কিশোরগঞ্জের ৫ ‘রাজাকারের’ রায় মঙ্গলবার

Slider বাংলার আদালত

 

003_209579

 

 

 

 

 

 

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কিশোরগঞ্জ করিমগঞ্জের দুই সহোদর রাজাকার শামসুদ্দিন-নাসিরউদ্দিনসহ পাঁচ রাজাকারের রায় হবে মঙ্গলবার।

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি এম আনোয়ারুল হক রায়ের এ দিন ধার্য করেছেন।

বিষয়টি  নিশ্চিত করেছেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমীন খান মুন্নি।

তিনি জানান, ট্রাইব্যুনাল ওই পাঁচ রাজাকারের রায় মঙ্গলবার ঘোষণা করবেন।

এর আগে ১১ এপ্রিল যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখেন।

তাদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অপহরণ, অগ্নিসংযোগসহ সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ মামলার শুরুতেই পাঁচ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন অ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন আহমেদ। পলাতক অপর চার আসামি হলেন সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন নাসিরউদ্দিন আহমেদ এবং একাত্তরে স্থানীয় রাজাকার কমান্ডার গাজী আবদুল মান্নান, হাফিজ উদ্দিন ও আজহারুল ইসলাম।

গত বছরের ১২ অক্টোবর এ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হয়। এরপর ৪ নভেম্বর থেকে চলতি বছর ১ মার্চ পর্যন্ত পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমানসহ ২৫জন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন। আসামিপক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী ছিলেন না।

গত বছরের ১৩ এপ্রিল প্রসিকিউশনের তদন্ত সংস্থা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) তৈরি করে ট্রাইব্যুনালে তা দাখিল করে। ১৩ মে এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। ২০১৪ সালের ৬ জুন থেকে এ মামলার তদন্ত শুরু হয়। একই বছরের ২৬ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় ৪৫০ পৃষ্ঠার এ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

রাজাকার নাসিরউদ্দিন ও শামসুদ্দিন মুক্তিযুদ্ধের সময় করিমগঞ্জ উপজেলার বিদ্যানগর, আয়লা, ফতেহপুর বিল, কিরাটন বিলসহ আশেপাশের কয়েকটি এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকার বাহিনী নিয়ে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগসহ পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করে।

করিমগঞ্জ মধ্যপাড়া (দুলিপাড়া) গ্রামের মৃত আবদুর রাজ্জাক মুন্সির দুই ছেলে নাসিরউদ্দিন আহমেদ এবং শামসুদ্দিন আহমেদ। নাসিরউদ্দিন সেনাবাহিনীর ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন ছিলেন। তিনি ১৯৯৪ সালের ৫ জুলাই সেনাবাহিনীর কমিশন লাভ করেন। ২০০২ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি অকালীন বাধ্যতামূলক অবসরে যান। অপর ভাই শামসুদ্দিন কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য।

যত অভিযোগ: এক, একাত্তরের ১২ নভেম্বর দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত করিমগঞ্জ থানার বিদ্যানগর ও আয়লা গ্রামের মোট আট জনকে হত্যা ও একজনকে আহত করার অভিযোগ। দুই, ১৩ নভেম্বর আয়লা গ্রামের মিয়া হোসেনকে হত্যা। তিন, একই উপজেলার আবদুল গফুরকে অপহরণ করে ২৬ সেপ্টেম্বর খুদির জঙ্গল ব্রিজে নিয়ে হত্যা। চার, ২৩ আগস্ট করিমগঞ্জ উপজেলা ডাকবাংলোতে শাস্তি কমিটির কার্যালয়ে আতকাপাড়া গ্রামের ফজলুর রহমান মাস্টারকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যা। পাঁচ, ৭ সেপ্টেম্বর রামনগর গ্রামের পরেশ চন্দ্র সরকারকে হত্যা। ছয়, ২৫ আগস্ট পূর্ব নবাইদ কালিপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক ও রূপালীকে অপহরণ করে নির্যাতন ও হত্যা। সাত, ১৫ সেপ্টেম্বর আতকাপড়া গ্রামে আক্রমণ করে ২০-২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *