৭২ মেয়ের গর্বিত ‘বাবা’ মহেশ

Slider টপ নিউজ সারাদেশ সারাবিশ্ব

8286e5a1b846c6e4d7aca3c8e04b6902-Untitled-1

এখন পর্যন্ত ৪৭২ জন পালিত মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। প্রত্যেক বিয়েতে ব্যয় করেছেন প্রায় চার লাখ ভারতীয় রুপি। ওই লোকের নাম মহেশ শাভানি। গুজরাটের ভাবনগর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। এ বছরেও বিয়ে দেবেন আরও ২১৬ জনকে।

বিয়ে দিতে গিয়ে জাত-পাত, ধর্ম-বর্ণ নিয়ে চিন্তা করেননি। বাবাহারা মেয়েদের নিজ কন্যার মতো বিয়ে দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, বিয়ের পরও অনেক মেয়েদের খোঁজ নিয়েছেন। সমস্যা থাকলে সমাধান করেছেন। আজ বিশ্ব বাবা দিবস সামনে রেখে মহেশ শাভানিকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। আজ ৪৭২ জন মেয়ে ‘বাবা’ মহেশকে বাবা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

ঘটনাটি আট বছর আগের। ভাই মারা যাওয়ার পরই ভাইয়ের দুই মেয়ের দায়িত্ব নেন—সেখান থেকে শুরু। ভাইয়ের মেয়েদের পর অন্য পিতৃহারাদেরও দায়িত্ব নিচ্ছেন।

ভারতে অনেক মেয়ে শৈশবে বাবা হারিয়েছেন। তাদের ‘বাবা’ হয়ে বিয়ের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন মহেশ শাভানি। মা-বাবা হারা মেয়েদের বুঝতে দেননি ভালোবাসার অভাব। তাদের বড় করে বিয়েও দেন ঘটা করে। ২০০৮ সাল থেকেই তিনি এ কাজ করছেন। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৪৭২ জন পালিত মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন মহেশ। এ বছর ২১৬ জনকে বিয়ে দেবেন বলে ঠিক করেছেন।

ডায়মন্ড ব্যবসায়ী মহেশ এ কাজে নাকি বেশ আনন্দ পান। মহেশের আনন্দের ভাগীদার পরিবারও। পরিবারের লোকেরাও পালিত কন্যাদের বিয়েতে সহযোগিতা করেন। ঘটা করে একসঙ্গে অনেককে বিয়ে দেন মহেশ। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক মেয়েকে সোনা বা রুপার গয়না এবং নতুন সংসারের জন্য বেশ কিছু সরঞ্জাম দেওয়াসহ বিয়েতে চার লাখ ভারতীয় রুপি খরচ করেন মহেশ শাভানি।

ব্যবসায়ী মহেশ সমাজসেবার চিন্তা থেকেই মা-বাবা হারা মেয়েদের ভরণপোষণের কাজ বেছে নেন। যাদের অভিভাবক নেই বলে বিয়ে হচ্ছে না, সেসব মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেন তিনি। ২০০৮ সালে শুরু করে এখন পর্যন্ত সেই কাজ করে চলেছেন। তিনি অবশ্য গণবিয়ের জন্য কারও অনুদান নেন না। শাভানি বলেন, ‘যে নারী স্বামী হারিয়েছেন, মেয়ে বিয়ে দেওয়া তাঁর জন্য অনেকে চ্যালেঞ্জের।’

ছোটবেলায় নাহিদা বানু বাবা হারান। ২০১৪ সালে তাঁর বিয়ে দেন মহেশ। নাহিদা বানু বলেন, ‘মহেশ পাপা আমার কাছে পিতার চেয়েও বেশি কিছু। আমি চাই, পৃথিবীর প্রতিটি মেয়ে তাঁর মতো একজন বাবা যেন পায়।’ মহেশের পালিত অপর কন্যা হিনা ছয় বছর আগে নিজ বাবাকে হারান। ২০১৫ সালে নতুন জীবনে প্রবেশ করা হিনা তিনি বলেন, ‘যখন আমাদের প্রয়োজন, তখনই মহেশ পাপা আমাদের কাছে একটি বার্তা হয়ে এসেছেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *