কুড়িগ্রামঃ রেল যোগাযোগ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হবে কি?

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

train-rail

এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন, রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ  আনুমানিক ১৮৭০ সালে তিস্তা-রমনা বাজার (চিলমারী) রুটে রেললাইন তৈরি করা হয়, যার দূরত্ব ৩৪.৫০ মাইল। নব্বইয়ের আগে পার্বতীপুর–রমনা রুটে চারটি ট্রেন চলাচল করত। তারপর বিশ্বব্যাংকসহ বিদেশিদের পরামর্শে ট্রেন উঠিয়ে নিয়ে মাত্র একটি ট্রেন রাখা হয়। পরে সেই একটি ট্রেন অনিয়মিত হয়ে যায় এবং রেলকে বারবার অকার্যকর করার চেষ্টা চলতে থাকে।

নব্বইয়ের পর থেকে জনসংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। সেই অনুপাতে ট্রেন চলাচলের কথা আট থেকে ১২টি। কিন্তু বর্তমানে একটা ট্রেন দুবার চালানো হচ্ছে। পার্বতীপুর-রমনা বাজার রুটে গত ১৭ বছর টিকেট চেকার ছাড়াই চলছে ট্রেন। রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি, কুড়িগ্রাম নিজ উদ্যোগেই রমনা ট্রেনের যাত্রীদের টিকেট কেটে রেলপথে ভ্রমণে সচেতন করে আসছে।

রেল কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার জানানো হলেও রেলের লোকবল সংকটের কারণে এ সমস্যা সমাধান করতে পারেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে। রেলওয়ের উন্নয়নে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন, রেল বাজেট বৃদ্ধি, রেললাইন, লোকোমোটিভ ও কোচ বৃদ্ধিসহ হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এর তেমন সুফল পায়নি কুড়িগ্রামবাসী।

ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী পর্যন্ত ‘ভাওয়াইয়া এক্সপ্রেস’ নামে একটা আন্তনগর ট্রেন চালুর জন্য কুড়িগ্রামবাসী দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। রেলমন্ত্রীর আশ্বাসের দুই বছর পার হয়ে গেলেও আন্তনগর ট্রেন চালুর জন্য দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। বাংলাদেশ রেলওয়ের চলমান ২০১৬-২০১৭ উন্নয়ন প্রকল্পের তালিকায় কুড়িগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প চোখে পড়েনি। প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সফরে কুড়িগ্রামবাসীকে রেল যোগাযোগ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাঁর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া বেগবান করবে বলে আশা করি। যদিও এরই মধ্যে বেশ কিছুদিন পার হয়ে গেছে।

২. বাংলাদেশ রেলওয়ের একে একে ১৫৫ বছরে পা রাখল বাংলাদেশ রেলওয়ে। ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর দর্শনা থেকে জগতি পর্যন্ত ৫৩ দশমিক ১১ কিলোমিটার ব্রডগেজ লাইন চালুর মাধ্যমে দেশে রেলওয়ের যাত্রা হয়। ১৫৫ বছরে বাংলাদেশ রেলওয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।

নিরাপদ, জ্বালানি সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং সর্বোপরি যানজট নিরসনে রেলের অবদান অনস্বীকার্য বিধায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে পরিবহন ব্যবস্থায় রেলকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। বাংলাদেশেও রেলের আছে অমিত সম্ভাবনা। এ দেশে রেলের সোনালি যুগের সূচনা করা সম্ভব। রেল খাতের উন্নয়নের মাধ্যমেই এ দেশে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে সমৃদ্ধি আনয়ন এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব।

লেখক : সহ-সমন্বয়ক, রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি, কুড়িগ্রাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *