বুরকিনি নিয়ে ফ্রান্সে সংঘর্ষ, অন্তঃসত্ত্বা সহ আহত ৫

Slider টপ নিউজ

file

 

মুসলিম নারীদের সাঁতারের বিশেষ পোশাক ‘বুরকিনি’কে কেন্দ্র করে ফ্রান্সের করসিকা সমুদ্র সৈকতে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে সেখানে বড় ধরনের এক সংঘর্ষও হয়ে গেছে। এতে এক অন্তঃসত্ত্বা সহ আহত হয়েছেন ৫ জন। তবে তাদেরকে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এর পর করসিকারয়ও নিষিদ্ধ করা হয়েছে বুরকিনি। বার্তা সংস্থা এএফপি, রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে ফ্রান্সের অনলাইন ফ্রান্স ২৪। উল্লেখ্য, বুরকিনি হলো সাঁতারের এমন একটি পোশাক যা পরলে নারীদের শুধু মুখাবয়ব ও হাত বাদে সারা শরীর ঢাকা থাকে। এ পোশাকটি এরই মধ্যে কান, মার্সেই’তে। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনাও হচ্ছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক মুসলিম। করসিকা সমুদ্র সৈকতে উত্তর আফ্রিকার তিনটি পরিবার গত শনিবার গিয়েছিল। এ সময় তাদের সঙ্গের নারী সদস্যারা বুরকিনি পরে পানিতে নামেন। সেই ছবি ধারণ করতে থাকে স্থানীয় কিছু যুবক। এ নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দেয়। প্রসিকিউটররা বলেছেন, ওই সংঘাত ছিল অত্যন্ত সহিংস। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, পর্যটক ওই পরিবারের নারীরা বুরকিনি পরে গোসল করছিলেন। এ সময় তাদের ছবি ধারণ নিয়ে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এর এক পর্যায়ে হাতুড়ি ও টেটা হাতে দেখা যায় কিছু লোককে। তারা ওই পর্যটকদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তঃসত্ত্বা এক নারী সহ আহত হন ৫ জন। তাদেরকে পরে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনা ঘটে আপার করসিকার সিসিকো নামের একটি গ্রামের কাছে। রোববার এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দ্বিতীয় দ্বীপ বাস্তিয়াতে। সেখানে লুপিনো জেলায় কয়েক শত করসিকান বিক্ষোভ করেন। এখানকার অধিবাসীদের বেশির ভাগই উত্তর আফ্রিকার সম্প্রদায়। ওই বিক্ষোভের সময় তারা সেøাগান দেন, এটা আমাদের নিজেদের বসত এলাকা। বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে একটি হাউজিং এস্টেটের দিকে এগিয়ে যান। ওই হাউজিং এস্টেটে হামলাকারীরা বসবাস করে। কিন্তু মিছিলটি স্থানীয় দাঙ্গা পুলিশ বাধা সৃষ্টি করে আটকে দেয়। করসিকায় ওই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বারনার্ড ক্যাজেনুভ। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ১৪ই জুলাই ফ্রান্সের নিস শহরে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালায় এক তিউনিশিয়ান। সে একটি ট্রাক উঠিয়ে দেয় জনতার ওপর। এতে কমপক্ষে ৮৫ জন নিহত হন। এ হামলার দায় স্বীকার করে আইএস। এর পর থেকেই ফ্রান্সে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। তারই মধ্যে বুরকিনি নিয়ে এই সংঘর্ষ হয়ে গেছে। এই করসিকাতেই গত ডিসেম্বরে উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা একটি মসজিদ ভাংচুর করে। ইসলামি বইপত্র ছিড়ে ফেলে। ওদিকে কান, ভিলেনুভে-লুবেট-এ বুরকিনি নিষিদ্ধ করা হয়েছে সমুদ্র সৈকতে। এরপর করসিকার সিসকোতেও সোমবার তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *