দিনাজপুর সীমান্তে ভারতীয় মেছো বাঘের উপদ্রপ ॥ আহত ৫০

Slider সারাদেশ

pic-dinajpur-1

রবিউল ইসলাম, দিনাজপুর প্রতিনিধি দিনাজপুরে ভারত থেকে আসা মেছো বাঘের উপদ্রপে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। বাঘের কামড়ে আহত ১ জন দিনাজপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়া আহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৪ জন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে এনটিরেভিস বা জলাতঙ্ক প্রতিরোধক ভ্যাকসিন নিয়েছেন।

বাঘের আতঙ্কে ভারতের সীমান্তবর্তী দিনাজপুর সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মানুষ রাতে ঘুমাতে পারছে না। এলাকাবাসী পর্যায়ক্রমে রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিচ্ছে। দিনেরবেলা নারী, শিশু, পুরুষ সবাই হাতে লাঠি নিয়ে চলাফেরা করছেন। যাদের পাকা বা কাঁচা বাড়ি নেই তারা টিন, চেকারের বাড়ি ছেড়ে ইটের পাকা বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। অন্যদিকে বাঘ ধরতে গ্রামে গ্রামে বন বিভাগ ফাঁদ হিসেবে খাঁচা স্থাপন করেছেন। গ্রামের মানুষ ছাগল ও হাঁস-মুরগি এনে খাঁচায় দিয়েছে বাঘ শিকারের জন্য।

সদর উপজেলার ৬নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ১নং ওর্য়াডের মেম্বার মোঃ ইলিয়াস হোসেন জানান, ভারত থেকে আসা মেছো বাঘটি ৬-৭ দিন আগে ১০নং কমলপুর ইউনিয়নে দেখা যায়। এরপর ওই এলাকার প্রায় ১৫ জনকে আহত করে। এরপর ৭নং উথরাইল, ৮নং শংকরপুর ও ৯নং আশকরপুর থেকে উলিপুর হয়ে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের লালদীঘি এলাকায় চলে যায় বাঘটি। সেখানে আমন ক্ষেতে ধান ও ঘাস কাটতে যাওয়া কয়েকজনকে আহত করে। বাঘের কামড়ে আহত হয়ে জান্নাত আরা (২০) নামে এক নারী দিনাজপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরপর হরিহরপুর, হঠাৎপাড়া, ডাবরপাড়া ও শাহাপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে ধান ক্ষেতে ঘাষ কাটতে ও ধান ক্ষেতে বিষ ছিটাতে গিয়ে মেছো বাঘের কবলে পড়ে কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে হাসিবুদ্দিন (৩৫), সনিয়া (২০), মুক্তার (৩০), জেসমিন(২৫), নুরজাহান(২২), মোকসেদা (৩০), সোহরাব (২৪), আলী টিপু, রাবেয়া বেগম, আজগার আলীসহ ২৪ জন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে এনটিরেভিস বা জলাতঙ্ক প্রতিরোধক ভ্যাকসিন নিয়েছে।

আউলিয়াপুর ইউনিয়নের নারী সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন জানান, বাঘের ভয়ে গ্রামের মানুষ কেউ ধানক্ষেতে যেতে পারছে না। মানুষ গরু-ছাগলকে ঘাষ কেটে খাওয়াতে পারছে না। গ্রামের লোক সারাদিন লাঠি নিয়ে বাঘ মারার জন্য খুঁজে বেড়াচ্ছে। আক্রমণ থেকে বাঁচতে রাতে গ্রাম পাহারা দিচ্ছে তারা। ধান ক্ষেতের ধারে বন বিভাগ ফাঁদ হিসেবে লোহার খাঁচা স্থাপন করেছে। খাঁচার ভেতরে ছাগল ও মুরগি দিয়ে রশি বেঁধে দরজা খুলে রেখে দূরে বসে রয়েছে মানুষ।

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি রেদওয়ানুর রহিম বলেন, আমরা ঘটনাটি জানি। পুলিশ ওই এলাকায় কয়েক দফায় গিয়ে কোনো বাঘ দেখতে পায়নি। তবে আমরা খোঁজখবর রাখছি। বন বিভাগের কর্মকর্তা একেএম আব্দুস সালাম তুহিন জানান, গ্রামবাসীর বর্ণনা মতে এটি বাগডাস প্রজাতির হতে পারে। খাবারের সন্ধানে এগুলো ধানক্ষেতে চলে আসতে পারে। এখানে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ওই জন্তুগুলোকে আটক করতে ফাঁদ বসানো হয়েছে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *