বেসরকারী গণমাধ্যম বন্ধ করে দেয়াই ভাল

Slider জাতীয় টপ নিউজ সম্পাদকীয় সারাদেশ

flag-0120131216105958

 

 

কথায় বলে কারো জন্য গর্ত করলে নিজেই পড়তে হয়। আবার কারো বিপদে উল্লাস করলে নিজের উপর বিপদ নির্ধারিত হয়ে যায়।  আমরা বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি, জিয়াউর রহমানকে দেখেছি। এরশাদকে এখনো দেখছি। তারা দেশে চালিয়েছেন। জীবিত থাকা রাষ্ট্রনায়ক এরশাদ সাহেব এখন অনুশোচনা করছেন বা নিজের ভুল গুলো বুঝতে পারছেন। কিন্তু যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন বুঝতে পারেননি। অবশ্য ক্ষমতায় থেকে এই ধরণের হুস থাকে কম। কিন্তু ভুল বুঝলেও এরশাদ সাহেব সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান আর হতে পারবেন এমন সম্ভাবনা ক্ষীন।

কিছু সময় ক্ষমতার বাইরে থেকে  যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন তবে তিনি হয়ত বুঝতে পারতেন তার ভুল কোথায় হয়েছিল। ঘাতকেরা তাকে ওই সূযোগটি দেয়নি। এমনটি জিয়াউর রহমানের ক্ষেত্রেও হতে পারতো। তবে জীদ্দশায় বঙ্গবন্ধু কিছু কথা বলে গেছেন যা থেকে মনে হয় তার  কথাগুলোর প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে না পারায় ইতিহাসের ওই অনাকাংখিত ঘটনা হয়ে থাকতে পারে।

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম ও গনতান্ত্রিক দেশ। এই দেশের মালিক জনগন। সরকার জনগনের সমর্থন নিয়ে একটি নির্ধারিত সময়ে দেশ পরিচালনা করবে। সরকার মন্দ করলে জনগন পরিবর্তন করবেন। জনগন যে সময়ের জন্য রাষ্ট্রপরিচালনা করতে একটি সরকারকে সমর্থন দিবেন ওই সময়ের প্রতিটি মুহুর্তে সরকারের সকল ভাল মন্দ কাজ গণমাধ্যম রাষ্ট্রের মালিক জনগনের নিকট পৌঁছে দিবে। মুলত গণমাধ্যমের দায়িত্ব এই টুকুই। আর প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী সরকারের নির্দেশে জনগনের সেবা করবে। যিনি সেবা করতে পারবেন না তাকে বিদায় করে দিবে সরকার।  এটাই হল একটি গনতান্ত্রিক দেশের মৌলিক তত্ত্ব।

কিন্তু আমাদের দেশের বাস্তবতা বলছে ভিন্ন। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে আমরা পৃথীবির সকল গনতান্ত্রিক দেশ থেকে ক্রমান্বয়ে দূরে সরে যাচ্ছি। কারণ হল আমাদের ক্ষমতার লোভ। ক্ষমতায় যাওয়া আসা নিয়ে আমরা ব্যস্ত। দেশ ও জনগন নিয়ে তত নয়। ফলে আমাদের কপাল ফেটে যায়  বারবার।

বর্তমান অবস্থাই বলে দিচ্ছে, সরকার নিজেদের কারণেই আর জনগনের মুখোমুখি দাঁড়াতে পারছে না। মানে হল সরকার রাষ্ট্রের মালিক জনগনের কাছে সমর্থনের জন্য যেতে চাচ্ছে না। তাই তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর উপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। যেহেতু প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা রাষ্ট্রের মালিক নন সেহেতু সরকার ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে এটাই ঠিক। অনেকে বলেন, গণমাধ্যম নীরব কেন। এটা যারা বলেন তারা সঠিক বলেন নি।  সরকার এখন রাষ্ট্রের মালিক জনগনের উপর নির্ভর না করে কর্মচারীদের উপর নির্ভর করছে তাই এখন আর সরকারের ভাল মন্দ খবর জনগনের নিকট পৌঁছানোর প্রয়োজন নেই। কারণ এখন জনগনের জন্য খবর নেই। আর এই ধরণের খবর জনগনের নিকট পৌছাতে সরকারও চাচ্ছে না। কারণ খারাপ খবর কেউ চায় না। তাই একের পর এক বন্ধ হচ্ছে গণমত প্রকাশের মাধ্যম গুলো। আর এতে ইন্দন দিচ্ছেন কিছু নিমক হারাম  বেঈমান ও দালাল সাংবাদিকেরা। যারা আওয়ামীলীগের ভেতরে প্রবেশ করে এখন  মাতাব্বরী করে গোপন তথ্য সংগ্রহ করছেন,  তারাই পরের সরকারের দালালী করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এটাই এদের চরিত্র। আর এই ধরণের চরিত্রের কারণেই প্রত্যেক সরকার নিজস্ব অবস্থান থেকে ছিটকে পড়ে।

এখন ওই সকল দালাল সাংবাদিকেরা নিজেরা ‍জৌলুসে থেকে সহকর্মীদের হেয় করছেন। সরকারকে কুপরামর্শ দিয়ে তারা উল্লাস করছেন। যেন সরকার বিপদে পড়ে যায়। আর তারা নতুন সাজে সজ্জিত হতে পারে দ্রুত। তারা জানে না যে, সরকারের নিকট থেকে জনগন ও গণমাধ্যম সরে গেলে কি হবে তা তাদের জানা নেই। কারণ তারা সাংবাদিক নয় দালাল। তারা রাজনৈতিক সাংবাদিক। পেশাদার সাংবাদিক নয়।

তাই এখন পরিস্থিতি বলছে, জনগনের কষ্ট হয় এমন খবর না পৌঁছানোই ভাল। আর এধরণের খবর সরকারের জন্য অমঙ্গলজনকও বটে। ফলে এখন সরকারের উচিত সরকারী গণমাধ্যম ছাড়া সকল গণমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া। এতে সরকারের জন্য লাভ হবে বেশী। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *