ঠাকুরগাঁওয়ে মাদক বিক্রির কৌশল বদল, প্রকাশ্যে বেচাকেনা

Slider গ্রাম বাংলা

082740_bangladesh_pratidin_bdp-o

সরকারের মাদকবিরোধী জিরো টলারেন্স ক্রাস প্রোগ্রামেও ঠাকুরগাঁওয়ে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে মাদক। জেলার চিহ্নিত মাদক বিক্রির স্পটগুলো এখনও অক্ষত।

ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ইতোমধ্যে ৫ জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। জেলায় মাদক নির্মূল করতে পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ নিরলস ভাবে বিশেষ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।
কিন্তু অদৃশ্য কারণে চলমান বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার হননি জেলার মাদক গডফাদারের রথী-মহারথীরা। তারা অনেকটাই দাপটের সঙ্গে চলাফেরা করছেন। তবে পুলিশেরর উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা বলছেন, মাদক প্রকাশ্যে বিক্রি হওয়ার বিষয়টি তাদের জানা নেই।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদক ব্যবসায়ীরা এখন মাদক বিক্রির ধরন পাল্টিয়েছে। অভিযানের আগে দোকান, বাসা বা বাড়িতে বিক্রি করলেও এখন বিক্রি হয় ভ্রাম্যমাণভাবে। ক্রেতার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে উভয়ে মিলিত হয় নিরাপদ স্থানে। এভাবে প্রতিনিয়ত জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও বড় বড় বাজারে লাখ লাখ টাকার মাদক প্রতিনিয়ত বিক্রি হচ্ছে।

যার ফলে ঠাকুরগাঁও জেলায় মাদক নিয়ন্ত্রণে কোনো প্রভাব পড়ছে না।
এ নিয়ে জেলার সচেতন নাগরিকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। একটি সূত্র জানায়, সরকারের বিভিন্ন দফতর ঠাকুরগাঁওয়ে ‘টপ টেন’ মাদক ব্যবসায়ীদের নাম ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠায় গত গত মে মাসে এবং জেলা পুলিশের কাছেও গডফাদারদের একটি তালিকা রয়েছে। তারপরেও ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ এমন অবস্থায় চলছে সংশ্লিষ্ট দফতরের কাজ।

সম্প্রতি শহরের কলেজপাড়া এলাকায় অনুসন্ধান করে দেখা যায়, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেও সতর্কতার সঙ্গে চলছে ইয়াবা বিক্রি। পরে ওইদিন সন্ধ্যা ৭টায় পুনরায় গিয়ে দেখা যায়, একাধিক যুবক মোটরসাইকেল, রিকশা ও অটোরিকশায় এসে নিরাপদে মাদক নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকটা প্রকাশ্যেই ঘরের সামনে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু অভিযানের আগে বয়ষ্করা বিক্রি করলেও এখন একাজে ব্যবহার করা হচ্ছে শিশু ও নারীদের।

শনিবার দুপুরে শহরের রোড এলাকায় গিয়ে দেখা যায় একটি কুড়েঘরের সামনে চেয়ারে বসে একজন লোক বিভিন্ন স্থান থেকে আগত লোকদের সঙ্গে মাদক হাতবদল করছে। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই সতর্ক। কীভাবে মাদক বেচাকেনা হয় তা জানতে গত শুক্রবার বিকালে পরিচয় গোপন রেখে রোড এলাকার এক মাদক সম্রাটের সঙ্গে মঠুফোনে ইয়াবা কিনতে চাইলে সে বলে, ‘সন্ধ্যার পর রোড স্টেশনের সামনে এসে ফোন দিবেন। নিরাপদে নিয়ে যেতে পারবেন কোনো অসুবিধা হবে না। পরের দিন প্রতিবেদক ওই মাদক সম্রাটের কাছে জানতে চান পুলিশ কোনো সমস্যা করবে কিনা?

এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা তো সারা জীবনই সমস্যা। এটা কোনো সমস্যা বলে আমরা মনে করি না। গাড়ি নিয়ে আসেন, নিরাপদে নিয়ে যেতে পারবেন। পৌর শহরের রোড কাজি এলাকায় এক মাদকসেবীর বাসাতে বসে মাদক বিক্রি করছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলার ৫টি উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে রমরমা মাদক বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এরা প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকার মাদক কেনাবেচা করেন।

জেলা পুলিশেরর উর্ধ্বতন কর্তারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর ইতোমধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে ৫ জন নিহত হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্রসহ, মাদকদ্রব্য।

তারা বলেন প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তথ্য পেলে নির্দিষ্ট জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *