পুরুষেরাও নির্যাতনের শিকার কি না, দেখতে হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

887b338244a8ed5f6d739ce08372b6a4-33

 ঢাকা; পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এখন পর্যন্ত নারী নির্যাতন নিয়ে আলাদা করে জরিপ হচ্ছে। কিন্তু পুরুষেরাও নির্যাতনের শিকার হয় কি না, তা-ও দেখতে হবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পরবর্তী জরিপ করতে হবে নারী ও পুরুষের নির্যাতন নিয়ে।
আজ রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বিবিএসের ‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন (ভাউ) সার্ভে ২০১৫’ শীর্ষক জরিপের প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আগে মেয়েসন্তান হলে ছেলেসন্তানের জন্য পুরুষেরা একাধিক বিয়ে করতেন। এখন মেয়েসন্তানের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। এখন নারী উপার্জন করছে। শিক্ষার হার বাড়ার সঙ্গে নারী নির্যাতন কমার সম্পর্ক আছে। সারা দেশে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। শুধু নারীদের নয়, পুরুষদেরও সচেতন করতে হবে।

জরিপ মতে, শারীরিক নির্যাতন ছাড়া দেশে সার্বিকভাবে নারী নির্যাতনের হার কমেছে। বর্তমানে বিবাহিত নারীদের ৮০ দশমিক ২ শতাংশ কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার। বিবিএস এবার দ্বিতীয়বারের মতো জরিপ করল। এর আগে ২০১১ সালে প্রথম জরিপ পরিচালনা করে। প্রথম জরিপ মতে, বিবাহিত নারীদের ৮৭ দশমিক ১ শতাংশ কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার ছিল।

স্বামী বা যেকোনো সঙ্গীর দ্বারা নির্যাতনের হারও কমেছে। আগে এ হার ছিল ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এখন তা ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ। এদের মধ্যে সঙ্গীর নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণের কারণে নির্যাতনের শিকার ১৫ শতাংশ।

শারীরিক, যৌন, অর্থনৈতিক, নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ এবং আবেগীয় নির্যাতনকে জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জরিপে ২১ হাজার ৭৭৫ জন নারীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। মাঠপর্যায়ে ২০১৫ সালের ১৩ থেকে ২২ আগস্ট তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে জরিপের বিভিন্ন ফলাফল উপস্থাপন করেন বিবিএসের জরিপের সমন্বয়ক জাহিদুল হক সরদার। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিসহ অন্য অতিথিরা প্রতিবেদনটির আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, নারী নির্যাতনের হার ধীরে ধীরে কমছে। তবে এতে খুশি হওয়ার কারণ নেই। শিক্ষা ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন না হলে পুরুষ নারীকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালায়। নারী নির্যাতন কমানো সম্ভব না হলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ। আলোচনায় অংশ নেন পরিসংখ্যান এবং তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কে এম মোজাম্মেল হক, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) প্রতিনিধি আর্জেন্টিনা মাতাভেল পিচ্চিন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর এবং হেড অব ডেলিগেশন প্রধান পিয়েরে মায়াদোঁ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *