আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ দেখতে চায় ইইউ

Slider সারাদেশ

40769_eus

কূটনৈতিক রিপোর্টার; বাংলাদেশে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন দেখতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ঢাকা সফররত ইউরোপীয় পার্লামেন্ট (ইপি) প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আজ তাদের আগ্রহের বিষয়টি স্পষ্ট করেন। আসন্ন নির্বাচনে জনগণ যাতে পূর্ণ আস্থা ও ভরসা পায় এমন একটি নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচনের আগে ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ’ সৃষ্টির আহ্বানও জানান তারা। প্রতিনিধিদলের প্রধান ট্রেড বার্নড ল্যাং তাদের চারদিনের বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সন্ধ্যায় ইইউ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জ্যঁ ল্যাম্বার্টও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ল্যম্বার্ট বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন অবশ্যই সবার অংশগ্রহণে হতে হবে। নির্বাচনে সবার অংশ নেয়ার মত পরিবেশ জরুরি। নির্বাচনী প্রচারেও সবার অংশ নেয়ার পরিস্থিতি থাকতে হবে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, শ্রম প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে তাদের। বিদায়ের আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গেও সাক্ষাৎ হওয়ার সূচী রয়েছে। প্রতিনিধি দলের প্রধান বলেন, জনগণ পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারে এমন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার মতো সক্ষম হতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে উপযুক্ত গণতান্ত্রিক একটি পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে জোর দেন তিনি। ল্যাং বলেন, ‘এটা (আগামী সাধারণ নির্বাচন) অবশ্যই উপযুক্ত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হতে হবে।’ নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য তিনি সরকারকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের পরামর্শ দেন। দেশের অর্থনৈতিক খাতের উন্নয়নের প্রশংসা করে তিনি বলেন, মৌলিক মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শ্রমিক অধিকারকে কখনো সংকুচিত করা যাবে না। তিনি বলেন, ‘আগামী মাস ও বছরগুলোতে এসব বিষয়ে আরো উন্নতি করতে হবে।’ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বার্নড ল্যাং বলেন, এটি এখন স্থিতিশীল রয়েছে। বাংলাদেশ ক্রমেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে নির্বাচন কমিশন পূণর্গঠন নিয়ে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অবশ্যই নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনে হওয়া উচিত। নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে ইইউ’র কোনও সুপারিশ আছে কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ইপি প্রতিনিধি দলের প্রধান বলেন, এখানে সাংবিধানিক একটা প্রক্রিয়া আছে। ইউরোপে সাধারনত সব দলের বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। নির্বাচন কমিশন এমনভাবে হওয়া উচিত যাতে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জ্যঁ ল্যাম্বার্টও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর জোর দেন। বলেন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খেয়াল রাখতে হবে নিরাপত্তার লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপও যেন মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব না করে। চার দিনের সফরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল গত ১৪ নভেম্বর  ঢাকায় আসে। আজ ছিল তাদের সফরের শেষ দিন।

উন্নয়নশীল দেশ হলে ইইউ’র জিএসপি প্লাস সুবিধা পাবে বাংলাদেশ- তোফায়েল: এদিকে দুপুরে ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আশা প্রকাশ করেন- বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে বাণিজ্য ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএসপি প্লাস সুবিধা পাবে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিটির প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের দ্রুত উন্নয়নের প্রশংসা করে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার শর্তসাপেক্ষে বাণিজ্য ক্ষেত্রে জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রদানে সহায়তার আশ্বাস দেয়। তবে এ ক্ষেত্রে ২৭টি কনভেনশন অনুসরণ করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও তারা গুরুত্ব প্রদান করে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় ওই বৈঠক হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *