মীর মোহাম্মদ ফারুক/জাহাঙ্গীর আলম
কালিয়াকৈর,গাজীপুর থেকে : ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ ও কালিয়াকৈর উপজেলার ৫টি আঞ্চলিক সড়কের বেহালদশার কারণে যানচলাচলে ধীরগতি অনেকটা স্থায়ী হয়ে যাচ্ছে।
গাজীপুর ট্রাফিক পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার(এএসপি) সাখাওয়াত হোসেন জানান, টানা হরতালের কারণে আজ যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে। এছাড়া রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণেও অনেকটা সমস্যা হচ্ছে। তবে যানজট নেই গাড়ি মাঝে মধ্যে বিলম্বিত হতে পারে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ের অসংখ্য জায়গায় ভাঙ্গা চূঁড়া থাকায় বৃষ্টির কারণে গর্তের সুষ্টি হয়েছে। এতে গণপরিবহনের স্বাভাবিক গতি কমে যাচ্ছে। সংস্কারের অভাবে যানবাহনের ধীরগতি অনেকটা স্থায়ী হতে চলছে। ফলে প্রায়ই মহাসড়কে যানজট লেগে থাকে।
এদিকে কালিয়াকৈরের সফিপুর-মাঝুখান, সফিপুর-বড়ইবাড়ী, মৌচাক-ফুলবাড়িয়া-মাওনা, বাড়ইপাড়া-জালশুকা-চাঁন্দাবহ, কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়কগুলো দীর্ঘ দিন সংস্কার কাজ না করায় সড়গুলো চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ছে। মাঝে মধ্যে স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে দুই একটি জায়গায় ইটের খোয়া ফেলা হলেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই সড়ক দিয়ে চলাচল কারী জনসাধারণকে।
ভূক্তভোগীরা বলছেন, খুবই করুন দশায় রয়েছে ওই সব সড়ককে চলচালকারী জনসাধারন। বিশেষ করে সফিপুর-মাঝুখান সড়কে সফিপুর বাজার থেকে রতনপুর রেলষ্টেশন পর্যন্ত সড়কে খানাখন্দক এবং স্থানে স্থানে কংক্রিট ও ইট খোয়া উঠে গিয়ে এমন কাদা হয়েছে যে রিক্সা পর্যন্ত চলাছল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে অনেক সময় মাত্র ২ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে এক-দেড় ঘন্টা সময় লেগে যাচ্ছে দুভোর্গে পড়ছেন, রতনপুর, মাঝুখান, ফুলচালা, কাইনারা, কৌচাকুড়ি, ঝেঞ্জিচালা, লস্করচালা বড়চালা এবং আমদাইর এলাকায় বসবাসকারী হাজার লোকজন।
মৌচাক-ফুলবাড়িয়া-মাওনা সড়কের মৌচাক থেকে যোগিরচালা পর্যন্ত এবং ভান্নারা বেলতলা এলাকায় সড়ক থেকে পানি নিস্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় মৌচাক থেকে ভান্নারা পর্যন্ত মাত্র তিন কিলোমিটার সড়কে একটু বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন স্থানে পুকুরের মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে মৌচাক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে, টিএন্ড ব্রাদার পোশাক কারখানার সামনে, পূর্বমৌচাক প্যারাসুট নারিকেল তৈল কারখানার সামনে, ভান্নারা লিগ্যাসী ফুটওয়ার লিমিটেড কারখানার সামনে সড়কের পিচঢালাই উঠে বোরো জমির ক্ষেতের মতো পরিনত হয়েছে। মাঝে মধ্যেই ব্যস্ততম এ সড়কে ওইসব স্থানে ভারী যানবাহন ফেঁসে গিয়ে এক দুদিন পর্যন্ত আটকে থাকতে হচ্ছে। এসব কারণে এ সড়কে চলাচল কারী লোকজনকে চরম দুভোর্গে পড়তে হয়।
সফিপুর-বড়ইবাড়ী সড়কে পূর্বচান্দরা বোর্ড মিল,পাশা গেইটে কারল সুরিচালা, ভুলুয়া, সিনাবহ ও তালতলী এলাকায় বিভিন্ন স্থানে সড়কে বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এসব এলাকার সড়কের পাশে গড়ে ওঠা শিল্প কারখানার বড় যানবাহন চালচাল করায় এবং দীর্ঘদিন সড়কের সংস্কার না করা খানাখন্দকে ভড়া এ সড়কে একটু বৃষ্টিতেই যানচাল বন্ধ হয়ে বিপাকে পড়ছেন এসব এলাকার লোকজন। স্থানী লোকজনের দাবী দ্রুত সংস্কার করা না হলে এসব সড়ক চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়বে।
কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া-মাওনা সড়কে চাপাইর,মেদী-আশুলাই, মজিদ চালা,জাথালিয়া এলাকার বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। মাঝে মধ্যে এসব স্থানে ভাঙ্গা ইটের টুকরো ফেলা হলেও এক-দু’দিন পড়ই একই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে বাড়ইপাড়া-জালশুকা-চাঁন্দাবহ সড়কটির এমন অবস্থা হয়েছে যে বুঝাই না যাচ্ছে সড়কটি কখনও পিচ ঢালাই হয়েছিল কিনা। পুড়ো সড়কই খানাখন্দকের ভরপুর। অথচ এসড়কের পাশে বেশ কয়েকটি শিল্পকারখানা রয়েছে। এসড়কের চলাচল করছে লক্ষ লক্ষ শিল্প-কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয় কয়েক গ্রামের লোকজন। এসড়কটি ভারী যানবাহন ও রিক্সা নিয়ে চলাচল করতে গেলে হেলেদোলে চলতে হচ্ছে।
কালিয়াকৈরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ঝিল্লুর রহমান জানান, সড়কগুলো সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ সংস্কার শুরু হতে পারে।