শংকা, আশংকায় অসুস্থ বাংলাদেশ

গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ ঢাকা নারী ও শিশু বাংলার মুখোমুখি রাজনীতি সম্পাদকীয় সারাদেশ

flage

–ভেতরে ও বাইরের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করলে বলতে হবে বাংলাদেশ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। একটি পরিবারে মহামারি দেখা দিলে আত্মীয় স্বজনও সহজে খবর নিতে আসেন না। এমনকি মহামারির রোগী মারা গেলে জানাজা বা শশ্মানেও অংশ গ্রহনকারীর সংখ্যা কমে যায়।

অন্য দিকে নিজ পরিবারে  অশান্তি থাকলে প্রতিবেশীরা সমাধান করতে এখন খুব একটা এগিয়ে আসেন না। প্রতিবেশীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বহিংসতা বাড়াতে উস্কানী দেয়। আবার বিবদমান পরিবারের নিকটাত্মীয়রাও পারিবারিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য স্বহিংসতা লেলিয়ে দেন।

সাম্প্রতিক সময়ে, জায়গা জমি দখল করতে কোন পরিবারের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কোন সুখী পরিবারকে ধ্বংস করার ফিল্মী রীতি শুধু লেখকের কলমে বা ছবির রচনায় সীমাবদ্ধ নয় বাস্তবে এর প্রতিফলন অহরহ। বলা যায় উৎসব চলছে।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত লাল সবুজের পতাকা আমরা কতটুকু সংরক্ষন করতে পারছি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। আত্মরক্ষার জন্য বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহকে বিচ্ছিন্ন বলতে বলতে আমরাই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। রাষ্ট্র এবং সরকারের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বেকায়দায় পড়েছে রাষ্ট্রের মালিক জনগন।

স্বাধীন সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক আমাদের এই বাংলাদেশ। বাক স্বাধীনতা সহ নাগরিকের মৌলিক অধিকার সংরক্ষন, ক্ষুধা ও  দারিদ্রমুক্ত  বাংলাদেশ নির্মান কতটুকু করতে পারছি আমরাই ভাল জানি। তবে নিজেরা না করে অন্যদের উপর ভরসা করার কারণে আমরা অলস ও পরনির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছি। ঘরে বসে থেকে অলস জীবন যাপনে অভ্যস্থ হওয়ায় আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। পরস্থিতি এমন যে, এই অবস্থা চলতে থাকলে অল্প সময়েই আমরা বিছানায় পড়ে যাব। এতে আমাদের সম্পূর্নরুপে পরনির্ভরশীল হতে হবে। আর যদি ঘরের মধ্যে মৃত্যু হয় তবে দাফন বা সৎকার করার লোকও খুঁজে পাওয়া কষ্ট হতে পারে। কারণ ৩৩ বছরেও লাশ খোঁজে পেয়েছি কিনা বিতর্ক আছে।

একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা বিপদগামী হয়ে গেলে এটিকে  বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করার কোন সূযোগ নেই। নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মচারী নিরাপত্তা বিঘিœত করলে বিষয়টিকে বিচ্ছিন্ন মনে করা, নিছক বোকামী মনে করতে হবে। নিজের সন্তানকে অঘটন করার সঙ্গে সঙ্গে নির্দোষ বলে দাবি করার অভ্যাস অভিভাবকদের পরিত্যাগ করতে হবে। একটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে স্পর্শকতার মনে করে জনস্বার্থে কাজে লাগাতে হবে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যাক্তি বা দলীয় স্বার্থে কাজে লাগালে জাতীয় স্বার্থ বিলিন হওয়ার আশংকা থাকে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করলে পরিস্থিতি হিতে বিপরীত হবে এটি পরিস্কার। কারণ, যাকে আপনি নিজের কাজে ব্যবহার করেছেন, তাকে তার কাজ করার সূযোগ দিতে হবে এটিই স্বাভাবিক।

১৯৯০ এর পর যদি বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়ে থাকে তবে রাজনৈতিক দল গুলো কখন কোন জাতীয় ইস্যুতে একমত পোষন করেছে জনগন ভালো জানেন। ক্ষমতায় থাকা আর আসার জন্য গনতন্ত্রের পোষাক পড়ে রাষ্ট্রের মালিক জনগনের ভোটের অধিকার হরণ এমনকি হত্যা করার সংস্কৃতি কোন গনতন্ত্র! আমাদের জানা নেই। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে মানুষকে পুঁড়িয়ে মারা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে কোন গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হচ্ছে রাজনীতিকেরা ভালো বলতে পারবেন।

শুধু ক্ষমতার প্রয়োজনে প্রতিবেশী দুটি দেশের সঙ্গে আমাদের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল সখ্যতা গড়ে তোলেছে বলে যে অভিযোগ আছে তা এখন স্পষ্ট। যদি অভিযোগ পুরো সত্য বলে মনে করি, তবে ৪৩ বছর যাবৎ আমরা ঘরে বসে অলস জীবন যাপন করছি, এটি সত্য। দীর্ঘ সময় বিছানায় শুয়ে বসে সময় পার করার ফলে আমরা কতটুকু সুস্থ আছি তা পাঠকরাই ভালো জানেন।

সুতরাং বাস্তব পরিস্থিতি মূল্যায়নে আমরা শংকিত যে, যে কোন ধরণের আশংকা আমাদের ঘিরে ফেলছে। এখনো সময় আছে নিজের কাজ নিজে করার জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে পড়া। আর সকলে মিলে জাতীয় পতাকাকে সমুন্নত রাখা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *