ইসরায়েলি রাজনীতিকের সঙ্গে দলীয় নেতা আসলাম চৌধুরীর ছবির সত্যতা স্বীকার করলেও এর প্রচারে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত দেখছেন বিএনপি নেতা আ স ম হান্নান শাহ।
“ছবির পেছনে যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত আছে, বিএনপিকে ম্যালাইন করার জন্য, বিএনপিকে অপবাদ দেওয়ার জন্য। একটু লম্বা মানুষ তো। আর্মিতে আছে, যারা লম্বা মানুষ হয়, তারা একটু বোকা হয়, তাদের বুদ্ধি কম হয়। ছবিটি ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ থেকে এসেছিল, আমি জানি,” বলেন অবসরপ্রাপ্ত এই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল।
বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কহীন একটি দেশের রাজনীতিকের সঙ্গে বিএনপির নেতা আসলামের ‘বৈঠক’ শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করে আসছেন।
তবে আসলাম ছবির কথা স্বীকার করলেও বৈঠকের খবর অস্বীকার করেন। বিএনপিও ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত হওয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
আসলামের সঙ্গে ছবিটি লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির, যিনি ইসরায়েলের বর্তমান সরকারের উপমন্ত্রী এম কে আয়ুব কারার একজন সাবেক উপদেষ্টা। নিজের নামে মেন্দি এন সাফাদি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস প্রতিষ্ঠানটি চালান।
দিল্লিতে ডেল-আভিভ শীর্ষক ওই সম্মেলন এবং মেন্দি এন সাফাদি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনসের ফেইসবুক পেইজেও দেখা যায় তাদের একাধিক ছবি।
সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি পত্রিকায় ওই ছবি ও খবর ছাপা হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় আলোচনা।
এর মধ্যে আসলামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার কথা রোববার সকালে জানায় পুলিশ। দুপুরে ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে হান্নান শাহর বক্তব্য আসার পর সন্ধ্যায় ঢাকায় আসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিএনপি নেতা বলেন, “এখন কথা হল- ইসরায়েলের একজন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, এতে কী হবে? এমন শত শত বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বর্তমান সরকারের এবং ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের একেবারে উঠাবসা আছে, তাদের দিল্লিতে গিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। আমার এই তথ্য একশত ভাগ সত্য।”
প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিদেশি স্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনে হান্নান শাহ বলেন, “আসলাম চৌধুরী ইসরায়েলের একজন গুপ্তচরের সঙ্গে দেখা করেছেন বলে অভিযোগ। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন যে আপনার পুত্রবধূ একজন ইহুদি-খ্রিস্টান। তাহলে আপনার পুত্রবধূ কোথাকার?
“তাহলে কী ভবিষ্যতে বাংলাদেশে পুত্রবধূকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। না, আমরা তা চাই না। তাই দেখিয়ে দিলাম, কাচের ঘরে থেকে বাইরে ঢিল মারবেন না। নিজের ঘরে খ্রিস্টান-ইহুদি রেখে আপনি আমাদেরকে দিচ্ছেন অপবাদ। কিছুটা হলেও স্মরণ করুন।”
২০ দলীয় জোটের শরিক জাগপার মওলানা ভাসানীর ‘ফারাক্কা লংমার্চ দিবস’ স্মরণে এই আলোচনা সভায় জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, এনডিপির খন্দকার গোলাম মূর্তজা, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান বক্তব্য রাখেন।