একাত্তরের মতো যুদ্ধ শুরু করা উচিৎ’

Slider ফুলজান বিবির বাংলা বিনোদন ও মিডিয়া

5336_mithu

টিভি নাটকের জনপ্রিয় নাম মনিরা মিঠু। টিভিপর্দায় চোখ রাখলেই কোনো না কোনো চ্যানেলে কখনো মা, কখনো বড় বোন আবার কখনো ভাবী হিসেবে তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। দর্শকপ্রিয় এ অভিনেত্রী বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আজকের ‘আলাপন’-এ কথা বলেছেন। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মারুফ কিবরিয়া

কেমন আছেন? কেমন যাচ্ছে সব?
ভালো আছি বেশ। তবে ঠিক এ মুহূর্তে অনেক ক্লান্ত। কাজ করছি সাগর জাহানের ‘মিলার বারান্দা’ ধারাবাহিকে। এখন রাত প্রায় এগারোটা (সাক্ষাৎকারটি নেয়ার সময়)। শুটিং শেষ হয়নি। সকাল থেকেই কাজ করছি। বলতে পারেন টানা কাজে অনুভূতিহীন হয়ে পড়েছি। ‘মিলার বারান্দা’ নাটকটি প্রচার হচ্ছে বাংলাভিশনে। বেশ দারুণ একটি গল্প।

অন্য নাটক আর কি কি করছেন?
‘সোনার হরিন’, ‘আদর্শলিপি’, ‘গোলাপি মঞ্জিল’, ‘এক উঠান বারো ঘর’, ‘ভালোবাসা নয় প্রেম’, ‘হাউজ ৪৪’, ‘নীল দাঁড়কাক’ ধারাবাহিক গুলোর কাজ চলছে। এর মধ্যে ‘ভালোবাসা নয় প্রেম’, ‘এক উঠান বারো ঘর’ ও ‘নীল দাঁড়কাক’ নাটক তিনটি নতুন। এগুলো এখনও প্রচারে আসেনি।

খ- নাটকের কাজ চলছে না?
করছি, তবে সংখ্যায় কম। গত রোজার ঈদের আগে থেকে টানা ছয় মাস শুধু খ- নাটকের কাজই করেছিলাম। আর সে কারণে সিরিয়ালে কোনো সময় দেয়া হয়নি। এখন হাতে যে কয়টি নাটকের কাজ রয়েছে সেগুলো করতে গিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেবল শুটিং হাউজেই সময় কেটে যায়। তাই এ মুহূর্তে খ-  নাটকের কাজ কমিয়ে দিয়েছি। আবার শুরু হবে। ঈদের নাটকের কাজ তো সামনেই।

এত নাটকে কাজ করছেন, দর্শক সাড়া কেমন মিলছে?
আগে দর্শক নাটক দেখতেন। এখনও দেখেন তবে সেটা খুব কম। তাহলে সাড়া কিভাবে মিলবে। খুব সম্ভবত ৬ কি ৭ শতাশং দর্শক দেশীয় চ্যানেলের নাটক দেখেন। বাকিরা সব কলকাতার চ্যানেল নিয়ে ব্যস্ত। চার-পাঁচ বছর আগের কথাই বলি। তখন আমাদের নাটকের মান ঠিক ছিল। গল্পের ভিন্নতা ছিল। দর্শকও নাটক দেখতেন। রেসপন্সটাও পেয়েছি অনেক। তারা নাটক দেখে প্রতিক্রিয়া জানাতেন। আর এখন আমাদের টিভি নাটকের সেরকম দর্শক নেই।

নাটকের মান কমে যাওয়ার কারণ কি?
বাজেট সমস্যা। আগে যখন নাটকের মান ভালো ছিল তখন শিল্পটা এত ব্যবসায়িক ছিল না। বিজ্ঞাপন বেশি প্রচার হওয়ায় নাটক থেকে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। দেশীয় নাটকের প্রতি তারা ধীরে ধীরে আগ্রহ হারিয়েছেন। এর সবকিছুর জন্য দায়ী বাজেট সমস্যা। সংকট দিন দিন বাড়ছে। দ্রুত সমাধান না হলে আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।

সমাধানের পথ কি বলে মনে করেন?
এটা তো বৃত্তাকারে ঘুরছে। নাটকের ব্যাপারটা কয়েকটা পক্ষের একে অপরের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এরা কোনো পক্ষ কাউকে সহযোগিতা করছে না। প্রযোজক, চ্যানেল, নির্মাতাÑএরা কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। আবার এরা কেউ কাউকে সাহায্য না করায় আর্টিস্টরা সমস্যায় পড়ে যাচ্ছেন। সবার মধ্যে বোঝাপড়াটা আনতে হবে। আর আমার মনে হয় প্রতিটা সেক্টর থেকে একটা আন্দোলন শুরু করতে হবে। অনেকটা একাত্তরের মতো যুদ্ধ শুরু করা উচিৎ। তখন যেমন যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হয়েছে তেমনি এখন আন্দোলনের মাধ্যমে দর্শক ফেরাতে হবে।

আপনার ব্যক্তিজীবন কেমন যাচ্ছে?
আল্লাহর রহমতে ভালো যাচ্ছে। ব্যস্ততার বাইরে আমি জীবনটাকে সবসময় খুব উপভোগ করি। এটা যেন সবসময় করতে পারি সেজন্য সবাই দোয়া করবেন।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
আমি আসলে কোনো পরিকল্পনা করে চলি না। স্বপ্ন দেখি না। স্বপ্ন দেখার আগেই সব পেয়ে যাই। এটা আল্লাহর একটা রহমত বলতে পারেন। অনেক শুকরিয়া তার কাছে। আর এতদিন মিডিয়ার সঙ্গে আছি বাকি জীবনটা যেন এভাবেই কাটিয়ে দিতে পারি এ কামনাই করি। আমি দেখছি, এখন বয়োজেষ্ঠ্য অভিনেত্রী দিলারা জামান, শর্মিলী আহমেদরা এই বয়সেও সুস্থতার সঙ্গে অভিনয় করে যাচ্ছেন। আমিও তাদের মতো করে ওই বয়সে গিয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *