তুরস্কে ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান

Slider সারাবিশ্ব

23115_ee

 

তুরস্কজুড়ে চলছে ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান। গতকাল পর্যন্ত অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের অভিযাগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কমপক্ষে ৬০০০ মানুষকে। এর মধ্যে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগানের শীর্ষ সামরিক সহকারী কর্নেল আলী ইয়াজিসি। তাকে জেলে রাখা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর শীর্ষ স্থানীয় দু’জন কর্মকর্তা। রয়েছেন ২৯ জন জেনারেল ও ২৮৩৯ জন সেনা কর্মকর্তা। দেশটির শীর্ষ বিচারিক প্রতিষ্ঠান এইচএসওয়াইকে শনিবার বরখাস্ত করেছে ২৭৪৫ জন বিচারককে। ব্যর্থ ওই সামরিক অভ্যুত্থানে তুরস্কে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ২৯০। এর মধ্যে কমপক্ষে ১০৪ জন অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া সেনা সদস্য। এসব তথ্য দিয়েছেন তুরস্কের আইনমন্ত্রী বেকির বোজডাগ। তিনি রোববার দেশটির জাতীয় টেলিভিশনে এসব কথা বলেন। ইন্তাম্বুলে সাবিহা গোকসেন বিমানবন্দরে ও তুরস্কের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে একটি বিমান ঘাঁটিতে নিরাপত্তা রক্ষাকারী ও অভ্যুত্থানকারীদের মধ্যে এদিন রাতে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এরপর পরই বোজডাগ ওই বক্তব্য রাখেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা ও বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে ইনসারলিক বিমানঘাঁটির কমান্ডার জেনারেল বেকির ইরকান ভ্যান। এ বিমানঘাঁটি থেকে সিরিয়া ও ইরাকে আইসিসের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, অভ্যুত্থান চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর জেনারেল বেকির ইরকান ভ্যান যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু তার সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ওদিকে রোববার যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানের শীর্ষ সামরিক সহকারী আলী ইয়াজিসি। প্রেসিডেন্ট এরদোগান নির্বাসিত ব্যবসায়ী ও ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনকে অভ্যুত্থানের জন্য দায়ী করার পর পরই আলী ইয়াজিসিকে গ্রেপ্তারের খবর আসে। অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গুলেন। তাকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক। ওয়াশিংটন থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক রোসিল্যান্ড জর্ডার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ওই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতো না। এমনকি তারা এতে সহযোগিতাও করে নি। তবে গুলেনকে নিয়ে এরদোগান সন্দেহ করেন এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র অনুধাবন করতে পেরেছে। জন কেরি বলেছেন, যদি ষড়যন্ত্র ও অভ্যুত্থানকারীদের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য গুলেনকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান দেশে ফেরত পাঠাতে বলেন তাহলে তুরস্ক সরকারকে বিশ্বাস করার মতো আইনগত নিরেট প্রমাণ দেখাতে হবে।
ওদিকে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, তুরস্ক প্রতিশোধ নিতে চাইছে না। তিনি অভ্যুত্থানকারীদের বিচারে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড পুনর্বহাল করার বিষয়ে কথা বলেছেন। বলেছেন, এ বিষয়ে বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলে তবেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তুরস্কের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, সাংবিধানিক আদালতের কমপক্ষে দু’জন ও এইচএসওয়াইকের ১০ জন বিচারককে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আর্থিক লেনদেন ও যোগাযোগ রক্ষা করার ভিত্তিতে আটক করা হয়েছে এসব বিচারককে। তবে আটক করা মানেই তাকে অভিযুক্ত করা নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *