ঢাকা : প্রধানমন্ত্রীকে ‘গণতন্ত্র হত্যাকারী’ এবং নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ‘তার সহযোগী’ হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘গণতন্ত্র হত্যার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘প্রধান আসামি’ এবং ইসিকে কালো তালিকাভুক্ত ‘দ্বিতীয় প্রধান আসামি’ হিসেবে জনতার আদালতে দাঁড়াতেই হবে।’
বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীনদের পৈশাচিকতা ও বর্বরোচিত কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এক্ষেত্রে ইসি সরকারের অপরাধের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে।’
ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে রিজভী আহমেদ জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানার শেখমাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী তৌহিদুল ইসলামের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় থানা ছাত্রদলের নেতা মো. শামসুল হক ছোট্টর ওপর হামলা চালায় সরকার সমর্থকরা। এতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন। বর্তমানে তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শুধু পিরোজপুর নয়, ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে একইভাবে বিএনপি প্রার্থীদের হুমকি, হামলা, প্রচারণায় বাধা ও নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। কিন্তু এতকিছুর পরও ইসি নির্বিকার ও স্থানীয় প্রশাসন নিশ্চুপ।’
ইসির সমালোচনা করে বিএনপির এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের গণতন্ত্র হত্যার উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্যই ইসি তার হীন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে আগেই শয্যাশায়ী ও মরণাপন্ন করেছে। দেশজুড়ে ইউপি নির্বাচনী এলাকাগুলোতে জনগণের অংশগ্রহণকে পদদলিত করে যারা সব আত্মসাৎ করে নিচ্ছে, তাদের ছিনতাই করা বিজয়কে বৈধতার সনদ দিচ্ছে এই নির্বাচন কমিশন।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের মদদে গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থা সন্ত্রাসী দুঃশাসনের ছায়ায় গ্রাস হয়ে আছে। আর নির্বাচন কমিশন এই অনাচারকে মুখ বুজে মেনে নিচ্ছে।’
দেশের নিয়ন্ত্রণ এখন অপরাধীদের হাতে- এমন মন্তব্য করে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘উদগ্র ক্ষমতালোভ, জনগণের প্রতি অমানবিক অবজ্ঞা আর রক্তাক্ত সন্ত্রাসের পথই হচ্ছে বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর রাষ্ট্র পরিচালনার অনুসৃত পথ। যার কারণে গণতন্ত্র এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এক বর্বর হিংসাযুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়েছ।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ ও সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব প্রমুখ।