তিন জেলায় তিনজন খুন

Slider জাতীয়

26127_ds

ডেস্ক রিপোর্ট: পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় গতকাল বুধবার জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আমির হোসেন দেওয়ান (৩২) নামে একজন নিহত হয়েছেন। একই দিন ভোলার লালমোহনে এক স্বামী তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে (৪৫) পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন। এ ছাড়া যশোরের অভয়নগর উপজেলায় চণ্ডীদাস হালদার (৫৪) নামের এক কৃষকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

পটুয়াখালী: দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চর হোসনাবাদ গ্রামের দেড় একর জমি নিয়ে মোমিন দেওয়ানের সঙ্গে সালাম হাওলাদার ও তাঁদের অংশীদারদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল সকাল নয়টার দিকে মোমিন দেওয়ান তাঁর লোকজন নিয়ে ক্রয়সূত্রে ওই জমির মালিকানা দাবি করে চাষাবাদ করতে যান। এ সময় প্রতিপক্ষ সালাম হাওলাদার লোকজন নিয়ে বাধা দেন এবং একপর্যায়ে দুই পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হন। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত আমির হোসেন দেওয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁদের মধ্যে মোমিন দেওয়ানকে (৬৫) বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য নিহত ব্যক্তির লাশ পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে খালেক হাওলাদার, বেলায়েত শিকদার ও আবুল বশার নামের তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলা: থানা-পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্র জানায়, লালমোহন উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে বাকলাই বাড়ির আবদুর রাজ্জাক (৬৫) দীর্ঘদিন যাবৎ মানসিক রোগী। এর আগে কয়েকবার তাঁর স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল বুধবার সকালে আবদুর রাজ্জাক তাঁর দুটি ছাগল নিয়ে বিলে ঘাস খাওয়াতে যান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রোদ উঠলে ছাগল দুটিকে পানিতে ডুবিয়ে মেরে ফেলেন। খবর পেয়ে তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম ও তাঁর ভাতিজার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আবদুর রাজ্জাক ফাতেমা বেগমকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় জান্নাতুল ফেরদৌস ডাক-চিৎকার দিলে লোকজন গিয়ে বাধা দেন। কিন্তু ততক্ষণে ফাতেমা বেগম মারা যান।
লালমোহন থানার ওসি হুনমায়ূন কবির জানান, আবদুর রাজ্জাককে আটক করা হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ভাই সফিমাল মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

যশোর: গতকাল বুধবার সকালে অভয়নগর উপজেলার দামুখালী গ্রামের বাগানের মধ্যে ছোট একটি গাছের নিচে চণ্ডীদাস হালদারের লাশ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী থানায় খবর দেন। পরে ভবদহ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। তাঁর বাড়ি উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে।

চণ্ডীদাস হালদারের মেয়ে কাকলি হালদার জানান, মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর মা ভবদহ স্লুইসগেটের পাশে হাটে যান। এ সময় তাঁর বাবা একাই বাড়িতে ছিলেন। বাড়ি ফিরে মা আর বাবাকে পাননি। এরপর থেকে বহু খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। গতকাল সকালে বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে দামুখালী গ্রামের স্কুলের পাশে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এরপর পরনের লুঙ্গি গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা বলে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে।’

অভয়নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দীন বলেন, ‘লাশের মুখের বাঁ পাশে এবং গলায় কালো দাগের চিহ্ন রয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *