সিরিয়াল গরু চুরিতে অতিষ্ট

Slider সিলেট

img_20170106_161410

সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় হঠাৎ গরু চুরির হিড়িক পড়েছে। গত এক মাস ধরে একের পর এক গরু চুরির ঘটনায় উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো গ্রামে ঘটছে চুরির ঘটনা। চোরের উপদ্রবে কৃষকের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

সর্বশেষ গত সোমবার রাতে ইসলামপুর গ্রামের কৃষক জীবন মিয়ার একটি গাভি গরু চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। এ অবস্থায় ওই কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। জীবন মিয়া জানান, ‘একটি গরুর পেছনে কত খাটুনি খাটতে হয়। এ অবস্থায় চোরেরা গরু নিয়ে গেলে গরিব মানুষের যে কী দশা হয়, সেটা যার যায় সে ছাড়া অন্য কেউ বুঝবে না।’

শুধু জীবন মিয়াই নন, ইসলামপুর গ্রামসহ পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের কলাবাড়ি, রাজনগর ও ইছাকলস ইউনিয়নের নতুন পারকুল গ্রামসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে গত এক মাসে ২৯টি গরু চুরি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যার আনুমানিক মূল্য ১১ লাখ টাকা।

জানা গেছে, গত ৪ ডিসেম্বর ভোরে পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কলাবাড়ী এলাকায় জয়নাল উদ্দিনের ৪টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চোরচক্র। ১০ ডিসেম্বর ভোরে উত্তর কলাবাড়ীর শাহাব উদ্দিনের ৩টি গরু নিয়ে যায় চোরেরা। পরে ৫৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে গরু ৩টি উদ্ধার করা হয়। শাহাব উদ্দিন জানান, গরু চুরির পরদিন একটা বিকাশ নাম্বার দিয়ে ১ লাখ টাকা দাবি করে চোরেরা। পরে ৫৫ হাজার টাকা বিকাশ করলে গরু ৩টি ছাড়া পায়। ২৮ ডিসেম্বর ভোর রাতে দক্ষিণ কলাবাড়ীর মনির উদ্দিনের বাড়ি থেকে ৩টি, উত্তর রাজনগর গ্রামের আব্দুল হাইর বাড়ি থেকে ৪টি ও একই গ্রামের সফিক মিয়ার ১টি গরু চুরি হয়।

৩০ ডিসেম্বর রাতে দক্ষিণ কলাবাড়ীর মুক্তিযোদ্ধা কছির মিয়ার ২টি ও একই গ্রামের আতা মিয়ার ৪টি গরু নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চোরচক্রটি। মাসখানেক আগে ইছাকলস ইউনিয়নের নতুন পারকুল গ্রামের আব্দুল খালিকের ৩টি ও সপ্তাহখানেক আগে একই গ্রামের রহিম উদ্দিনের ৪টি গরু চোরেরা নিয়ে যায়।

এলাকাবাসী জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ইদানীং সক্রিয় হয়ে উঠেছে গরু চোরচক্র। সংঘবদ্ধ চোরের দল রাতে গোয়ালে ঢুকে গরু নিয়ে নির্বিঘ্নে চলে যায়। কীভাবে এ চক্র নিঃশব্দে গরুগুলো বের করে নিচ্ছে সেও এক রহস্য। এভাবে একের পর এক গরু চুরির ঘটনায় গরু ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। হয়রানির ভয়ে তাঁরা থানায় মামলা বা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) পর্যন্ত করেন না।

পারকুল গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, গরু চুরির পর থানার পুলিশকে বললে আরও বিপদ। তখন দেখা যাবে, পুলিশ তো কিছু করবেই না, চোরেরা বাদবাকি গরুও নিয়ে যাবে। অন্যভাবেও হয়রানি করবে।

ইছাকলস ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ কুটি মিয়া জানান, আমার ইউনিয়ন থেকে প্রায় রাতেই গরু চুরি হচ্ছে। গত এক মাসে এই ইউনিয়ন থেকে ৮/৯টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে।

পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ বাবুল মিয়া জানান, প্রতি রাতেই বিভিন্ন গ্রামে চুরির ঘটনা ঘটছে। ‘একের পর এক চুরির ঘটনায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। উপজেলা পরিষদের আগামী সভাতে আমি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলব।’

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ রহুল আমিন বলেন, ‘গরু চুরির বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *