বিদায়ী বছরে সরব বিচারাঙ্গন

Slider জাতীয় বাংলার আদালত

46993_alta

 

ঢাকা; নানা ঘটনায় ২০১৬ সালে উচ্চ আদালত ছিল আলোচনায়। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মামলা নিয়ে আদালত অবমাননাকর মন্তব্য করায় সরকারের দুই মন্ত্রীকে আদালত দণ্ড প্রদান, জাতীয় সংসদের মাধ্যমে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় এবং এ নিয়ে সরকারের তরফে সমালোচনা, ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারায়  গ্রেপ্তার ও রিমান্ড বিষয়ে যুগান্তকারী রায় এবং এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশনা, আপিল বিভাগে জামায়াত নেতা নিজামী, মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা, বছরের শেষ দিকে ‘অধস্তন আদালতের বিচারকদের আচরণ ও শৃঙ্খলাবিধি খসড়া গেজেটে প্রকাশ করার প্রয়োজন নেই’ মর্মে প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের পর নতুন বছরের ১৫ই জানুয়ারির মধ্যে এ সংক্রান্ত গেজেট জারি করতে আইন মন্ত্রণালয়কে আপিল বিভাগের নির্দেশ এবং এ নিয়ে বিচার ও নির্বাহী বিভাগের টানাপড়েন ছিল আইন অঙ্গনে বছরের আলোচিত ঘটনা। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদা সংক্রান্ত ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’র এর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ এবং বছরের শেষ দিকে দীর্ঘ দিন বিনাবিচারে আটক কারাবন্দিদের জামিন ও তাদের বিচার দ্রত নিষ্পন্নের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশ প্রদান মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন  ছিল ২০১৬ সালে  বিচারালয়ে আলোচিত বিষয়।
আদালতের দণ্ড
‘দুই মন্ত্রী শপথভঙ্গ করেছেন’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেমের বিরুদ্ধে আপিলের রায়ের আগে চলতি বছরের ৫ই মার্চ রাজধানীর ধানমন্ডিতে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সমালোচনা করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে বিচারাঙ্গনসহ সারা দেশে আলোচনা, সমালোচনার ঝড় ওঠে। মন্ত্রিত্বের শপথ নিয়ে এই দুজন মন্ত্রীর এমন বক্তব্য অসাংবিধানিক এবং তা আইনসম্মত নয় বলে মন্তব্য করেন অনেকেই। পরে  আদালত অবমাননার অভিযোগে দুই মন্ত্রীকে তলব করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। শুনানি শেষে গত ২৭শে মার্চ দুই মন্ত্রীকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে সাতদিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ে বলা হয়, তারা (দুই মন্ত্রী) সংবিধান সমুন্নত রাখার যে শপথ নিয়েছেন তা লঙ্ঘন করেছেন। গত ১লা সেপ্টেম্বর এই মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। আলোচিত এই রায়ের পর দুই মন্ত্রীর স্বপদে বহাল থাকা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে সৃষ্টি হয় নানামুখী বিতর্ক। তবে, এখনও তারা স্বপদে বহাল রয়েছেন।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিল
‘সংসদের মাধ্যমে বিচারক অপসারণ ইতিহাসের দুর্ঘটনা’
বিদায়ী বছরের ৫ই মে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থেকে জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করা সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত রুলের শুনানি শেষে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল রায় ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পক্ষে রায় দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী রেজাউল হক। বেঞ্চের অন্য সদস্য বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ভিন্নমত পোষণ করেন। রায়ে আদালত উল্লেখ করেন সংসদের মাধ্যমে বিচারকগণের অপসারণ ‘ইতিহাসের দুর্ঘটনা’। বছরের আলোচিত এ রায়ের পর সংসদে এ রায়ের তীব্র সমালোচনা করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা।
৫৪ ও ১৬৭ ধারার যুগান্তকারী রায়
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বিশেষ নির্দেশনা
ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার ও ১৬৭ ধারায় রিমান্ড নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় গত ১০ই নভেম্বর। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ চার বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ওই দিন এ রায় প্রকাশিত হয়। এর আগে এ সংক্রান্ত রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে রায় দেন আপিল বিভাগ। কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ড নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের এ রায়কে যুগান্তকারী ও ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন আইনজ্ঞ, মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ। পূর্ণাঙ্গ রায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ম্যাজিস্ট্রেট, বিচারক ও ট্রাইব্যুনালের জন্য কিছু গাইড লাইন দেয়া হয়। যথাযথভাবে এসব নির্দেশনা পালন করতে পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং র‌্যাবের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ১০ দফা গাইড লাইনের নির্দেশনায় কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করা, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির স্বজনদের অবহিত করা, গ্রেপ্তারের কারণ ও অন্যান্য বিষয় লিপিবদ্ধ করতে হবে। এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির শরীরে যদি কোনো রকম ইনজুরির চিহ্ন পাওয়া যায় তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ওই ইনজুরির কারণ লিপিবদ্ধ করবেন এবং ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়াসহ  চিকিৎসকের কাছ থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করবেন। রায়ে ম্যাজিস্ট্রেট, বিচারক এবং ট্রাইব্যুনালের জন্যও গাইড লাইন দেয়া হয়। নির্দেশনায় বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে  কেউ মারা গেলে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী যদি দেখা যায় নির্যাতনের কারণে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন, তাহলে  অভিযোগের অপেক্ষা ছাড়াই সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন। ২০০৩ সালের ৭ই এপ্রিল হাইকোর্র্ট এক রায়ে ৫৪ ও ১৬৭ ধারার কিছু বিষয় সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে ঘোষণা করে। ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে প্রচলিত বিধি ছয় মাসের মধ্যে সংশোধন করার পাশাপাশি ওই ধারা সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয় সরকারকে। এ বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল গত ২৪শে মে খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্ট। ওই খারিজের রায়ই প্রকাশ হয় গত ১০ই নভেম্বর।
নিজামী, মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড আপিলে বহাল
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় চলতি বছরের ৬ই জানুয়ারি বহাল রাখেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগ নিজামীর আপিল আবেদন খারিজ করে ওই রায় দেন। পরে গত ১৫ই মার্চ নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এরপর রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (দণ্ড পুনর্বিবেচনা আবেদন) করেন নিজামী। শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগ গত ৫ই মে নিজামীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর ১১ই মে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এর আগে একাত্তরে মানবতাবিরোধী ও বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নিজামীকে ২০১৪ সালের ২৯শে অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া ফাঁসির রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগ চলতি বছরের ৮ই মার্চ মীর কাসেমের আপিল আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন। পরে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ (পুনর্বিবেচনার আবেদন) করেন তিনি। শুনানি শেষে গত ৩০শে আগস্ট প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগ মীর কাসেমের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। চলতি বছরের ৩রা মে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধি
‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রশ্নে কোনো আপস নয়’
নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলাবিধি সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আইন মন্ত্রণালয়কে কয়েক দফা সময় দেন। তবে, এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি না করায় ১২ই ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে সর্বোচ্চ আদালতে তলব করা হয়। তবে, এর আগের দিন ১১ই ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, অধস্তন আদালতের বিচারকগণের জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক প্রস্তাবিত আচরণ বিধি ও শৃঙ্খলা  বিধির খসড়া গেজেটে প্রকাশ করার প্রয়োজনীয়তা নেই মর্মে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সানুগ্রহ সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। প্রেসিডেন্টের এমন সিদ্ধান্তের পরদিনই তলব করা দুই সচিব আদালতে হাজির হন। এ সময় আপিল বিভাগ উষ্মা প্রকাশ করে এ বিষয়ে ‘রাষ্ট্রপতিকে ভুল বুঝানো হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে তারা কোনো ‘আপস’ করবেন না বলে জানিয়ে দেন আপিল বিভাগ। শুনানি শেষে ১৫ই জানুয়ারি বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশের জন্য আবারও সময় বেঁধে দেন আপিল বিভাগ। মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে অধস্তন আদালতের বিচারকদের আচরণ ও চাকরি বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায় তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থি বলে গত ২৮শে আগস্ট শুনানিতে উল্লেখ করেন আপিল বিভাগ। পরে ওই খসড়া সংশোধন করে সুপ্রিম কোর্ট তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একই সঙ্গে ৬ই নভেম্বরের মধ্যে তা চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন আকারে আদালতে উপস্থাপন করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়। ওই সময়ে প্রতিবেদন দাখিল না করায় ৭ই ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। ওই দিনও প্রতিবেদন দাখিল না করায় আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হককে ১২ই ডিসেম্বর (গতকাল) তলব করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগ।
সচিব ও জেলা জজদের পদমর্যাদা সমান
জেলা জজ ও সচিবদের পদমর্যাদা সমান করে রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) সংশোধনের চূড়ান্ত রায় গত ১০ই নভেম্বর প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এখন থেকে রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমে সচিবদের সঙ্গে জেলা জজরাও সমমর্যাদায় থাকবেন। এ ছাড়া অতিরিক্ত জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচার  বিভাগীয় সদস?্যদের অবস্থান হবে জেলা জজদের পরেই রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের ১৭ নম্বরে। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংক্রান্ত রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল নিষ্পত্তি করে সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ  বিচারপতির বেঞ্চ ২০১৫ সালের ১১ই জানুয়ারি  রায় ঘোষণা করেন। গত ১০ই নভেম্বর এর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এ রায়ে বলা হয়, সংবিধান যেহেতু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন, সেহেতু রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের শুরুতে সাংবিধানিক পদাধিকারীদের গুরুত্ব অনুসারে রাখতে হবে।
বিনাবিচারে দীর্ঘ দিন কারাবন্দিদের জামিন
মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত
বিনাবিচারে দীর্ঘ দিন কারাবন্দি বেশকজনকে বিদায়ী বছরের বিভিন্ন সময়ে জামিন এবং তাদের বেশকজনের মামলা দ্রুততম সময়ে নিষ্পন্ন করতে নির্দেশ দেন আদালত। যা বিদায়ী বছরের বিচারাঙ্গনের আলোচিত বিষয় ছিল। উচ্চ আদালতের এমন সিদ্ধান্তকে বিচারালয় সংশ্লিষ্টরা মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেন। এছাড়া বিদায়ী বছরের ২৬শে জুন গাজীপুর কারাগারে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত শতবর্ষী নারী অহিদুন্নেসা মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার কাছে। আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৮ই জুলাই মুক্তি পান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *