আইএসের কথিত প্রধান এখন বাংলাদেশে!—–কানাডার পত্রিকা দ্য ন্যাশনাল পোস্ট

Slider টপ নিউজ বাংলার মুখোমুখি সারাবিশ্ব

17666_canada

 

কানাডা পুলিশ হয়রানি করছে এ অভিযোগে বাংলাদেশে চলে গেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর কথিত ‘বাংলার খিলাফত দলের প্রধান’ শায়ক আবু ইব্রাহিম আল হানিফ। তার আসল নাম তামিম চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক। বাংলাদেশে ফিরে তিনি আইসিল বা আইএস সম্পর্কিত আঞ্চলিক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।
এ খবর দিয়েছে কানাডার পত্রিকা দ্য ন্যাশনাল পোস্ট। ‘হি ইজ ফ্রম উইন্ডসর’: কানাডিয়ান আইডেনটিফায়েড অ্যাজ লিডার অব আইসিল অ্যাফিলিয়েট ইন বাংলাদেশÑ শীর্ষক প্রতিবেদনে ৭ই জুন এ কথা বলা হয়। লেবাননের ডেইলি স্টার পত্রিকাকে উদ্ধৃত করে ওই খবরে বলা হয়, তামিম চৌধুরীই এখন নতুন নাম ধারণ করেছেন শায়ক আবু ইব্রাহিম আল হানিফ। কানাডার ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির রিসাইলেন্স রিসার্চ সেন্টারের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো প্রফেসর অমরনাথ অমরাসিঙ্গাম ন্যাশনাল পোস্টকে বলেছেন, এক সময় কানাডার অন্টারিওতে উইন্ডসরে ছিলেন তামিম চৌধুরী। তবে তাকে যারা চিনতেন তারা জানেন সে ছিল খুবই শান্ত প্রকৃতির। এর বাইরে তার সম্পর্কে কিছু জানা যায় নি। প্রফেসর অমরাসিঙ্গে বিদেশী যোদ্ধাদের ওপর গবেষণা করছেন। তিনি বলেছেন যে, তিনি শুনেছেন কানাডা পুলিশ হয়রানি করছে এ অভিযোগে তামিম চৌধুরী বাংলাদেশে চলে গেছেন। সেখানে তিনি আইসিল (আইএস)-এর আঞ্চলিক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। স্টিওয়ার্ট বেল-এর লেখা ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কয়েকটি নৃশংস হত্যাকা-ও তুলে ধরা হয়। বলা হয়, মঙ্গলবার বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে ৬৮ বছর বয়সী একজন পুরোহিতকে হত্যা করা হয়েছে। এর দায় স্বীকার করেছে আইসিলের (আইএস) স্থানীয় শাখা। এরাই দেশকে অশ্লীলতা (ফিলথ) মুক্ত করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে যেসব হত্যাকা- ঘটছে তার সর্বশেষ শিকার ছিল এটা। এর অনেকগুলোর জন্য দায়ী আইসিলের (আইএস) আঞ্চলিক নেতারা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন কানাডার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অন্টারিওর বাসিন্দা তামিম চৌধুরী। ওই রিপোর্টে বলা হয়, তামিম চৌধুরী এখন নতুন নাম ধারণ করেছেন। নতুন নাম হলো শায়ক আবু ইব্রাহিম আল হানিফ। আইসিলের প্রচারণামুলক ম্যাগাজিন ‘দাবিক’-এর সর্বশেষ সংস্করণে তাকে বাংলাদেশ শাখার ‘আমির’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এপ্রিলে প্রকাশিত ওই ম্যাগাজিনে আল হানিফ তার হিংসা উগড়ে দেন। যারা তার মতো ইসলামের পথে না আসবে তাদেরকে হত্যার হুমকি দেন। ন্যাশনাল পোস্ট লিখেছে, বাংলাদেশে আইসিল (আইএস) শাখা গত ১৮ মাসে কমপক্ষে দুই ডজন মানুষকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হয়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের একটি ইংরেজি পত্রিকাকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। তথাকথিত আইএসের টার্গেটে রয়েছে বিভিন্ন রকম মানুষ। তারা হলেন হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও বিহারী নেতারা। রয়েছেন শিয়া মতাবলম্বীরা, ধর্মীয় নেতা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, ধর্মান্তরিত মানুষ, বিদেশী।  ‘দাবিক’-এ দেয়া সাক্ষাতকারে আল হানিফ বলেছেন, ভূরাজনৈতিক অবস্থানের কারণে এ অঞ্চলে খিলাফত ও বিশ্বব্যাপী জিহাদের জন্য বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে তাদের রয়েছে শক্ত জিহাদি ঘাঁটি। তারা গেরিলা হামলা চালিয়ে যাবে। মার্চে কানাডিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের পরিচালক বলেছেন, সন্ত্রাসী কর্মকা-ে অংশ নেয়ার জন্য প্রায় ১৮০ জন উগ্রপন্থি কানাডা ছেড়েছে। আরও ৬০ জন ফিরে এসেছে কানাডায়। কয়েক ডজনের কানাডা ছেড়ে যাওয়া ঠেকিয়েছে পুলিশ। জননিরাপত্তা বিষয়ক কানাডার মন্ত্রী রাফ গুডেল এ সপ্তাহে একটি ব্লগে জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্ডা নিয়ে লিখেছেন, যারা এরই মধ্যে কানাডা ছেড়েছে তাদের পাসপোর্টের মৌলিক তথ্যগুলো শিগগিরই সংগ্রহ করবে সরকার। তিনি বলেছেন, এক্ষেত্রে নিরাপত্তায় বড় ধরনের একটি ফাঁক রয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *