আগামী নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে: প্রধানমন্ত্রী

Slider জাতীয়

868b703f1b6c5cc04c99a0260a0336ea-pm

বাসস; দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আজ বৃহস্পতিবার দশম সংসদের ত্রয়োদশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিএনপি-জামায়াতের সময় দেশ দুর্নীতি-দুঃশাসনে ছেয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ওই সময় সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা হাওয়া ভবন খুলে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছিল। বর্তমান সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির মুখে ভোট চুরির অভিযোগের কথা মানায় না। বিএনপির আমলে মাগুরাসহ অনেক নির্বাচনে ভোট চুরির মহোৎসব দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। সর্বশেষ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মার্কা নির্বাচনও দেশের মানুষ দেখেছে। ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির কর্মকাণ্ডও দেশের মানুষ দেখেছে। তাই তাদের মুখে ভোট চুরির অভিযোগ মানায় না। তারা ভুয়া ভোটার করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল, কিন্তু দেশের মানুষের আন্দোলনের মুখে তারা টিকতে পারেনি। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী আত্মত্যাগ করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক। রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি যেভাবে চাইবেন, সেভাবেই নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই।’ তিনি বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর জন্য খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ২০১৪ সালে নির্বাচনে অংশ না নেওয়া ছিল বিএনপির ভুল সিদ্ধান্ত। এ জন্য দেশের মানুষ কেন ভুক্তভোগী হবেন।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীসহ মুক্তিযুদ্ধে সব শহীদ হত্যার বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়া হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে এই বিচার বন্ধ করে দেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের পরিবর্তে পুরস্কৃত করেছেন। আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে সক্ষম হয়েছি।’ তিনি বলেন, ২১ আগস্টসহ বিভিন্ন সময়ে দেশে সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে। দেশ যাতে চিরতরে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত হয়ে উন্নয়নের দিকে ধাবিত হয় এবং জঙ্গিবাদ সাম্প্রদায়িক শক্তি যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে, এ ব্যাপারে সব সময় সরকার সতর্ক রয়েছে। এ জন্য দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারের নির্যাতিত মানুষকে মানবতার কারণে এ দেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনার জন্য যারা দায়ী, যারা মিয়ানমার বর্ডার পুলিশ ও সেনাবাহিনী সদস্যদের হত্যা করেছে। এদের মধ্যে যদি কেউ এ দেশে এসে থাকে, এদের গ্রেপ্তার করে সেই দেশের সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এদের স্থান বাংলাদেশের মাটিতে হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হবে। ইতিমধ্যে আটটির স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। চীন, জাপানসহ বিভিন্ন দেশ এসব অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, কৃষক, শ্রমিক মেহনতি মানুষের কল্যাণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে উপনীত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *