথ দখলমুক্ত না করা পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। সার্বিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতেই হবে। এর বিকল্প নেই। মেয়র বলেন, জনগণের পথচলা নির্বিঘ্ন করতেই আমাদের এ প্রচেষ্টা। এ ব্যাপারে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অবস্থান পরিষ্কার, স্পষ্ট এবং কঠোর। তিনি বলেন, জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের বিষয়ে কাউকে একবিন্দু ছাড় দেয়া হবে না। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কারও সঙ্গে আপস করবে না। হলিডে মার্কেটকে আরো আকর্ষণীয় করার জন্য দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কাজ করবে বলে জানান মেয়র। তারা হলিডে মার্কেটে ব্যবসা করতে পারেন। হলিডে মার্কেট জমজমাট করার জন্য আমাদের উদ্যোগ রয়েছে। আমরা তাদের সহায়তা করব। আমরা চাই হলিডে মার্কেট সিস্টেমটা দাঁড়াক। বাংলাদেশ জাতীয় হকার্স ইউনিয়নের নগর ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণার বিষয়ে মেয়র বলেন, যে যাই করুক, উচ্ছেদ অভিযান থামবে না। নগরভবন ঘেরাও করে করুক, মেয়রকে ধরে ধরুক। যা খুশি করুক। আমি ফুটপাথ, রাস্তা হকারমুক্ত করবই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *