‘বিপ্লবী মহাসচিব’ মির্জা ফখরুল!

Slider রাজনীতি

 

2015_08_30_19_27_44_gcxbCJ2Mz6Bo9qXM57ucGqrZf0jfTL_original

 

 

 

 

ঢাকা : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘বিপ্লবী মহাসচিব’ বলে অভিহিত করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বক্তব্যের শুরুতেই মির্জা ফখরুলকে এভাবেই সম্বোধন করেন তিনি। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মির্জা ফখরুল।

খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, ‘এই সরকারের রোষানলে পড়ে তাকে (ফখরুল) একাধিকবার কারাবরণ করতে হয়েছে।’

আগামী ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দলের নেতাকর্মীরা আশা করছেন, এ কাউন্সিলেই বিএনপির পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব নির্ধারণ হবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও মহাসচিব হিসেবে আরও আলোচনায় রয়েছেন দলের প্রবীণ ও পরীক্ষিত নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম এবং স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

জানা যায়, বিএনপির মহাসচিবের ওই সংক্ষিপ্ত তালিকায় প্রথম দিকে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনও ছিলেন। মানি লন্ডারিং মামলায় ২০১৪ সালের মার্চে গ্রেপ্তার হয়ে গত ১৩ জানুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি। মুক্তি পাওয়ার পর ‘মোশাররফকে ঘিরে বিএনপি ভাঙ্গার নতুন ষড়যন্ত্র হচ্ছে’-একটি জাতীয় দৈনিকে এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর দলে কোনঠাসা হয়ে পড়েন তিনি, যদিও এরপর এক অনুষ্ঠানে তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেন।

আরও জানা যায়, ওই ঘটনার পর মহাসচিবের দৌড় থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন খন্দকার মোশাররফ। অভিযোগ রয়েছে, বর্তমানে বিএনপির একাধিক প্রভাবশালী নেতা মির্জা ফখরুলের ‘ভারমুক্ত’ হওয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। কিন্তু ড.খন্দকার মোশাররফ, মির্জা ফখরুলের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছেন। বিএনপির ওই প্রভাবশালী নেতারা দলকে পুনরুজ্জীবিত ও সুসংগঠিত করতে তরিকুল ইসলামকে মহাসচিব বানাতে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন।

২০১১ সালের ১৬ মার্চ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। এরপর ২০ মার্চ চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সৌদি আরবে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে মির্জা ফখরুলকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়ে যান। তখন থেকেই দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। ওই সময় দলের প্রভাবশালী নেতাদের কেউ কেউ ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেছিলেন,দলীয় গঠনতন্ত্রে ‘ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব’বলে কোনো পদ নেই। তখন প্রকাশ্যেই তারা চেয়ারপারসনের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর বিরোধী দলে পরিণত হয় বিএনপি। বিরোধী দলের দুর্যোগপূর্ণ রাজনীতিতে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সাড়ে চার বছরের অধিক সময় ধরে ‘সেকেন্ড ইন কমান্ডের’ হাল ধরে রয়েছেন বিএনপির ‘ভারপ্রাপ্ত’ মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘প্রশ্নবিদ্ধ ও হাস্যকর’ বিভিন্ন মামলায় ইতোমধ্যে সাত দফায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন দলের ‘ক্লিনম্যান’ খ্যাত এই নেতা। গেল দুই বছরের মধ্যে দীর্ঘ সময় তাকে কারাগারেই থাকতে হয়েছে। সর্বশেষ গত ১ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পান তিনি। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ৮৪টি মামলা রয়েছে।

বিভিন্ন সময় গুঞ্জন শোনা গেলেও আজ পর্যন্ত মির্জা ফখরুলকে ‘পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব’ করা হয়নি। এজন্য তাকে সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের নানা কটাক্ষেরও শিকার হতে হয়েছে। তবে বিএনপির নেতা-কর্মিদের আশা, দলের প্রতি তার ত্যাগ বিবেচনায় আসন্ন কাউন্সিলে তাকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *