নওয়াজ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এমপিদের জিম্মি রাখার ঘোষণা

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ সারাদেশ

37537_sleeping-outside-Parliament-PHOTO-Irfan-Ghauri
গ্রাম বাংলা ডেস্ক: পার্লামেন্টে উপস্থিত এমপিদের জিম্মি করার আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের ধর্মীয় নেতা তাহিরুল কাদরি। তিনি সমর্থকদের বলেছেন, যতক্ষণ প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ পদত্যাগ না করবেন ততক্ষণ এমপিদের পার্লামেন্টে জিম্মি করে রাখুন। উল্লেখ্য, তাহিরুল কাদরির নেতৃত্বাধীন পিএটি এবং ইমরান খান নেতৃত্বাধীন পিটিআই নেতাকর্মীরা গত রাতে নিরাপত্তা বেষ্টনি পাড় হয়ে প্রবেশ করেছে রেড জোনে। এই এলাকায় অবস্থিত পাকিস্তানের পার্লামেন্ট, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও কূটনৈতিক মিশনগুলো। সেখানে পার্লামেন্টের বাইরে অবস্থান ধর্মঘট করছেন এ দু’নেতার সমর্থকরা। তাদের দাবি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে পদত্যাগ করতে হবে। ইমরান খান হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সরকারকে। বলেছেন, সবগুলো ব্রিজ ভেঙে গেছে। এখন তার আর পিছু হটার কোন সুযোগ নেই। ওদিকে প্রতিবাদ বিক্ষোভের কারণে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি পিটিশন দায়ের হয়েছে। তাই সুপ্রিম কোর্ট ইমরান খান ও তাহিরুল কাদরিকে আগামীকাল আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু ইমরান খান বা তাহিরুল কাদরি তাতে দৃশ্যত দমে যাওয়ার পাত্র নন। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, আমরা পার্লামেন্ট ঘেরাও করে রেখেছি। এরপরেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন। আজ রাতের মধ্যে তিনি যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে তার বাসভবন ঘেরাও হবে। ওদিকে তাহিরুল কাদরি বলেছেন, এ সময়ের মধ্যে তিনি পদত্যাগ না করলে কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেয়া হবে না। ভিতর থেকে বাইরে বের হতে দেয়া হবে না। এমনকি একটি মশাকে পর্যন্ত নয়। ইমরান খান করাচি থেকে এ আন্দোলন শুরু করেছেন। তিনি ও কাদরি অভিযোগ করছেন, গত বছর পাকিস্তানে যে নির্বাচন হয়েছে তাতে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। কারচুপির ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ। এরপরই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নওয়াজ শরীফ। তবে ওই নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য বলে মন্তব্য করেছিল। তা সত্ত্বেও ইমরান খান ও তাহিরুল কাদরি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে ক্ষমতা থেকে সরাতে উঠেপড়ে লেগেছেন। কিন্তু নওয়াজ শরীফ পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে তিনি সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়েছেন। ইসলামাবাদের রেড জোনে মোতায়েন করেছেন ৭০০ সেনা সদস্য। ওদিকে গত বছর নির্বাচনে কারচুপির যে অভিযোগ তুলেছেন ইমরান খান তার তদন্ত শুরু করেছেন প্রধান বিচারপতি নাসিরুল মুলকের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ। এই তদন্তের ঘোষণা নওয়াজ শরীফই দিয়েছেন গত সপ্তাহে। অনেকেই তার এ পদক্ষেপকে বিরোধীদের আন্দোলন স্তিমিত করার কৌশল হিসেবে দেখছেন। গত রাতে যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে তারা বিক্ষোভকারীদের সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলো থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে বিক্ষোভকারীরা কোন বাধা ছাড়াই গত রাতে প্রবেশ করেছে রেড জোনে । তারা পার্লামেন্টের সামনে অবস্থান ধর্মঘটন করছেন। পরিস্থিতি শান্ত হলেও ইসলামাবাদ রয়েছে উচ্চ সতর্কতায়। প্রায় ৩০ হাজার সমর্থক নিয়ে ইমরান খান ও তাহিরুল কাদরি রেড জোনে অবস্থান করছেন। অনেকেই সেখানে সহিংসতার আশঙ্কা করেছিল। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বড় ধরনের কোন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায় নি। ইমরান খান ও কাদরি দু’জনেই তার নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। ইমরান খান তার সমর্থকদের বলেছেন, আমরা এত বড় সমাবেশ করবো যাতে মানুষ তাহরির স্কোয়ারের কথা ভুলে যাবে। পারমাণবিক অস্ত্রধারী পাকিস্তান এ যাবত তিনবার সামরিক অভ্যুত্থান দেখেছে। নতুন করে এবারের আন্দোলন নিয়ে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে বলে আতঙ্ক রয়েছে। সরকার এরই মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া সংস্কারে করণীয় নির্ধারণে ইমরান খান ও তাহিরুল কাদরিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু তারা সে আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। বৃটেন দু’পক্ষকেই সঙ্কটের কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে পেতে আহ্বান জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন পাকিস্তানে গণতন্ত্রের প্রতি সমর্থন দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *