গাজীপুর জেলা পরিক্রমা-২; টপে আছে সুবিধাভোগী চক্র

Slider গ্রাম বাংলা বাংলার মুখোমুখি বাধ ভাঙ্গা মত রাজনীতি সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

2.Mayor mannanফাহিম হোসেন/সমুদ্র হক গাজীপুর থেকে ফিরে: স্বাধীন বাংলাদেশে যতগুলি জাতীয় নির্বাচন হয়েছে তার প্রায় সবকটিতে গাজীপুর জেলার মানুষ আওয়ামীলীগকে বেশী ভোট দিয়েছেন। এই জেলায় প্রথমে ছিল জাতীয় সংসদের ৪টি আসন। এখন ৫টি।  ১৯৯১ সালে গাজীপুরে দুটি করে আসন পায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপি। ১৯৯৬ এ সবকটিতে আওয়ামীলীগ ও ২০০১ সালে আওয়ামীলীগ তিনটি ও বিএনপি একটিতে জয়ী হয়। ২০০৮ সালে বিএনপি কোন আসন পায় নি। সার্বিক বিবেচনায় দেখা যায়, গাজীপুর মোটামোটি আওয়ামীলীগের দখলে।

জনসেবা: এখন দেখা যাক রাজনৈতিক কর্মকান্ড জনগনকে কি ধরণের সেবা দিতে পেরেছে।

তথ্যনুসন্ধানে দেখা যায়, বিশেষ করে ১৯৯১- এ,  নিঁখুত গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এই জেলায় তেমন কোন রাজনৈতিক স্বহিংসতা হয়নি। এর কারণ ছিল কয়েকটি। আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে একটি গোপন রাজনৈতিক সন্ধি ছিল। যখন যে দল ক্ষমতায় আসবে তখন সে দলের নেতৃত্বে চলবে জনসেবা আর পিছনে থাকবে বিরোধী দল। এই চেইনের মধ্যেই চলছিল গাজীপুর।

২০০৪ সালের ৭মে তৎকালীন আওয়ামীলীগ দলীয় সাংসদ আহসান উল্লাহ মাস্টার খুন হওয়ার পর এই গোপন সমঝোতা অনেকটা ভেঙ্গে যায়। আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলা ও হত্যার পরবর্তি সময়ে আইন শৃৃঙ্খলা অবনতির ঘটনায় একাধিক মামলায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির অনেক নেতা কর্মী আসামী হয়ে যায়। সাজাও হয়ে যায় অনেকের। ফলে দুই দলের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তবে ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দুই দলের গোপন সমঝোতায় টাকার মালিক হয়ে যায় একাধিক আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নেতা। আবার ২০০৯ থেকে এই অবধি অনেক নেতারাই বড় লোক হয়ে গেছেন।

ঝুট ব্যবসা, ঠিকাদারী ব্যবসা, জমির ব্যবসা, পুলিশের দালালি ব্যবসা, মাদক ব্যবসা সহ নানা ধরণের অপরাধের গঠফাদার হিসেবে যাদের নাম আসে তাদের অনেকেই ক্ষমতাসীন দলের লোক। যে দল ক্ষমতায় আসে তারা ওই দলের লোক হয়ে যায়। ক্ষমতার পালা বদলে তারা শুধু খোলস পাল্টায়। তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করে কতিপয় সাংবাদিক নামধারী চাঁদাবাজ। এরা যে দল ক্ষমতায় আসে তারা সে দলের হয়ে যায়।

এই ধরণের সুবিধাভোগী চক্র রাজনৈতিক আবরণে বিভিন্ন পরিচয় ধারণ করে সামজে দাপটের সঙ্গে চলেন। তারা সব সময় ক্ষমতার মধ্যেই বসবাস করেন।

জিরো থেকে হিরো হওয়ার ইতিহাস গাজীপুরের সুবিধাভোগী চক্রের জন্য একটি অতিরিক্ত সুবিধা বলে মনে করেন অনেকে। দুই দলের গোপন সন্ধির উপর ভর করে যে সকল নেতা ও কতিপয় সুশীল শ্রেনীর লোক   হিরো হয়েছেন তাদের হাতেই বলা চলে এখন গাজীপুরের রাজনীতি। এই রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে  জনসেবা  জনগনের কাছে তেমনভাবে যেতে পারেনি। ফলে নাগরিক সুবিধার জন্য জনগন দুই দলের নেতাদের সমর্থক হয়ে অসংখ্য মামলার আসামী হয়েছেন। অনেকে রাজনীতি করে স্বর্বস্ব হারিয়েছেন। এমনো দেখা যায়,  পকেটে টাকা নেই কিন্তু গাঁয়ের জামায় বঙ্গবন্ধু বা জিয়ার মনোগ্রাম নিয়ে ঘুরছেন আওয়ামীলীগ বা বিএনপির অনেক ত্যাগী কর্মী।

চলবে—

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *