আমরা বিপদকে স্বাগত জানাচ্ছি!

Slider জাতীয় ফুলজান বিবির বাংলা বাংলার মুখোমুখি বাধ ভাঙ্গা মত রাজনীতি সম্পাদকীয়

images

জাতিসংঘের সদস্যভূক্ত দেশ গুলোর মধ্যে সুন্দর কুটনৈতিক সম্পর্ক সব সময় চলমান থাকে।  যে দেশের সঙ্গে কুটনৈতিক সম্পর্ক থাকে না সে দেশকে ভাল বন্ধুও বলা যায় না। তবে সম্পর্ক ভাঙা গড়া যার কারণেই হউক কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন একটি অশুভ গন্ধ এটা ঠিক।

গত ২৪ ঘন্টায় বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করেছে এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে কুটনৈতিক পর্যায়ে ডাকাডাকি মানে তলব পাল্টা তলব হয়েছে। একই সময় একটি স্বাধীন দেশের সঙ্গে দুটি দেশের হঠাৎ ভালবাসার বন্ধন ছিন্ন হওয়া বা সম্ভাবনা দেখা দেয়া দুর্ভাগজনক। এ ক্ষেত্রে আমাদের কুটনৈতিক ব্যর্থতা না নতজানু পররাষ্ট্রনীতি দায়ী তা জানিনা। তবে এই ধরণের ঘটনা দেশের জন্য খারাপ লক্ষন এটা সঠিক।

একটি স্বাধীন দেশের আভ্যন্তরীন বিষয়ে কোন বন্ধুদেশ পরামর্শ দিতে পারে। কিন্তু পরামর্শ না রাখতে পারলে বন্ধুত্ব ভেঙে যাবে এটা ঠিক নয়। এই ধরণের ঘটনা বন্ধুত্ব থেকে শত্রুতার জন্ম দেয়। এটা ভালবাসার প্রমান দেয় না হুমকির আলমত জন্ম দেয়।

বাংলাদেশের একটি আভ্যন্তরীন বিচার নিয়ে বার বার বন্ধু রাষ্ট্রগুলো পরার্শ দিতে গিয়ে ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপন করে। দেশ নয় গোষ্ঠিও তাই করছে। এমনকি জাতিসংঘও আমাদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এই ধরণের কর্মকান্ড বন্ধুত্বের মধ্যে পড়ে না। এটা হুমকির সামিল। এসব ক্ষেত্রে পররাষ্ট্রনীতির যথাযথ প্রয়োগ আরো বেশী ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে করা উচিত।

আশংকা প্রকাশ করে বলা যায়, ২০০৭ সালে হঠাৎ একটি অসাংবিধানিক সরকার আমাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে দুই প্রধান নেত্রীকে বন্দি করে ফেলে। এরপর যা হয়েছে তা সকলেরই জানা। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারীর পূর্বে আমাদের বন্ধু দেশগুলো আমাদেরকে নিয়ে এমন খেলাই খেলেছিল। আমাদের আভ্যন্তরীন বিষয়ে কারণে অকারণে নাক গলানো ও কথায় কথায় নিন্দা প্রতিবাদ করে বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছিল আমরা খারাপ । মানে আমাদের বিপদে ফেলার পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল বন্ধু রাষ্ট্রগুলো।

বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের শংকিত করছে। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক দ্বৈত নাগরিক বাংলাদেশে খুন হয়েছেন। একই কায়দায় একাধিক হত্যাকান্ড ও একটি আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠির দায় স্বীকার আমাদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। আমরা বলছি, আন্তর্জাতিক নয় দেশীয় জঙ্গী গোষ্ঠি এই সব কাজ করছে। দেশী ও বিদেশী জঙ্গীর গেঁড়াকলে পরে আমরা অসহায়ত্ব বোধ করছি না এটা ঠিক নয়। কারণ নিজেরা বিপদে পরার কারণেই বিদেশীরা আমাদেরকে জঙ্গী দমনে সহযোগিতা করতে চায়। আর আমরাও স্বাগত জানাচ্ছি। এখানেই আমাদের অসহায়ত্ব প্রকাশ পায়। কিন্তু আমরা অসহায়ত্ব প্রকাশও করছি আবার তদন্ত ছাড়াই দায় নিজেদের উপর চাপাচ্ছি।

আামদের মহাজোট ও বিশদলীয় জোট জঙ্গী হামলার জন্য পরস্পরকে দায়ী করছে। এখন প্রশ্ন এসে যায়, আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় যদি আমরা দেশীয় ঘটনাগুলোর তদন্ত ও বিচার করি তবে আসামী হিসেবে দুই জোটই অন্তভূক্ত হয়ে যাচ্ছি। এমন হলে বিচার করবে কে? সরকার ও বিরোধী রাজনীতিকরা যদি আসামী থাকে তবে আমাদের হাতে ক্ষমতা থাকার নৈতিক প্রশ্ন এসে যায়। মানে হল, আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপে আমরা নিজেদের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ করছি। আমরা ক্ষমতার জন্য সব হারাতেও রাজি বলেই মনে হচ্ছে। যা মহান মুক্তিযদ্ধের মুূল চেতনার পরিপন্থী।

এই অবস্থায়, জাতির আহবান থাকবে, আমরা যাই করি না কেন, আমাদের ক্ষমতা, আমাদের দেশ, আমাদের স্বাধীনতা ও আমাদের সার্বভৌমত্ব যেন হুমকির মুখে না পরে তা  সতর্কতার সঙ্গে লক্ষ্য রাখা উচিত। না হয় সব হারিয়ে আবার রাস্তায় নামতে হবে যা থেকে আর সহসাই মুক্তি মিলবে না।

ড. এ কে এম রিপন আনসারী

এডিটর ইনচীফ

গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *