গ্রাম বাংলা ডেস্ক: বিয়ের সময় তোলা ছবিতে ওয়াহিদ ও তাহসিননাট্যনির্মাতা ওয়াহিদ আনাম ও লাক্স তারকাখ্যাত অভিনয়শিল্পী সিফাত-ই তাহসিনের দাম্পত্যের ভাঙন এখন সময়ের ব্যাপার । প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে নিজেদের বিচ্ছেদের পথ বেছে নেওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছেন ওয়াহিদ এবং তাহসিন দুজনই। উভয়ের পরিবারের অভিভাবকদের সম্মতিতে কিছুদিনের মধ্যে বিচ্ছেদপ্রক্রিয়ার কাজ শুরু হবে। আড়াই বছরের মাথায় ভেঙে যাচ্ছে এই দম্পতির সংসারজীবন।
এ ব্যাপারে তাহসিন বলেন, ‘বিয়ে করার সময় ওয়াহিদ আমাকে নাটকে অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে। সে জানায়, তার সঙ্গে সংসার করলে নাটক করা যাবে না। আমি যেহেতু তাকে ভালোবাসি, তাই নাটকে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসি। বিয়ে করে সুখী হতে চেয়েছি। কিন্তু তা আর হলো কই?’
বিষয়টি অস্বীকার করে ওয়াহিদ বলেন, ‘আমি চাইনি তাহসিন অভিনয় ছেড়ে দিক। আমি বরং তাঁকে অভিনয়ের ব্যাপারে আরও উৎসাহ দিতাম। কিন্তু সে নিজেই নাটকে অভিনয়ে আগ্রহী ছিল না।’
তাহসিন জানান, বিয়ের কিছুদিন পরই ওয়াহিদ ও তাঁর মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। একটা পর্যায়ে তা চরম আকার ধারণ করে। আর তা ঝগড়া ও হাতাহাতি পর্যন্ত গড়াত। তিনি বলেন, ‘বিয়ের পর আমাদের দুজনের জীবনযাপনে অনেক ছন্দপতন ঘটে। নাটকের শুটিং ও অন্যান্য কাজকর্মের ব্যস্ততার কারণে ওয়াহিদ প্রায় দিনই গভীর রাতে বাড়ি ফিরত। বিষয়টা একটা পর্যায়ে নিয়মে পরিণত হয়। এদিকে উত্তরার বাসায় আমাকে একাই থাকতে হতো। আর ওয়াহিদ আমাকে সন্দেহ করা শুরু করে। সবকিছু মিলে আমাদের মধ্যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়। বিষয়গুলো নিয়ে দুজনের মধ্যে প্রায়ই কথা–কাটাকাটি হতো। একপর্যায়ে ওয়াহিদ আমার গায়েও হাত তুলত। ব্যাপারটি চরম আকার ধারণ করায় ছয়-সাত মাস ধরে আমরা দুজন আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিই।’
এ ব্যাপারে ওয়াহিদ বলেন, ‘দুজনের মধ্যে ঝগড়া হতো ঠিকই। কিন্তু গায়ে হাত তুলতাম না। রাগারাগির একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কিকে সে গায়ে হাত তুলেছি বলে চালানোর চেষ্টা করছে। তবে আমাদের মধ্যে যখন বনিবনা হচ্ছিল না, তখন দুজন মিলে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা সত্য।’
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ছয়–সাত মাস ধরে ওয়াহিদ ও তাহসিন আলাদা থাকলেও সম্প্রতি তাঁরা দুজন আবার এক হওয়ার চেষ্টা করেন। তাই শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে বরিশালে ঈদ করতে তাহসিনকে সঙ্গে নিয়ে যান ওয়াহিদ। কিন্তু বনিবনা হওয়া তো দূরের কথা, ১২ অক্টোবর দুজনের মধ্যে নতুন করে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে ওয়াহিদ গায়ে হাত তোলেন বলে দাবি করেন তাহসিন। এতে আঘাতপ্রাপ্ত হন তিনি। আর তাই বাধ্য হয়ে বরিশাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে হয় তাহসিনকে। পরে তাহসিনের মা ঢাকা থেকে বরিশাল গিয়ে মেয়েকে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। মা–বাবার সঙ্গে তিনি এখন ঢাকায় মিরপুরের বাসায় আছেন।
১২ অক্টোবরের ঘটনা প্রসঙ্গে ওয়াহিদ বলেন, ‘আমি নানাভাবে তাহসিনকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে আর কোনোভাবেই সংসার করতে রাজি নয়। কথা বলার একপর্যায়ে আমরা দুজনই উত্তেজিত হয়ে যাই। রাগারাগির এক পর্যায়ে ধাক্কা দিলে সে কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো তেমন কিছুই ঘটেনি।’
ভার্সিটি নামের একটি ধারাবাহিক নাটকের শুটিং করতে গিয়ে নির্মাতা ওয়াহিদ আনামের সঙ্গে পরিচয় ঘটে তাহসিনের। এরপর কুয়াকাটায় কিনার টেলিছবির কাজ করতে গিয়ে ওয়াহিদ তাঁর পরিবারের সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন তাহসিনকে। অবশেষে ২০১২ সালের ৬ মে তাঁদের আকদ সম্পন্ন হয়। আর ১২ মে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাহসিনকে ঘরে তোলেন ওয়াহিদ।
নির্মাতা ওয়াহিদের সঙ্গে মডেল ও অভিনেত্রী তাহসিনের প্রথম বিয়ে হয়। তবে এটি ছিল ওয়াহিদ আনামের দ্বিতীয় বিয়ে।