এরপরও অস্ত্র হাতে ভোট চাওয়া দরকার!

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় বাংলার মুখোমুখি রাজনীতি সম্পাদকীয়

12551_lead

 

গতকাল দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি দৈনিকে ছবি সহ একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। চতুর্থ দফা ইউপি নির্বাচরণের প্রচারণা নিয়ে লেখা ওই খবর।

খবরে বলা হয়েছে,

“চতুর্থ দফার ইউপি নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় প্রকাশ্যে ব্যবহার হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র। অস্ত্র উচিয়ে এলাকার ভোটারদের দেখানো হচ্ছে নানা ধরনের ভয়ভীতি। নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাচ্ছে অপরিচিত লোকজন। পাশাপাশি প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে কর্মী সমর্থকদেরও দেখানো হচ্ছে নানা হুমকী। এদিকে বুধবার দুপুরে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে হরিনারায়পুর হাজীপাড়ায় নৌকা প্রতীক প্রার্থীর বাড়ির পাশে সাদা পাঞ্জাবী পরিহিত অজ্ঞাত ব্যক্তির হাতে দেখা গেছে আগ্নেয়াস্ত্র। নির্বাচনের আগে লাইসেন্স করা সব ধরনের অস্ত্র জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানেন নি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. সোহাগ। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন প্রকাশ্যে তাদের লাইসেন্স করা শটগান ও পিস্তল নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন এবং নৌকা বাদে অন্য কোথাও ভোট না দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুরে রির্টানিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী লিখিত অভিযোগ করে। লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত দুই দিন ধরে মাইক্রোবাস ও মোটর সাইকেলে করে অস্ত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। এতে এলাকার ভোটাররা শঙ্কিত হয়ে উঠছে। এর প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এদিকে গত মঙ্গলবার শহরের নুরজাহান প্লাজার আবাসিক হোটেল আল সাউদ থেকে সর্টগান ও ৭ রাউন্ড গুলিসহ সাব্বির মাহমুদসহ ৪ জনকে আটক করে পুলিশ। দিনভর নাটকীয়তার পর ৫৪ ধারায় অভিযোগ দিয়ে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়। যদিও পুলিশ প্রশাসন বলছে, ওই আগ্নেয়াস্ত্রের বৈধ লাইসেন্স রয়েছে। এর পরেও নির্বাচনী এলাকায় অগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার যা থানা পুলিশের জানার বাইরে। প্রকাশ্যে এধরনের অস্ত্র ব্যবহার প্রশাসনের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।”

খবরটি একটি ব্যাতিক্রম ধর্মী। কারণ  নির্বাচনী যত খবর প্রকাশ হয়েছে অস্ত্র হাতে প্রচারণার খবর ছবি সহ প্রকাশ একটি সুন্দর ম্যাসেজ জাতির জন্য। অস্ত্র হাতে  ভোটারের নিকট গিয়ে প্রার্থী কি বলছেন তা জানা না গেলেও ধরেই নেয়া যায়, ভোট না দিলে মরতে হবে। অর্থ্যাৎ “ভোট দিবি না জান দিবি” এই ধরণের একটা কিছু তো বলাই হয়ে যায়।

সারাদেশে ভোট অনুষ্ঠানের যে দৃশ্য তাতে অস্ত্র ঠেকিয়ে অসহায় ভোটারকে ভয় দেখানো কাপুরুষতার লক্ষন। কারণ দেশের তিন চতুর্থাংশ ইউনিয়নেই নৌকা পাশ করছে। নৌকার জনপ্রিয়তা এত বেশী যে, কোথাও ১৮৬% ভোট পড়েছে। ভোটের আগের রাতে কেন্দ্রে গিয়ে  ব্যালট বাক্স ভরে রাখা ও ভোট গণনার সময় মিশিয়ে দেয়া, ভোটের সময় এজেন্টের সামনে সিল মারা, ভোটারকে কষ্ট না দিয়ে চেয়ারম্যান পদে সিল মেরে সহযোগিতা করা সহ নানা ধরণের সহযোগিতা পাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল। তাই কষ্ট হয়, এরপরও যে সকল আওয়ামীলীগের প্রার্থী প্রচারণার সময় ভোটারকে অস্ত্র দেখিয়ে যায় ওই সকল প্রার্থীদের বিকৃত মানষিকতা দেখে।  সহজ সরল সাধারণ মানুষ যাদের ভোট অন্যরাও দিতে পারেন তাদেরকে অস্ত্রের ভয় দেখানো  এক ধরণের উচ্ছৃঙ্খল  বিলাসিতা ছাড়া অন্য কিছু নয়। ধরে নেয়া যায় এই প্রক্রিয়া গনতন্ত্রকে পা দিয়ে লাথি মারার সামিল।

প্রয়োজনে এ গুলো না করে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় পাশ করানোর বিএনপি ও আওয়ামীলীগের রীতিকে অনুসরণ করা উচিত।  না হয় এরশাদ সাহেবের মত কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স না নিয়ে রাস্তায় বসে আরামে সিল মারা যেতে পারে।

আমরা আশা করব, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যৃবাহী গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। তারা যে ভাবে বিজয়ী হচ্ছে হউক, কমপক্ষে অসহায় ভোটারদের যেন বিনা কারণে অস্ত্র দেখিয়ে গনতন্ত্রকে লাথি মারা না হয়। এই ধরণের ঘৃনিত কর্মকান্ড উলো বনে মুক্তা ছড়ানোর সামিল। যা কাপুরুষতাকেও হার মানায়।

ড. এ কে এম রিপন আনসারী

এডিটর ইনচীফ

গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *