স্মার্টকার্ডের তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন : প্রধানমন্ত্রী

Slider তথ্যপ্রযুক্তি

76121e8b92822f2c9bdba7d214383fea-pm

বাসস; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যত ধরনের নতুন প্রযুক্তি রয়েছে, গ্রহণ করা হবে। তবে তার ফায়ারওয়াল থাকতে হবে। তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ইসি ও সংশ্লিষ্ট স্মার্টকার্ড প্রদানকারী কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের মাধ্যমে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ এই স্মার্টকার্ড রাষ্ট্রপতিকে পৌঁছে দেবেন। এরপর সিইসি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তাঁর স্মার্টকার্ড তুলে দেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অনুষ্ঠানের শুরুতে মঞ্চে গিয়ে ১০ আঙুলের ছাপ দেন এবং স্মার্টকার্ড সংগ্রহে চোখের স্ক্যানিং করান।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিজয়ী বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান এবং তাঁদের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেন।

বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক এবং বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় পরিচালিত এই স্মার্টকার্ড প্রকল্পের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুস্তাফিজুর রহমান, সাব্বির রহমান, তাসকিন আহমেদ, সৌম্য সরকার, নাসির হোসেইন, ইমরুল কায়েস ও তাজুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে তাঁদের স্মার্টকার্ড গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই উন্নত কার্ডই সব রকম সেবা দেবে। ঘরে বসেই এখন অনেক কিছু করা সম্ভব হবে, যার সহায়ক হবে এই স্মার্টকার্ড। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তব। এই কার্ড প্রদানের মাধ্যমে আরেকটি নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণ হলো। তিনি আরও বলেন, অনেক প্রযুক্তি আছে, সেসব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এই কার্ডের তথ্যের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। কেউ যেন তথ্য ব্যবহার করে কোনো অপরাধ করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ এবং বিশ্বব্যাংকের এ দেশীয় প্রতিনিধি কিমিয়াও ফ্যান। অনুষ্ঠানে ‘আইডেনটিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং এক্সেস টু সার্ভিস’ শীর্ষক এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন প্রকল্প সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করেন। ইসির সচিব সিরাজুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, এই কার্ড প্রদানের জন্য দেশের ১০ কোটি নাগরিকের তথ্য নিয়ে একটি তথ্যভান্ডার (ডেটাবেইস) তৈরি করা হয়েছে। এর আওতায় ২০১৭ সালের মধ্যে নয় কোটি নাগরিককে স্মার্টকার্ড দেওয়া হবে এবং এর মাধ্যমে বিদ্যমান পেপার লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র প্রতিস্থাপিত হবে।

সূত্র জানায়, বর্তমান বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে এটি তৈরি হয়েছে। জাতীয় পরিচয়ের তথ্যভান্ডার ও স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রত্যয়নকারী কর্তৃপক্ষের সনদপ্রাপ্ত। এটি ট্রাভেল কার্ডসহ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে বিবেচিত হবে। স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র নাগরিকদের শ্রেণি, বয়স, অবস্থা-অবস্থান ও পেশাভিত্তিক রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করবে।

সেবা প্রদানকারী সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনলাইন ও অফলাইন—উভয় পদ্ধতিতে নাগরিকদের পরিচিতি সঠিকভাবে যাচাই করতে পারবে। তথ্যভান্ডারে প্রবেশাধিকার লাভের মাধ্যমে অনলাইনে এবং অফলাইনে চিপ/এমআরজেড/বারকোড/ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানারের মাধ্যমে সহজেই স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যাদি যাচাই করা সম্ভব। ইতিমধ্যে সমঝোতা স্মারক সইয়ের মাধ্যমে ৬৪টি প্রতিষ্ঠান এর সেবা গ্রহণ শুরু করেছে বলে আজকের অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

আগামীকাল সোমবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড এবং উত্তরের ১ নম্বর ওয়ার্ড, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর জনগণ ও বিলুপ্ত ছিটমহলের অধিবাসীদের মধ্যে এই কার্ড বিতরণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *