সম্পাদকীয়; নারায়নগঞ্জে নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু!

Slider জাতীয় টপ নিউজ

15139235_616374958565649_46610512_n

রাষ্ট্রের টাকা  খরচ করে ও জনবল ব্যবহার করে একটি নির্বাচন করা হয় গনতন্ত্রের প্রয়োজনে। কিন্তু আমাদের শেষ এক যুগের ইতিহাসও বলছে, ভোটের নামে জনগনের অধিকার প্রয়োগও ছেলে খেলা মাত্র। বিএনপি ও আওয়ামীলীগ  নিজেদের নিয়ন্ত্রনে যে সকল নির্বাচন করছে তাতে জনগনের মতামতের প্রতিফলন ঘটে নি। ভোটের নামে স্বহিংসতা, ভোটার  খুন, ভোট কেন্দ্রে আগুন,  প্রার্থী খুন, ভোট গ্রহন কর্মকর্তা খুন, শিশু কিশোর খুন, ভোটার যাওয়ার আগে ও পরে অন্য লোক কর্তৃক ভোট প্রয়োগ, সিল মারা অবস্থায় ভোট গ্রহনকারী আটক, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, কেন্দ্র লুট ও ভোটের পরেও সিল মারা ব্যালট উদ্ধার এখন সংস্কৃতি হয়ে গেছে। এ গুলো ছাড়াও  বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় পাশের রেকর্ড সকল অতীতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিয়েছে। সুতরাং যে ভোটে জনগনের মতামতের প্রতিফলন ঘটে না সে ভোট গনতন্ত্রের জন্য কি কোন প্রয়োজন আছে?

ইতিহাস বলছে, আওয়ামীলীগের অধীন যতগুলো নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে অধিকাংশ নির্বাচনেই বিএনপি অংশ গ্রহন করেছে। জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন না করলেও স্থানীয় সরকারে অংশ গ্রহন করেছে। এটা ভাল লক্ষন । কিন্তু বিগত মেয়র নির্বাচন গুলোর মধ্যে বিএনপি সমর্থিত বিজয়ী কোন মেয়র চেয়ারে থাকতে পারেননি। অনেক মেয়র কারাগারেই দিন কাটাচ্ছেন মেয়র হওয়ার কারণে। এরমধ্যে গাজীপুর সিটির মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান দুইবার সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। প্রায় ৩০ মামলার আসামী হয়ে এখনও কারাগারেই আছেন তিনি। ইতোমধ্যে এম এ  মান্নানের পরিবার ও তার দল  সাংবাদিক সম্মেলনে  কারাগারে গুরুতর অসুস্থ মান্নানের  জীবন রক্ষার দাবি করে জামিনে মুক্তি চেয়েছেন।

নির্বাচিত হয়েও যেহেতু চেয়ারে থাকা যায় না সেহেতু এই নির্বাচনের প্রয়োজন কি? ভোট দিলেও যেহেতু মতামতের প্রতিফলন নেই তাহলে কেন ভোট অনুষ্ঠিত হতে হবে?  কাজেই ভোটের নামে রাষ্ট্রীয় ও জনগনের জানমালকে হুমকির মধ্যে রাখা সরকারের উচিত! সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় নিজেদের মধ্যে আপোষমিমাংসা করে বিনা  প্রতিদ্বন্ধিতায় পাশের সংস্কৃতি আরেকটু বেগবান করলে রাষ্ট্র উপকৃত হয়।

পরিশেষে বলা যায়, আসন্ন নারায়নগঞ্জ সিটিকরপোরেশন নির্বাচনে বর্তমান মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী দলীয় মনোনয়নে নৌকা পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্ধী বিএনপির প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার বলে শোনা যাচ্ছে। গত নির্বাচনে নৌকার বিপরীতে আইভী বিপুট ভোটে পাশ করেছেন। এবার তিনি নৌকা পেয়েছেন ও তার বিদ্রাহী প্রার্থী থাকার সম্ভাবনাও কম। এ ছাড়া তৈমূর আলম খন্দকার নির্বাচন করলেও আগের দিন তাকে নির্বাচন বয়কট করতে হয়।  এটা ভেবেই তিনি এবার প্রার্থী হতে চাচ্ছেন না বলে খবরও বেরিয়েছে।

সুতরাং জনপ্রিয়তা, সরকারী দলের প্রতীক, বিদ্রাহী প্রার্থী না থাকা ও চলমান নির্বাচনী সংস্কৃতিই বলে দিচ্ছে নাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে তেমন কোন প্রতিদ্বন্ধিতা হচ্ছে না। এই অবস্থায় রাষ্ট্রের লাভ হচ্ছে, কমপক্ষে মেয়র পদটি যেন বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় চলে যায়। তবে জান ও মালের ঝুঁকিও অনেকটা কমতে পারে। এমনটি হলে সবচেয়ে উপকৃত হবে রাষ্ট্র ও জনগন।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *