ফাঁসি কার্যকরে সরকার পুরো প্রস্তুত

Slider টপ নিউজ ফুলজান বিবির বাংলা

c34ef7b7e2b3ffe35c57edae23a8eaeb-0150419153123

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরে সরকার পুরো প্রস্তুত আছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, নিজামী প্রাণভিক্ষা না চাইলে যেকোনো মুহূর্তে ফাঁসি কার্যকর করা হবে। ফাঁসি কার্যকরের জন্য যেসব প্রস্তুতি প্রয়োজন, সেসব চলছে।

কবে ফাঁসি কার্যকর হবে?—এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অপেক্ষা করুন, দেখতে পাবেন।’

রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা) খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় গতকাল সোমবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির (কনডেমড) সেলে থাকা নিজামীকে পড়ে শোনায় কারা কর্তৃপক্ষ। এরপর চিকিৎসকেরা তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

নিজামীকে গত রোববার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া চারজনের দণ্ড এই কারাগারে কার্যকর হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী।

আপিল বিভাগ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে নিজামীকে বলা হয়েছে একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের নকশাকার। ২০০০ সালে সেই নিজামীই হন মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর আমির। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে (২০০১-২০০৬) তিনি প্রথমে কৃষি ও পরে শিল্পমন্ত্রী ছিলেন। এ নিয়ে ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেছিলেন, নিজামীকে এ দেশের মন্ত্রী করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রমহারা ২ লাখ নারীর গালে চড় মারা হয়েছে। এটা জাতির জন্য লজ্জা, অবমাননা।

২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে চারটি অভিযোগে তাঁকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের বিরুদ্ধে নিজামীর আপিলের রায় ঘোষণা করা হয় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি। আপিলে আরও তিনটি অভিযোগ থেকে নিজামী খালাস পান। বাকি পাঁচটি অভিযোগে তাঁকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ, এর মধ্যে তিনটিতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এগুলো হলো পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার রূপসী, বাউসগাড়ি ও ডেমরা গ্রামের ৪৫০ জনকে নির্বিচার হত্যা ও ধর্ষণ, ধুলাউড়ি গ্রামে ৫২ জনকে হত্যা এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা। বাকি দুটি অভিযোগে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন সর্বোচ্চ আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *