ফেসবুকে পোস্ট দিলেই সমাধান

Slider জাতীয়

0638872ce02733883cd96fa172d6e4c1-KUSTIA-ACEBOOK--1-

কুষ্টিয়ায় কুমারখালী হাসপাতালের ভেতরে প্রধান ফটকের পাশেই ময়লা। বিশাল স্তূপ। দেখলেই গা ঘিনঘিন করে। শ্বাস টানা দায়। কী করা যায়? জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পাতায় এ সমস্যার কথা লিখে সমাধান চেয়ে পোস্ট করলেন এক ব্যক্তি। পোস্ট দেখে জেলা প্রশাসক সঙ্গে সঙ্গে বর্জ্য অপসারণে কুমারখালী পৌর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিলেন। ব্যস, ময়লা সরানো কাজ শুরু।

গত ২৪ জুলাই পরিবেশ দূষণ-বিষয়ক একটি পোস্ট দিয়ে প্রতিকার চান ওই ব্যক্তি। ৮ আগস্ট থেকে কুমারখালী পৌরসভা হাসপাতালের বর্জ্য অপসারণ শুরু করেছে।

এভাবে নাগরিকসেবা নিশ্চিত করতে ফেসবুককে কাজে লাগাচ্ছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। ২০১৪ সাল থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফেসবুকের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে জেলার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেন জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন। দুই বছর পর এ উদ্যোগ অনেকটাই সফল।

২০১৪ সালের ৫ আগস্ট কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় একটি সড়ক সংস্কারের অনিয়মের চিত্র পোস্ট দেওয়া হয়েছিল। এরপর পরই সেই সড়ক পুনরায় সংস্কারের মধ্যে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সুফল পেতে শুরু করে কুষ্টিয়াবাসী।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন দাবি করেছে, গত দুই বছরে ফেসবুক থেকে পাওয়া ৩০০টির বেশি সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। এখন প্রতিদিন জেলা প্রশাসনের পাতায় কুষ্টিয়া এলাকার দুর্নীতি ও দুর্ভোগের চিত্রসহ ২০-২৫টি অভিযোগ আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক ও আইসিটি) মুজিব উল ফেরদৌস ফেসবুক পাতাটির তত্ত্বাবধানে আছেন। তিনি বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক নাগরিকসেবা দিতে উপজেলাভিত্তিক সিটিজেন জার্নালিস্ট ফোরাম গঠন করার কাজ চলছে। ১৪৩ জন এতে যুক্ত হচ্ছেন। তাঁরা জেলা ও উপজেলার উন্নয়ন, দুর্ভোগ, সমস্যা ও সমাধানের জন্য পরামর্শ তুলে ধরবেন। তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আগে কুষ্টিয়ার মানুষকে তাদের সমস্যার কথা জানাতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে হাজির হতে হতো। এখন তারা জেলা প্রশাসনের নানা সেবা স্মার্টফোনে পাচ্ছে। তারা মোবাইল থেকে ফেসবুকে তাদের সমস্যার কথা লিখে জানাতে পারছে। সড়ক তৈরি ও সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্পে অনিয়ম, সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী-সংক্রান্ত আবেদন, মাদকদ্রব্যসংক্রান্ত অভিযোগ, মেধাবী শিক্ষার্থী, প্রতিবন্ধী, দুস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, শিক্ষাসামগ্রী বিতরণের আবেদন, বিভিন্ন অপরাধ দমনের আবেদন জানানো যায়।

ফেসবুকে রক্তদাতাদের ডেটাবেইস তৈরি করা হচ্ছে। স্বেচ্ছায় রক্তদানে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের রক্তের গ্রুপের, নাম-ঠিকানা ও মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এই তথ্য দিয়ে একটি বড় ডেটাবেইস তৈরি করে জাতীয় তথ্য বাতায়নে যুক্ত করবে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ফেসবুকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে জনদুর্ভোগ লাঘব হচ্ছে। ফেসবুক ব্যবহার করে সমাজের মানুষের সমস্যার সমাধানের এই উদ্যোগটি দেশের অন্যান্য জেলায় এখন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *