চট্টগ্রামে দুই ডিবি পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত

গ্রাম বাংলা জাতীয়

28453_ctg

 চট্টগ্রাম; শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের অভিযোগে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এক উপপরিদর্শকসহ (এসআই) দুই পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তাঁরা হলেন উপপরিদর্শক (এসআই) উজ্জ্বল কান্তি দাশ ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আনিসুর রহমান।
আজ সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহার এ আদেশ দেন। বরখাস্ত হওয়া দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অস্ত্র বিক্রির ফাঁদ পেতে টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। ওই কাজ করতে গিয়েই র‍্যাবের হাতে ধরাও পড়েন তাঁরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরের নিউমার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটলেও পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে।চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহার  বলেন, ‘শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের অভিযোগে দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি আরও তদন্ত করা হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা শিগগিরই জানানো হবে।’

জানতে চাইলে আজ বিকেলে অভিযুক্ত উজ্জ্বল কান্তি দাশ তাঁর মানসিক অবস্থা ভালো নেই জানিয়ে বলেন, শুনেছেন তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অস্ত্র বিক্রির ফাঁদ পেতে টাকা আদায়ের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

অভিযুক্ত এএসআই আনিসুর রহমান আজ সন্ধ্যায় বলেন, ‘অস্ত্র উদ্ধার করতে সেদিন নিউমার্কেট এলাকায় গিয়েছিলাম।’ কামরুল, দিদার ও তপন—এরা কারা, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একজন (তপন) এসআই উজ্জ্বলের আত্মীয়। বাকি দুজন সোর্স।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১২টি গুলিসহ একটি নাইন এমএম পিস্তলের ক্রেতা সেজে র‍্যাব-৭–এর একটি দল গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানার নিউমার্কেট এলাকায় আসে। ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দামও নির্ধারণ হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি রেস্টুরেন্টে র‍্যাব সদস্যরা অবস্থান নেন। অস্ত্র বিক্রেতাদের পক্ষ থেকে কামরুল ও দিদার নামের দুই ব্যক্তিও আসেন। রাত ১০টার দিকে একটি কালো ব্যাগ নিয়ে নিজেকে তপন কান্তি দে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি আসেন। তিনি ব্যাগ থেকে অস্ত্র ও গুলি বের করে ছদ্মবেশে থাকা র‍্যাব সদস্যদের দেখান। র‍্যাব সদস্যরা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা তপনের হাতে তুলে দিয়ে অস্ত্র–গুলি বুঝে নেন। কিছুক্ষণ পর র‍্যাব সদস্যরা নিজেদের আসল পরিচয় দেন। তখন সেখানে দুই ব্যক্তি হাজির হয়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেন। তাঁরা র‍্যাব সদস্যদের চ্যালেঞ্জ করেন। তপনকে ছেড়ে দিতে বলেন। এ সময় র‍্যাব তাঁদেরও গ্রেপ্তারের হুমকি দেন। উজ্জ্বল বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের না জানাতে অনুরোধ করেন। তিনি র‍্যাবকে জানান, তাঁর সঙ্গে থাকা আনিসুর ডিবির এএসআই। অস্ত্রটি তাঁর নামে ইস্যু করা। তাঁরা মূলত সোর্সের মাধ্যমে অস্ত্র বিক্রেতা সেজে ক্রেতার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা নেওয়ার পর নিজেদের আসল পরিচয় দিয়ে লোকজনকে গ্রেপ্তারের ভয় দেখান। এবারও একই পরিকল্পনা করে র‍্যাব সদস্যদের ফাঁদে পড়ে যান। পরে র‍্যাব সদস্যরা এসআই উজ্জ্বলসহ পাঁচজনকে নগর ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

জানতে চাইলে আজ র‍্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, কিছু একটা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *