ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব

Slider ঢাকা সারাবিশ্ব

138611_170

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ভারতে গিয়ে বেলুচিস্তান প্রসঙ্গে মন্তব্য করায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক আহসানকে তলব করেছে। ১৯ আগস্ট রাতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া ও সার্ক বিভাগ) মোহাম্মদ ফয়সল বাংলাদেশের হাইকমিশনারের কাছে এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা গতকাল সোমবার বিকেলে  এ তথ্য জানান।

তলবের বিষয়ে জানতে গতকাল সন্ধ্যায় পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক আহসানের সঙ্গে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সমর্থন করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বেলুচিস্তান নিয়ে কেন মন্তব্য করলেন, সেটি ১৯ আগস্ট তারিক আহসানের কাছে জানতে চান মোহাম্মদ ফয়সল। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ওই মন্তব্য করে হাসানুল হক ইনু পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলিয়েছেন। এ সময় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাকে হাইকমিশনার জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। এ নিয়ে বাংলাদেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাকিস্তানের অবস্থানের বিষয়টি জানানো হবে।

গত সপ্তাহে দিল্লি সফরের সময় সেখানকার গণমাধ্যমকে হাসানুল হক ইনু বলেন, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রসঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি যা বলেছেন, তা তিনি সমর্থন করেন। ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসে দেওয়া ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, পাকিস্তানের প্রতি তাঁর সরকারের নীতিমালা কঠোর করা হয়েছে। পাকিস্তানের বেলুচিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দেশটিকে দায়ী করে মোদি বলেন, এসব এলাকার সমস্যার দিকে মনোনিবেশ ও পাকিস্তানকে হুঁশিয়ার করায় সেখানকার জনগণ তাঁকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। ভারতে সন্ত্রাসবাদে উসকানি দেওয়ার জন্যও ভাষণে ইসলামাবাদের দিকে আঙুল তোলেন মোদি।

এদিকে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, তথ্যমন্ত্রী বেলুচিস্তান সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, এ বিষয়ে সরকারের কোনো অবস্থান নেই। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো দেশের নাক গলানো যেমন সে দেশের সরকারের নীতি নয়, তেমনি কারও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাংলাদেশ কখনো হস্তক্ষেপ করে না। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে পাকিস্তান যেসব বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েছে, বাংলাদেশ কঠোরভাবে তার প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং পাকিস্তানকে এ নিয়ে সতর্ক করেছে। এর জের ধরে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েনও চলছে। জঙ্গিবাদে অর্থায়নে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের এক কূটনীতিককে প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে ইসলামাবাদ। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কূটনীতিককে প্রত্যাহার করতে বলে পাকিস্তান। পরে ওই কূটনীতিককে পর্তুগালে বদলি করে বাংলাদেশ।

ছয় বছর বিরতির পর আগামী ১ ও ২ সেপ্টেম্বর দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবেরা ঢাকায় বৈঠকে বসছেন। নভেম্বরে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *