জব্দ হচ্ছে দারুল ইহসানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সম্পত্তি

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

file

 

আউটার ক্যাম্পাসের মাধ্যমে সার্টিফিকেট বিক্রিসহ নানা অনিয়মে বন্ধ হওয়া বিতর্কিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দারুল ইহসানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি জব্দ করার উদ্যাগ নেয়া হয়েছে। কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী এ উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে। এজন্য ৪টি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কমিটি শিগগিরই কার্যক্রম শুরু করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হেলালউদ্দিন মানবজমিনকে বলেন, কোর্টের রায়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করেছি এবং কোর্টের রায়ে অবজারভেশনে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বলা আছে। সেই টাকা শিক্ষার্থীরা কীভাবে পাবে সেটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। এজন্য ৪টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংক অ্যা্যকাউন্ট এবং সাভার ও ধানমন্ডির সম্পতি কীভাবে জব্দ করা যায় তা নিয়ে কাজ করবেন। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সর্বশেষ দারুল ইহসানের মূল ক্যাম্পাসের মালিক দাবিদার ছিল চারটি গ্রুপ। এই চারটি গ্রুপ কোর্টের স্টে-অর্ডার নিয়ে ২৯টি মতো আউটার ক্যাম্পাস পরিচালিত করতো। কোর্টে রায়ে বলেছে, কোনো শিক্ষার্থী যদি তার শিক্ষাজীবন নিয়ে কোনো ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয় বা সার্টিফিকেট নিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয় তবে তিনি যে গ্রুপের কাছে ভর্তি হয়েছিলেন, তার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করতে পারবেন। কিন্তু এই টাকা কীভাবে আদায় হবে সে ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা ছিল না। তারপরও কোর্টের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সেজন্য উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, চারটি গ্রুপের কোনো অ্যাকাউন্টে টাকা নেই বলে আমরা জেনেছি। এছাড়া ধানমন্ডি ও সাভার বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সম্পতি আছে তা কার নামে আছে কীভাবে আছে তা জানার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। তারা এটা কাজ শুরু করবে। প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হেলাল উদ্দিন বলেন, কোর্টের রায়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করেছি। কোর্ট আরও যা যা পর্যবেক্ষণ দিয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে দিকে নিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, ধানমন্ডি ও সাভারের সম্পত্তি জব্দ করতে বেশ কিছু প্রত্রিুয়া অনুসরণ করতে হবে। কারণ, এই সম্পতি কার নামে তা আগে জানতে হবে। এছাড়াও কোর্ট বলেছে, এই চারটি গ্রুপ যদি এক হয়ে সিভিল কোর্টের মাধ্যমে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে তাহলে সম্পতি ওই বোর্ড অব ট্রাস্টি অধীনে চলে যাবে। এসব বিষয় নিয়েও আমরা কাজ করছি।
ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান মানবজমিনকে বলেন, দারুল ইহসানে কোনো পক্ষকে তো আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। আমি শুনেছি, একটি গ্রুপ নাকি দেশের বাইরে চলে গেছে। তাহলে শিক্ষার্থীরা কার কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করবে। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোর্টের রায়ের আলোকে যে উদ্যোগ নেবে ইউজিসি সেটি নিয়ে কাজ করবে। যদি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করতে হয় প্রয়োজনে সেটি করা হবে। ইউজিসির উপ-সচিব (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) জেসমিন পারভীন মানবজমিনকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের খুব ভালো উদ্যাগ। তিনি জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কাজ শুরু হয়েছে। প্রথমে আমরা চারটি গ্রুপের আওতায় কত শিক্ষার্থী ছিল, কার অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে ইত্যাদি বিষয়গুলো দেখবো। এরপর প্রচলিত আইনে তাদের সম্পতি ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার প্রত্রিুয়া শুরু হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *