হাসিনার প্রশংসা করলেন মুন-দেশাই

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ ঢাকা রাজনীতি সারাদেশ

968f427dbc913e9c46cae7a3d515e570-Untitled-1

গ্রাম বাংলা ডেস্ক: বান কি মুন ও নিশা দেশাইজাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনসহ বাংলাদেশের মিত্ররা বিশ্বশা‌ন্তি ও নিরাপত্তায় অসামান্য অবদান রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এ ছাড়াও তাঁরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ এবং বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করায় শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ গ্রহণের ৪০তম বার্ষিকী উপল‌ক্ষে আজ শনিবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এক উৎসবমুখর পরিবেশে তাঁরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা স্থাপনে আপনার ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’ খবর বাসসের।

বান কি মুন ছাড়াও জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব আমিরা হক, দ‌ক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল, রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী গেনাদি গাতিলোভ, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত পিটার ওয়েস্টম্যাকট, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিনোদ কুমার, ইউএনডিপির প্রশাসক হেলেন ক্লার্ক এবং ইউনেসকোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা বক্তব্য দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বান কি মুন বলেন, বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়নে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি লাভ করেছে। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করছি।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন খাতে অগ্রগতি অর্জন করায় আমি বাংলাদেশ ও এর জনগণকে আমার পক্ষÿথেকে বিশেষ অভিনন্দন জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়ে গেছে।

বান কি মুন আরও বলেন, ‘২০০৮ সালে আমরা বাংলাদেশের যে চিত্র দেখেছি ২০১১ সালে তার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে।’ তিনি জাতিসংঘ সনদের প্রতি প্রতিশ্রুতি ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। বান কি মুন আজ বাংলাদেশের জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভের ৪০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল বলেন, শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশের পরিণত হয়েছে।’

বিসওয়াল বলেন, একসময় বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সহায়তা চাইত, এখন বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা চাইছে।

ঢাকা ও ওয়াশিংটনের বন্ধুত্ব সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে নিশা দেসাই বিসওয়াল বলেন, এই সম্পর্ক সরকারের সঙ্গে সরকারের নয়, এই বন্ধুত্ব জনগণ থেকে জনগণে, নাগরিক থেকে নাগরিক এবং বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুর।

রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী গিনাদি গটিলভ বলেন, বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা বিধানে গঠনমূলক ভূমিকার জন্য তাঁর দেশ বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে আসছে। তিনি বলেন, বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তার উন্নয়নে শেখ হাসিনার আপসহীন নীতি বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার অবস্থান বিশ্বব্যাপী উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে।

রাশিয়া এবং ঢাকার মধ্যে গভীর সম্পর্কের কথা পুনর্ব্যক্ত করে গিনাদি গতিলভ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও রাশিয়ার বন্ধুত্ব সঠিক পথেই চলছে, এ জন্য আমরা সুখী।’ এ সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘে সব সময়ই রাশিয়া বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে পাশে রয়েছে।

ইউএনডিপির প্রশাসক হেলেন ক্লার্ক বলেন, মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ খুবই সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এসব সফলতা দেখে তিনি আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়েন বলে উল্লেখ করেন।

ইউনেসকোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে যে ঐতিহাসিক জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন, তা বিশ্বে আজ ইতিহাস হয়ে আছে। বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণের কথা স্বরণ করে তিনি বলেন, এই বিশ্বনেতা বাংলাদেশের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেছেন।

বক্তব্যের শুরুতে ইরিনা বোকোভা মিলনায়তনে উপস্থিত সবাইকে বাংলা ভাষায় শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে বলেন ‘শুভ অপরাহ্ণ’। তিনি বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে মেয়েশিশু ও নারীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভীষণ উন্নতি করেছে।

আমিরা হক জাতিসংঘের শা‌ন্তিরক্ষী বাহিনীর বিভিন্ন মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর অবদানে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করছে।
জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব শান্তি মিশনে কাজ করা বাংলাদেশের নারী পুলিশ সদস্যদের বাংলাদেশ সফরকালে দেওয়া গার্ড অব অনার প্রদানের কথা তিনি স্মরণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *